X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিএনপির ইশতেহারে ১৯ অঙ্গীকার

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৭:০৯আপডেট : ১৮ ডিসেম্বর ২০১৮, ১৮:১২


একাদশ সংসদ নির্বাচনে বিএনপির ইশতেহার ঘোষণা একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়লাভের মাধ্যমে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় গেলে ‘রাষ্ট্রে জনগণের মালিকানা সুদৃঢ়’ করাসহ ১৯টি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করবে বিএনপি। মঙ্গলবার (১৮ ডিসেম্বর) সকালে রাজধানীর গুলশানে হোটেল লেকশোরে দলীয় ইশতেহারে এসব প্রতিশ্রুতি ঘোষণা করেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
দলীয় ইশতেহার ঘোষণা করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘নির্বাচনের জয়লাভ করে সরকার গঠন করলে ঐক্যমত্য, সবার অন্তর্ভুক্তি ও প্রতিহিংসাহীনতা— এই মূলনীতির ভিত্তিতে বিএনপি রাষ্ট্র পরিচালনা করবে।’
ইশতেহারে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনা, দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী পদে না থাকার বিধান, গণভোট পদ্ধতি পুনঃপ্রবর্তন, সংসদে উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা, বিরোধী দল থেকে ডেপুটি স্পিকার নিয়োগ, ন্যায়পাল নিয়োগ, ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্ট বাতিল, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইন বাতিল, বেকার ভাতা প্রদানসহ ১৯ দফা প্রতিশ্রুতি রয়েছে।
বিএনপির ১৯ অঙ্গীকার

  • বিএনপির ইশতেহারে বলা হয়েছে রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতার ভারসাম্য আনা হবে। পরপর দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী না থাকার বিধান করা হবে। প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রী, সাংসদ এবং উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাদের সম্পদের হিসাব প্রতিবছর প্রকাশ করা হবে। নির্বাচন পরিচালনার জন্য একটি সরকার ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে যাতে ক্ষমতা কুক্ষিগতকরণের পুনরাবৃত্তি না ঘটে। এই তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য অতীতের সমস্যার আলোকে নিরূপণ করা হবে এবং এই লক্ষ্যে সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে স্বচ্ছ আলাপ-আলোচনা করা হবে।
  • বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে সম্পৃক্ত করে জাতীয় সংসদে উচ্চকক্ষ প্রতিষ্ঠা করা হবে।
  • পঞ্চদশ সংশোধনীতে বাতিল হওয়া গণভোট ব্যবস্থা পুনঃপ্রবর্তন করা হবে। সংবিধানের ৭০ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে শর্তসাপেক্ষে সংসদ সদস্যদের স্বাধীন মতপ্রকাশের অধিকার নিশ্চিত করা হবে।
  • প্রতিহিংসা ও প্রতিশোধের রাজনীতির বিপরীতে ভবিষ্যৎমুখী এক নতুন ধারার রাজনৈতিক সংস্কৃতির প্রতিষ্ঠা করার জন্য নতুন এক সামাজিক চুক্তিতে পৌঁছাতে একটি জাতীয় কমিশন গঠন করা হবে।
  • প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য সংবিধান অনুযায়ী ন্যায়পাল নিয়োগ দেওয়া হবে।
  • র‌্যাবসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে। র‌্যাবের বর্তমান কাঠামো পরিবর্তন করে অতিরিক্ত আমর্ড পুলিশ ব্যাটেলিয়ান গঠন করা হবে। এই ব্যাটেলিয়ান স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অধীনে থাকবে।
  • সংবিধানের ১১৬ অনুচ্ছেদ সংশোধন করে নিম্ন আদালতের নিয়ন্ত্রণ রাষ্ট্রপতির হাত থেকে সুপ্রিম কোর্টের হাতে ন্যস্ত করা হবে। বর্তমান বিচারব্যবস্থার সংস্কারের জন্য একটি জুডিশিয়াল কমিশন গঠন করা হবে।
  • ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন, অফিশিয়াল সিক্রেটস অ্যাক্ট, ১৯৭৪ সালের বিশেষ ক্ষমতা আইনসহ সব ধরনের কালাকানুন বাতিল করা হবে।
  • দেশরক্ষা, পুলিশ ও আনসার ছাড়া শর্তসাপেক্ষে সরকারি চাকরিতে প্রবেশের ক্ষেত্রে কোনও সময়সীমা থাকবে না। বিডিআর হত্যাকাণ্ড ও বাংলাদেশ ব্যাংকের রিজার্ভ চুরি সংক্রান্ত সব অনুসন্ধানী রিপোর্ট জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে। একইসঙ্গে এসবের অধিকতর তদন্তের উদ্যোগ নেওয়া হবে।
  • জাতীয় প্রবৃদ্ধির হার ১১ শতাংশের উন্নীত করা হবে।
  • অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং ডিভিশন বিলুপ্ত করে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলো পরিচালনা ও তদারকির ভার কেন্দ্রীয় ব্যাংকের হাতে ন্যস্ত করা হবে। দেশে কর্মরত সব বিদেশির ওয়ার্ক পারমিটের আওতায় এনে মুদ্রাপাচার রোধ করা হবে।
  • বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড, গুম-খুন এবং অমানবিক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতনের অবসান ঘটানো হবে।
  • এক বছরব্যাপী অথবা কর্মসংস্থান না হওয়া পর্যন্ত (যেটা আগে হবে) শিক্ষিত বেকারদের বেকার ভাতা দেওয়া হবে। এদের যৌক্তিক অর্থনৈতিক উদ্যোগে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। ২৫ বছর পর্যন্ত তরুণদের স্বার্থ সংরক্ষণের জন্য ইয়ুথ পার্লামেন্ট গঠন করা হবে।
  • মুক্তিযোদ্ধা তালিকা প্রণয়নের নামে দুর্নীতির অবসান ঘটানো হবে। মূল্যস্ফীতির নিরিখে শহীদ মুক্তিযোদ্ধা পরিবারের ভাতা বাড়ানো হবে।
  • দুঃস্থ, বিধবা ও স্বামীপরিত্যক্তা নারী এবং অসহায় বয়স্কদের ভাতার পরিমাণ মূল্যস্ফীতির নিরীখে বৃদ্ধি করা হবে।
  • প্রশাসনিক স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতা নিশ্চিত করার জন্য সংবিধান অনুযায়ী ন্যায়পাল নিয়োগ দেওয়া হবে।
  • একটি রেন্টাল পাওয়ার প্রজেক্টের উচ্চব্যয়ের কারণ তদন্ত করে দেখবে।
  • দল, মত, জাতি, ধর্ম নির্বিশেষে ক্ষুদ্র-বৃহৎ সব জাতিগোষ্ঠীর সংবিধান প্রদত্ত সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ধর্ম-কর্মের অধিকার এবং জীবন, সম্ভ্রম ও সম্পদের সম্পূর্ণ নিরাপত্তা বিধান করা হবে। এই লক্ষ্যে ধর্মীয় সংখ্যালঘু মন্ত্রণালয় প্রতিষ্ঠা করা হবে।
  • ইশতেহারে বলা হয়েছে প্রথম তিন বছরে মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে দুই লাখ মানুষকে চাকরি দেওয়া হবে। আর আগামী পাঁচ বছরে এক কোটি নতুন কর্মসংস্থান সৃষ্টি করা হবে। তরুণ দম্পত্তি ও উদ্যোক্তাদের স্বাবলম্বী হওয়ার জন্য ২০ বছর মেয়াদি ঋণ চালু করা হবে।


 আরও পড়ুন: যা আছে বিএনপির ইশতেহারে



/এএইচআর/এইচআই/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
আমরা সবাই ফেরেশতা, বাস করি বেহেশতে: রায়হান রাফী
রাঙামাটিতে হলো সংসদীয় কমিটির বৈঠক
রাঙামাটিতে হলো সংসদীয় কমিটির বৈঠক
ডুবে যাওয়া জাহাজের ১১ নাবিক উদ্ধার, সবার আগে লাফ দেওয়া মাস্টার নিখোঁজ
ডুবে যাওয়া জাহাজের ১১ নাবিক উদ্ধার, সবার আগে লাফ দেওয়া মাস্টার নিখোঁজ
জাকার্তায় সোনা জিতে বাংলাদেশ পুলিশের ভানরুমের চমক
জাকার্তায় সোনা জিতে বাংলাদেশ পুলিশের ভানরুমের চমক
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা