সংবিধান, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ও রাজনীতির সংস্কার সাধনে নির্বাহী ক্ষমতার সংশোধনীসহ ৩২ দফা দিয়ে নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেছে বাম গণতান্ত্রিক জোট। এতে গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক অধিকার আদায়, দুর্নীতি-লুটপাট-দলীয়করণ, রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও জনদুর্ভোগ লাঘব, ধনী-গরিবের বৈষম্য নিরসনের লক্ষ্যে পুরো ব্যবস্থাকে ঢেলে সাজানোর কথা বলা হয়েছে। বুধবার (১২ ডিসেম্বর) পুরানা পল্টনের মুক্তি ভবনের মৈত্রী মিলনায়তনে বাম গণতান্ত্রিক জোটের নির্বাচনি ইশতেহার ঘোষণা করেন জোটের নতুন সমন্বয়ক ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ শাহ আলম।
এসময় সিপিবি সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম, বাসদ নেতা বজলুর রশীদ ফিরোজ, বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক, ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাধারণ সম্পাদক মোশাররফ হোসেন নান্নু, গণতান্ত্রিক বিপ্লবী পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোশরেফা মিশু, বাসদের (মার্কসবাদী) নেতা মানস নন্দী, গণসংহতি আন্দোলনের কেন্দ্রীয় নেতা ফিরোজ আহমেদ, সমাজতান্ত্রিক আন্দোলনের আহ্বায়ক হামিদুল হক, সিপিবি সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স ও কমিউনিস্ট লীগের নেতা নজরুল ইসলাম প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
ইশতেহারে ঘোষিত ‘৩২ দফা’কর্মসূচির মধ্যে বলা হয়েছে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় সংবিধান, রাষ্ট্রীয় ব্যবস্থা ও রাজনীতির সংস্কার সাধনে নির্বাহী ক্ষমতার প্রয়োগে ব্যক্তিকেন্দ্রিকতার বিপদ পরিহার করার জন্য যৌথতা ও জবাবদিহিতার বিধান আরও স্পষ্ট করে সংবিধানে অন্তর্ভুক্ত করা। প্রধানমন্ত্রীকেন্দ্রিক অগণতান্ত্রিক ক্ষমতা কাঠামোর সাংবিধানিক ভিত্তি পরিবর্তন করা। মত প্রকাশের স্বাধীনতা ও মানবাধিকার প্রতিষ্ঠাসহ কার্যকর গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা। গণতান্ত্রিক বিকেন্দ্রীকরণ ও স্থানীয় সরকারের ক্ষমতায়নে জাতীয় সংসদ সদস্যদের পরিবর্তে নির্বাচিত স্থানীয় স্বশাসিত সংস্থার হাতে স্ব স্ব স্তরের প্রশাসনিক ও উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের নিয়ন্ত্রণ ও তদারকির দায়িত্ব অর্পণ করা। নির্বাচনি ব্যবস্থার আমূল সংস্কারে সংখ্যানুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থা চালুসহ জোটের ৫৪-দফা সুপারিশের ভিত্তিতে নির্বাচনি ব্যবস্থার আমূল সংস্কার করা। ‘না’ ভোট প্রদানের বিধান চালু করা। ভোট প্রদানে বাধা প্রদান আইন করে বন্ধ করা। বিকল্প অর্থনৈতিক নীতি ও ব্যবস্থাপনায় জাতীয় অর্থনীতি ও দেশীয় শিল্প বিকাশের পথে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করতে পারে-এমন বৈদেশিক সাহায্য বা ঋণ গ্রহণ বন্ধ করা। বহুজাতিক সংস্থা ও বিদেশি পুঁজির জাতীয় স্বার্থবিরোধী অনুপ্রবেশ বন্ধ করা। কর্মসংস্থান সৃষ্টি, দারিদ্র্য বিমোচন ও বৈষম্য হ্রাসে কর্মক্ষম সব মানুষের জন্য ক্রমান্বয়ে কর্মসংস্থান নিশ্চিত করতে নিয়মিতভাবে দেশের সর্বত্র সারাবছর ‘কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা স্কিম’ চালু করা। ঘুষ-দুর্নীতি-লুটপাটের বিরুদ্ধে ‘জিরো টলারেন্স’নীতি গ্রহণ করা। দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতায় ‘উৎপাদক সমবায়’ও ‘ক্রেতা সমবায়’গঠন করে তাঁদের মধ্যে সরাসরি কেনা-বেচার ব্যবস্থা চালু করা।