X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১১ বৈশাখ ১৪৩১

শোকজের আগে পদত্যাগ করছেন আ.লীগের বিদ্রোহী প্রার্থীরা, রবিবার যাচ্ছে নোটিশ

পাভেল হায়দার চৌধুরী
১১ ডিসেম্বর ২০১৫, ২৩:১৪আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০১৫, ০২:৩১
image

poro-nirbachon বিদ্রোহী মেয়র প্রার্থীদের কাছে শোকজ নোটিশ পাঠাচ্ছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে কেন ব্যবস্থা নেওয়া হবে না, জানতে চেয়ে আগামী রবিবার (১৩ডিসেম্বর) থেকে এ নোটিশ পাঠাবে ক্ষমতাসীন দলটি। সাত দিনের মধ্যে জবাব দিতে বলা হবে শোকজ নোটিশে। ওই নোটিশের জবাব পাওয়ার পরেই বিদ্রোহী প্রার্থীদের বিরুদ্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এদিকে, শোকজ আতঙ্কে অনেক পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থীরা দল থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করার মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। তাদের কাছে বড় ইস্যু নির্বাচন। ইতোমধ্যে কয়েকটি পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থীরা দলীয় পদ থেকে পদত্যাগও করেছেন। ক্ষমতাসীন দলটির নীতি-একাধিক নির্ধারণী পর্যায়ের  নেতা এ তথ্য জানান।
এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের দফতর সম্পাদক আবদুস সোবহান গোলাপ বলেন, বিষয়টি একান্তই আমাদের দলের ব্যাপার। তবে,  কখন থেকে চিঠি পাঠানো হবে, সেটা বলতে চাই না।  
অবশ্যই, আরেকটি সূত্র জানায়, শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সরাসরিও ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে। গঠনতন্ত্রে এ সুযোগও রয়েছে। সূত্রটির দাবি, এবার দলীয় প্রতীক নিয়ে নির্বাচন হওয়ায় বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিলে ভোটের মাঠে কোনও নেতিবাচক প্রভাব পড়বে না। কারণ, যারা আওয়ামী লীগ করেন, তারা দলের প্রার্থী এবং দলীয় প্রতীকের বাইরে যত চেষ্টাই করুন, ভোট দেবেন না।
তবে, দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হওয়ার কারণ দেখিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীদের সরাসরি বহিষ্কারের যে কথা বলা হচ্ছে, এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রের ৪৬ (ঠ) ধারায় বলা হয়েছে ‘‘জাতীয় নির্বাচনে কেউ দলীয় প্রার্থীর বিরুদ্ধে প্রার্থী হইলে দল হইতে সরাসরি বহিষ্কার হইবেন এবং যাহারা দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা করিবেন, তাহারা তদন্তসাপেক্ষে মূল দল বা সহযোগী সংগঠন হইতে বহিষ্কৃত হইবেন। স্থানীয় সরকার নির্বাচন নিয়ে পরিষ্কার কোনও ধারা নেই। তবে শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে কাউকে দল থেকে বহিষ্কারের যে বিধান রয়েছে, সেখানে কারণ দর্শানোর এ বিষয়ে গঠনতন্ত্রে (৪৬/ঙ) বলা হয়েছে ‘শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে অভিযুক্ত ব্যক্তিকে কারণ দর্শাইবার জন্য সুযোগদানের উদ্দেশ্যে যুক্তিসঙ্গত সময় দিয়া সাধারণ সম্পাদক পোস্টাল রেজিস্ট্রেশনযোগে নোটিশ দিতে বাধ্য থাকিবেন।’’

বহিষ্কার ও গঠনতন্ত্রের সংশ্লিষ্ট ধারা নিয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য নূহ-উল আলম লেনিন বলেন, গঠনতন্ত্র অনুযায়ী দুভাবেই বহিষ্কার করা যায়। শোকজ করে, আবার শোকজ না করেও। তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের  সভাপতিমণ্ডলীর সাবেক সদস্য আব্দুল লতিফ সিদ্দিকীকে আগে বহিষ্কার করা হয়েছে, তারপর শোকজ করা হয়েছে।   

সর্বশেষ গত বুধবার রাতে ২৪ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়ে বিদ্রোহী প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের নির্দেশ দিয়েছে আওয়ামী লীগ। সে হিসেবে বৃহস্পতিবার ২৪ ঘণ্টা সময় পার হয়েছে। তাহলে রবিবার থেকে কেন শোকজ নেটিশ পাঠাচ্ছেন—এমন প্রশ্নের জবাবে দলের শীর্ষ নেতারা বলেন, ২৪ ঘণ্টা অফিসিয়িাল কথা। শুক্র-শনিবার, দুই দিন সাপ্তাহিক ছুটি থাকায় শোকজ নোটিশ রবিবার থেকে পাঠানো হবে। এছাড়া, ১৩ ডিসেম্বর রবিবার মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন, তাই আমরা শেষ দিন পর্যন্ত বিদ্রোহীদের সময় দেব। তারপরই ব্যবস্থা গ্রহণ শুরু হবে।

এদিকে শোকজ আতঙ্কে অনেক পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থীরা দল থেকে স্বেচ্ছায় পদত্যাগ করার মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অনেকেই শোকজের তোয়াক্কা করছেন না। তাদের কাছে এখন বড় বিষয় নির্বাচন। ইতোমধ্যে কয়েকটি পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থীরা দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। বগুড়ার ধুনট পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী দুজন। একজন বর্তমান মেয়র এজি এম বাদশা। অন্যজন কাউন্সিলর আলামিন তরফদার। দুজনই দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন বলে বাংলা ট্রিবিউনকে জানিয়েছেন। এজি এম বাদশা বলেন, আমি এখন স্বতন্ত্র মেয়র প্রার্থী। আমি কোনও দলের নই।

চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ড পৌরসভায় বিদ্রোহী প্রার্থী বর্তমান মেয়র শফিউল আলম। তিনি উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সদস্য। দলীয় পদ থেকে গত বুধবার তিনি পদত্যাগ করেছেন।

একই পৌরসভায় আরেক বিদ্রোহী প্রার্থী সিরাজদ্দৌলা চুট্টু। তিনি পৌর আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এবং বিদ্রোহী প্রার্থী। তিনি গত বৃহস্পতিবার দলীয় পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন। জানতে চাইলে শফিউল আলম ও সিরাজদ্দৌলা দুই জনই বলেন, বর্তমানে তাদের কোনও  দলীয় পরিচয় নেই। দুজনই দাবি করেন, তারা স্বতন্ত্র প্রার্থী, সাধারণ মানুষের প্রার্থী।

মাদারীপুরের কালকিনি পৌরসভায় আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী দুজন। আবুল কালাম আজাদ ও মশিউর রহমান। আবুল কালাম আজাদ উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। মশিউর রহমানও আওয়ামী লীগ নেতা। আবুল কালাম আজাদকে মনোনয়ন না দেওয়ায় কালকিনি উপজেলার সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ সবাই গণ পদত্যাগ করেন। তবে কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ তাদের মনোনয়নপত্র গ্রহণ না করে সেখানে নির্বাচন উন্মুক্ত করে দেয়। ফলে বিদ্রোহীরাও থাকবেন সেখানে নির্বাচনে। শোকজ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমরা তো পদত্যাগ করেই আছি।  রাজবাড়ি পাংসা পৌরসভায় আওয়ামী লীগের  বিদ্রোহী প্রার্থী ওয়াজেদ আলী মন্ডল। তিনিও শেষ পর্যন্ত নির্বাচন করবেন বলে জানান। তিনি বলেন, প্রয়োজন হলে পদত্যাগ করব। তবে নির্বাচনি মাঠে থাকব। 

/এমএনএইচ/ 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
ছাত্রলীগের ‘অনুরোধে’ গ্রীষ্মকালীন ছুটি পেছালো রাবি প্রশাসন
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
সাজেকে ট্রাক খাদে পড়ে নিহত বেড়ে ৯
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
বার্সেলোনার সঙ্গে থাকছেন জাভি!
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
চার বছরেও পাল্টায়নি ম্যালেরিয়া পরিস্থিতি, প্রশ্ন নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
আজকের আবহাওয়া: কোথায় কেমন গরম পড়বে
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী
ছয় দিনের সফরে ব্যাংকক গেলেন প্রধানমন্ত্রী