X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

আলোর পথে যেতে আপনাদের সমর্থন চাই: শেখ হাসিনা

মাহবুব হাসান ও ওয়ালী নেওয়াজ, শেখ হাসিনার গাড়িবহর থেকে
১৩ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৩:১০আপডেট : ১৩ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৮:৪৬

ফরিদপুরের ভাঙ্গায় নির্বাচনি পথসভায় ভোটারদের শুভেচ্ছা জানাচ্ছেন শেখ হাসিনা ও শেখ রেহেনা ভোটারদের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, ‘আমরা আলোর পথে এগিয়ে যেতে চাই। সেজন্য দরকার আপনাদের (ভোটার) সমর্থন। আপনারা আগামী নির্বাচনে দুর্নীতি, জঙ্গিবাদ ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে রায় দিন। নৌকাকে ভোট দিয়ে দেশকে সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে নিন। আমরা আর অন্ধকারের দিকে পিছিয়ে যেতে চাই না।’ ফরিদপুরের উন্নয়নের বিষয়ে তিনি বলেন, ‘ফরিদপুর বিভাগ বাস্তবায়ন প্রক্রিয়াধীন। আশপাশের জেলাগুলোর সঙ্গে এ নিয়ে আলোচনা চলছে।’

গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া থেকে ঢাকায় ফেরার পথে বৃহস্পতিবার (১৩ ডিসেম্বর) দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ফরিদপুরের কোমরপুর মোড়ে নির্বাচনি পথসভায় এসব কথা বলেন শেখ হাসিনা। ঢাকায় ফেরার পথে এটি শেখ হাসিনার দ্বিতীয় পথসভা। এর আগে বেলা ১১টার দিকে ফরিদপুরের ভাঙ্গার কলাতলায় নির্বাচনি জনসভায় তিনি বক্তব্য দেন। সেখানে তিনি বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় না এলে পদ্মা সেতুর কাজ বন্ধ হয়ে যাবে। যে নৌকায় ভোট দিয়ে আপনারা স্বাধীনতা পেয়েছেন, যে নৌকায় ভোট দিয়ে বাংলা ভাষায় কথা বলার অধিকার পেয়েছেন, সে নৌকায় ভোট দিয়ে আজকের বাংলাদেশ। আপনাদের সহযোগিতায় আজ ক্ষুধামুক্ত, দারিদ্র্যমুক্ত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছি।’

বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়ন কর্মকাণ্ড তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আজ বাংলাদেশ উন্নয়নের একটি রোল মডেল। বিশাল কর্মযজ্ঞ চলছে সারা বাংলাদেশে। উন্নয়নের জোয়ার সৃষ্টি হয়ছে। যে পদ্মা সেতু নিয়ে কথা হয়েছিল- আমরা দুর্নীতির বিষয়ে চ্যালেঞ্জ করেছি, কোনও দুর্নীতি পায়নি। নিজস্ব অর্থায়নে পদ্মা সেতু নির্মাণ করছি। পদ্মা সেতুর বাকি কাজ শেষ করতে অগামীতে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় আনতে হবে, না হলে এই কাজ বন্ধ হয়ে যাবে।’

শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশকে আজ এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। এ মাস বিজয়ের মাস। এ আসনে নৌকার প্রার্থী কাজী জাফর উল্লাহ। তাকে ভোট দিয়ে বিজয়ী করতে আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি। বাংলাদেশের মাটিতে সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও মাদক স্থান পাবে না। জঙ্গিবাদ ও মাদক নির্মূলের জন্য জনমত সৃষ্টি করা হচ্ছে। আমাদের অভিযান চলছে মাদকের বিরুদ্ধে। মাদক যেমন একটি পরিবারকে ধ্বংস করে, দেশকেও ধ্বংস করে। ছেলেমেয়েরা কোথায় থাকে, কী করে খবর নিতে হবে বাবা-মাকে। সেই সঙ্গে মসজিদের ইমাম ও শিক্ষকদেরও ভূমিকা রাখতে হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিটি উপজেলায় আমরা কমিউনিটি ক্লিনিক করেছি। সেখানে ২১ প্রকার ওষুধ বিনামূল্যে দেওয়া হচ্ছে। স্কুলের ছেলেমেয়েদের বিনা টাকায় বই বিতরণ করছি। দুই কোটি চার লাখ শিক্ষার্থীকে প্রাথমিক থেকে উচ্চশিক্ষা পর্যন্ত বৃত্তি ও উপবৃত্তি দিচ্ছি। আওয়ামী লীগ সরকার আছে বলেই, নৌকার সরকার আছে বলেই এই উন্নয়ন। এই উন্নয়নের ধারা বজায় রাখতে হবে। শেখ হাসিনা বলেন, বিভিন্ন জেলায় কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করেছি। সেখানে কাজ পাচ্ছে বেকাররা। সাইফুর রহমান মিরনের সভাপতিত্বে ভাঙ্গার কলাতলার পথসভায় উপস্থিত ছিলেন শেখ রেহানা, জাহাঙ্গীর কবির নানক এমপি, আ. রহমান এমপি, আ হ ম বাহাউদ্দিন নাসিম এমপি, এস এম কামাল হোসেন প্রমুখ।

এরপর ফরিদপুর সদরের রাজবাড়ী রাস্তার মোড়ের কোমরপুর স্কুল মাঠে পথসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফরিদপুর বিভাগ বাস্তবায়নের জন্য পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোর সঙ্গে আলোচনা চলছে। আগামীতে ক্ষমতায় এলে তা বাস্তবায়ন করা হবে। এছাড়া ফরিদপুরে একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্যও তিনি ওয়াদা করেন। তিনি বলেন, ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে উন্নত ও সমৃদ্ধশালী দেশ হিসেবে গড়ে তোলা হবে। উপস্থিত জনতার উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যদি আর একবার আমাদের সেবা করার সুযোগ দেন তাহলে আমরা তা করতে পারবো। দেশকে আমরা উন্নয়নের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। এই গতি যেন সচল থাকে। এটাই আপনাদের কাছে চাওয়া।’
শেখ হাসিনা বলেন, আমরা যখন সরকারে এসেছি তখনই দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা হাতে নিয়েছি। ২০২১ সালের মধ্যে প্রতিটি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে যাবে। স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালন করবো। ২০২০ সালে জাতির পিতার জন্মশতবার্ষিকী পালন করবো। তিনি বলেন, আমাদের তরুণ সমাজকে দেশ গড়ার কাজে লাগাতে চাই। তরুণ সমাজের ভাগ্য পরিবর্তনে আমরা পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করে যাচ্ছি।
তিনি আরও বলেন, আজ বাংলাদেশে খাদ্যের অভাব নেই। শুধু খাদ্য নয়, আমরা পুষ্টির ব্যবস্থাও করেছি। কমিউনিটি ক্লিনিক করে দিয়েছি। বিনা পয়সায় ওষুধ দিচ্ছি। এক কোটি চল্লিশ লাখ মা মোবাইল ফোনের মাধ্যমে তার সন্তানের উপবৃত্তির টাকা পাচ্ছেন।
কোতয়ালি থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক মোল্লার সভাপতিত্বে এ পথসভায় আরও উপস্থিত ছিলেন শেখ রেহানা, ফরিদপুর সদর আসনের আওয়ামী লীগ প্রার্থী ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, সাংগঠনিক সম্পাদক মোজাম্মেল হক, বাহাউদ্দিন নাছিম, আহমেদ হোসেন, যুবলীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ওমর ফারুক চৌধুরী, ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি লিয়াকত শিকদার, কৃষক লীগের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি আরিফুর রহমান দোলন, ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক গোলাম রাব্বানী, ফরিদপুর জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি অ্যাডভোকেট সুবল চন্দ্র সাহা, জেলা যুবলীগের আহ্বায়ক এএইচএম ফোয়াদ, শহর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক চৌধুরী বরকত ইবনে সালাম প্রমুখ।

ঢাকায় ফেরার পথে পর্যায়ক্রমে আরও ছয়টি পথসভায় বক্তব্য দেন প্রধানমন্ত্রী। পথসভার পরবর্তী স্থানগুলো হলো, মানিকগঞ্জের পাটুরিয়ার আরোয়া ইউনিয়ন, মানিকগঞ্জ পৌরসভা ও ধামরাইয়ের রাবেয়া মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল প্রাঙ্গণ এবং সাভারের জালেশ্বর মৌজার ৫ নম্বর ওয়ার্ড।

/ওআর/এমওএফ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা