X
বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪
৫ বৈশাখ ১৪৩১

সুপারিশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় সমাধান মেলে না

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
১৬ এপ্রিল ২০১৯, ০২:১৯আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০১৯, ১১:৩৭

‘নিরাপদ সড়ক ও মাদকমুক্ত সমাজ গঠন’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠক

নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করা এবং মাদকমুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠার জন্য বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে। বিভিন্ন মহলের সুপারিশ বাস্তবায়ন করতে হবে। সুপারিশ বাস্তবায়ন না হওয়ায় সমাধান মেলে না। রাজধানীতে ‘নিরাপদ সড়ক ও মাদকমুক্ত সমাজ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন।

১৪ দল সোমবার (১৫ এপ্রিল) সিরডাপ মিলনায়তনে এ আয়োজন করে। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও ১৪ দলের মুখপাত্র মোহাম্মদ নাসিম এতে সভাপতিত্ব করেন। বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা এতে অংশ নেন।

মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘শেখ হাসিনার সরকার সবকিছুতে এগিয়ে যাচ্ছে। কিছু ক্ষেত্রে সমস্যাগুলো এখনও সমাধানের পথে। সড়ক নিরাপত্তা নিশ্চিত ও মাদক এখনও সম্পূর্ণ মুক্ত হয়নি। প্রধানমন্ত্রী বারবার নির্দেশ দিয়েছেন, কিন্তু তার নির্দেশ বাস্তবায়ন হয়নি বলে সমস্যা এখনও সমাধান হয়নি। অনেক সমস্যা আছে, যেগুলো সমাধানের জন্য যেসব সুপারিশ রয়েছে, সেগুলো বাস্তবায়ন না হওয়ায় সমাধান হয়নি। জিয়া, এরশাদ, খালেদা জিয়ার আমলে সৃষ্ট অনেক সমস্যা আমরা এখনও সমাধান করতে পারিনি। সড়কে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে যেসব সুপারিশ বিভিন্ন সময় এসেছে, সেগুলো বাস্তবায়ন দেখতে চাই। জঙ্গিবাদ যদি আমরা মুক্ত করতে পারি, সড়ক সমস্যার সমাধান এবং মাদকও আমরা মুক্ত করতে পারবো।’

সাবেক নৌপরিবহনমন্ত্রী ও শ্রমিক নেতা শাজাহান খান বলেন, ‘সড়কে বিরাজমান সমস্যা সমাধানে সব সরকারের আমলেই বিভিন্ন সুপারিশ আছে, কিন্তু সেগুলো বাস্তবায়ন না হওয়ায় সমস্যার সমাধান হয়নি। অনেক সময় যানবাহনের চালকের অদক্ষতার কথা বলা হয়। চালকদের প্রশিক্ষণের কোনও ব্যবস্থা নেই। সড়কের সমস্যা সমাধানে যেসব সুপারিশ আসে, সেগুলো বাস্তবায়নে কর্তৃপক্ষ করে দিতে হবে।’

নৌপরিবহন প্রতিমন্ত্রী খালিদ মাহমুদ চৌধুরী বলেন, ‘বিভিন্ন সরকারের সময় বিআরটিসিকে দুর্নীতিবাজ সংগঠনে পরিণত করা হয়েছিল। দেশে হাইওয়ে বলে কিছু ছিল না, নামেমাত্র হাইওয়ে ছিল। পুরো সিস্টেমটাই দুর্বল করে ফেলা হয়েছিল। জিয়া এরশাদ খালেদা জিয়ার সময় এই সমস্যাগুলো তৈরি হয়েছিল। এখন আমরা সেগুলো ঠিক করতে পারিনি। তবে প্রত্যেকটি সেক্টরে আস্তে আস্তে উন্নতি হচ্ছে।’

খালিদ মাহমুদ চৌধুরী আরও বলেন, ‘আমরা সবাইকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবাষির্কী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী উদযাপন করবো। তবে, দুর্নীতিবাজদের নিয়ে নয়। যারা কারাগারে আছেন তারা অপরাধী, অপরাধীদের নিয়ে এতো বড় মহৎ কাজ আমরা করতে পারি না। আমরা সবাইকে জয়বাংলার পতাকাতলে আনতে চাই, কিন্তু অপরাধীদেরকে নয়।’

সাবেক যোগাযোগমন্ত্রী ব্যারিস্টার নাজমুল হুদা বলেন, ‘সড়কে বিরাট নৈরাজ্য চলছে। যানবাহনের ফিটনেস দেখার যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। চালকরা মাদক খেয়ে সড়কে নামে।’ তিনি দণ্ডিত দাগি আসামি ছাড়া সবাইকে নিয়ে বঙ্গবন্ধুর জন্মশতবার্ষিকী এবং স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী পালনের আহ্বান জানান। এজন্য রাজবন্দিদের মুক্তি দেওয়ার প্রস্তাব করেন।

প্রবীণ সাংবাদিক এবং কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ‘সড়ক দুর্ঘটনা বন্ধ করতে যেসব সুপারিশ দেওয়া হয়, সেগুলোর বাস্তবায়ন হয় না। সুপারিশ বাস্তবায়নের এই অবহেলা দূর করতে হবে।’

জাতীয় পার্টির (জেপি) সাধারণ সম্পাদক শেখ শহীদুল ইসলাম বলেন, ‘বিচারহীনতার সংস্কৃতি দূর করতে না পারলে সমস্যার সমাধান হবে না। অপরাধীরা অপরাধ করে বেরিয়ে যাচ্ছে, বিচার হচ্ছে না। এই বিচারহীনতার সংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসতে হবে।’

জাতীয় প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি সংসদ সদস্য শফিকুর রহমান বলেন, ‘মাদকসেবীদের সঙ্গে পুলিশের কোনও কোনও কর্মকর্তার যোগসাজশ আছে। শুনেছি, মাদকদ্রব্য ইয়াবার একটি ট্যাবলেটের দাম ৪-৫শ টাকা। যারা দিনে ৪টা খায়, তাদের ২৫০০ টাকার প্রয়োজন হয়। এই টাকা জোগাতে তারা চুরি, ছিনতাই, ডাকাতিতে নামে। পুলিশের কাছ থেকে এই কাজে এরা সহযোগিতা পায়। আবার কোনও কোনও পুলিশ কর্মকর্তা ভালো কাজ করলে, এর বিরুদ্ধে দাঁড়ালে দেখা যায়, তাকে অন্যত্র বদলি করে দেওয়া হয়। এসব বন্ধ করতে হবে।’

গোলটেবিল আলোচনায় আরও বক্তব্য দেন, জাতীয় পার্টির মহাসচিব মশিউর রহমান রাঙ্গা, জাতীয় প্রেস ক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম, সাংবাদিক নেতা মনজুরুল আহসান বুলবুল, আমাদের অর্থনীতির সম্পাদক নাইমুল ইসলাম খান, জাসদের সাধারণ সম্পাদক শিরিণ আখতার, সংসদ সদস্য এ্যারোমা দত্ত, সড়ক পরিবহন মালিক সমিতির নেতা খন্দোকার এনায়েত উল্লাহ প্রমুখ।

গোলটেবিল বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন, জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু, সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়া প্রমুখ। 

 

/এমএইচবি/এনআই/এমএমজে/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ধীরে ধীরে সচল হচ্ছে দুবাই বিমানবন্দর
ধীরে ধীরে সচল হচ্ছে দুবাই বিমানবন্দর
সোনার দামে সর্বোচ্চ রেকর্ড
সোনার দামে সর্বোচ্চ রেকর্ড
রাশিয়া জিতে গেলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে: ইউক্রেন
রাশিয়া জিতে গেলে তৃতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হবে: ইউক্রেন
কামরাঙ্গীরচর নাগরিক পরিষদের সঙ্গে মেয়র তাপসের মতবিনিময়
কামরাঙ্গীরচর নাগরিক পরিষদের সঙ্গে মেয়র তাপসের মতবিনিময়
সর্বাধিক পঠিত
এএসপি বললেন ‌‘মদ নয়, রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলাম’
রেস্তোরাঁয় ‘মদ না পেয়ে’ হামলার অভিযোগএএসপি বললেন ‌‘মদ নয়, রাতের খাবার খেতে গিয়েছিলাম’
মেট্রোরেল চলাচলে আসতে পারে নতুন সূচি
মেট্রোরেল চলাচলে আসতে পারে নতুন সূচি
‘আমি এএসপির বউ, মদ না দিলে রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেবো’ বলে হামলা, আহত ৫
‘আমি এএসপির বউ, মদ না দিলে রেস্তোরাঁ বন্ধ করে দেবো’ বলে হামলা, আহত ৫
রাজধানীকে ঝুঁকিমুক্ত করতে নতুন উদ্যোগ রাজউকের
রাজধানীকে ঝুঁকিমুক্ত করতে নতুন উদ্যোগ রাজউকের
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট