গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী নির্ধারিত সময়ের মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলোতে ৩৩ শতাংশ নারীর অন্তর্ভুক্তি নিশ্চিত করার পক্ষে মত দিয়েছেন দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতারা। তারা বলেন, ‘কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত প্রতিটি কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী থাকা উচিত।’
আন্তর্জাতিক নারী দিবস ২০২০ উপলক্ষে ডেমোক্রেসি ইন্টারন্যাশনালের আয়োজনে রাজধানীর একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত এক কর্মশালায় তারা এসব কথা বলেন।
রাজনীতিবিদদের বহুদলীয় এই সম্মেলনে আওয়ামী লীগ, বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) ও জাতীয় পার্টির নেতারা অংশ নেন।
এতে প্যানেল আলোচক হিসেবি উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কর্নেল ((অব.) ফারুক খান, বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির তথ্য ও গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক ড. সেলিম মাহমুদ, জাতীয় পার্টির জাতীয় নির্বাহী কমিটির কো-চেয়ারম্যান জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু, এবং বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক আ্যডভোকেট বিলকিস জাহান শিরিন।
প্রসঙ্গত, গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও), ১৯৭২ (সংশোধিত ২০০৯) এর ৯০ এর বি ধারা অনুযায়ী, ২০২০ সালের ৩১ ডিসেম্বর রাজনৈতিক দলগুলোর মূলধারার কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারী অন্তর্ভুক্তির সময়সীমা শেষ হচ্ছে। এই আইন অনুযায়ী, এ বছরের মধ্যে বাংলাদেশের রাজনৈতিক দলগুলোর কেন্দ্রীয় পর্যায় থেকে শুরু করে তৃণমূল পর্যন্ত প্রতিটি কমিটিতে এক তৃতীয়াংশ নারীর প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত করতে হবে। কিন্ত রাজনৈতিক দলগুলোর কমিটিতে নারীদের অংশগ্রহণ এখনও এই লক্ষ্যমাত্রার কাছাকাছি নয়।
সম্মেলনে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নারী নেতৃবৃন্দ বাংলাদেশের রাজনীতিতে নারীদের প্রতিবন্ধকতাসগুলো চিহ্নিত করে তা উত্তরণে জন্যে সুপারিশ তুলে ধরেন।
সুপারিশগুলো হলো-গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও), ১৯৭২ (সংশোধিত ২০০৯) এর ৯০ এর বি ধারা বাস্তবায়নে নির্বাচন কমিশন কর্তৃক মনিটরিং সেল গঠন করা। উক্ত ধারা বাস্তবায়নে রাজনৈতিক দলগুলোতে কেন্দ্রীয় মনিটরিং সেল গঠন করা। রাজনৈতিক দলগুলোর কেন্দ্র থেকে জেলার নেতৃবৃন্দের প্রতি এবং জেলা থেকে উপজেলার নেতৃবৃন্দের প্রতি চিঠির মাধ্যমে নারী অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে নির্দেশনা প্রদান করতে হবে।
তৃণমূলের কোনও কমিটিতে কাঙ্খিত সংখ্যক নারী নেতা না থাকলে সেই কমিটির অনুমোদন না দেওয়া।
২০২০ সালের মধ্যে মূলধারার কমিটিতে ৩৩ শতাংশ নারীর অংশগ্রহণ নিশ্চিত করতে প্রত্যেক দলের নিজস্ব রোডম্যাপ তৈরি করতে হবে।
নারীর জন্যে দলের ভেতরে এবং বাইরে নিরাপদ এবং সহযোগিতামূলক রাজনৈতিক পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
নারীদের রাজনৈতিক দক্ষতা বৃদ্ধির জন্যে বিভিন্ন বিষয়ে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা।