অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ব্যাটিং ব্যর্থতায় ভুগতে হয়েছিল বাংলাদেশের নারী দলকে। রবিবার ভারতের বিপক্ষেও তাদের সিরিজ শুরু হলো সেই একই ব্যর্থতা দিয়ে। টপ অর্ডার ব্যাটারদের দৈন্যতায় ভারতের বিপক্ষে পাঁচ ম্যাচের সিরিজ শুরু হলো হার দিয়ে। বিশেষ করে প্রথম পাওয়ার প্লে ঠিকমতো ব্যবহার করতে না পারার খেসারত দিচ্ছে নিগার সুলতানা জ্যোতির দল।
রবিবার ব্যাটিং ব্যর্থতায় ১৪৬ রানের মাঝারি মানের লক্ষ্য ছুঁতে পারেনি স্বাগতিকরা। অধিনায়ক নিগার একাই লড়াই করেছেন। তাতে শেষ পর্যন্ত বাংলাদেশ ১০১ রান করতে পারে। ফলে ৪৪ রানের জয় পায় হারমানপ্রীতের ভারত।
সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে আগে ব্যাটিং করে বাংলাদেশকে ১৪৬ রানের লক্ষ্য দিয়েছিল সফরকারীরা। জবাবে খেলতে নেমে প্রথম ওভারেই ওপেনার দিলারা আক্তারকে হারায় বাংলাদেশ। দুই নম্বরে ব্যাটিংয়ে নামেন লম্বা সময় ধরে অফফর্মে থাকা সোবাহানা মোস্তারি। আজও ব্যর্থ হয়েছেন তিনি। শুরুতে দৃষ্টিনন্দন একটি চার মারলেও রেনুকা সিংহের সুইংয়ে পরাস্ত হয়ে ক্লিন বোল্ড হন টপ অর্ডার এই ব্যাটার। আউট হওয়ার আগে খেলেন ৬ রানের ইনিংস। দলীয় ২৯ রানের মাথায় মুর্শিদা খাতুন আউট হলে চাপে পড়ে যায় বাংলাদেশ।
পাওয়ার প্লেতেই মূলত বাংলাদেশ দল হেরে যায়। ৬ ওভার ৩ উইকেট হারিয়ে বাংলাদেশের সংগ্রহ ৩০ রান। সপ্তম ওভারের প্রথম বলে ফাহিমা আউট হলেও পুরোপুরিই ম্যাচ থেকে ছিটকে যায় বাংলাদেশ।
এক প্রান্ত আগলে রেখে রানের চাকা সচল রাখার চেষ্টা চালিয়ে যান বাংলাদেশের অধিনায়ক। কিন্তু অপরপ্রান্তে কেউই দায়িত্ব নিয়ে ব্যাটিং করতে পারেননি। নিগারের দারুণ একটি ইনিংস বৃথা যায় সতীর্থদের দায়িত্বহীনতায়। শেষ ওভার লম্বা শট খেলতে গিয়ে পূজা ভাস্ত্রাকারের বলে বোল্ড হন বাংলাদেশের অধিনায়ক। তার আগে অবশ্য টি-টোয়েন্টি ক্যারিয়ারের সপ্তম হাফ সেঞ্চুরি ছুঁয়ে ফেলেন তিনি। আউট হওয়ার আগে খেলেন ৪৮ বলে ৫ চার ও ১ ছক্কায় ৫১ রানের ইনিংস।
শেষ ওভারের প্রথম বলে নিগার আউট হওয়ার পর অতিরিক্ত খাত থেকে একটি রান এবং মারুফার ব্যাট থেকে আসে একটি রান। পূজার নো বলে পাওয়া ফ্রি হিটেও রান নিতে ব্যর্থ হন মারুফা। শেষ পর্যন্ত নির্ধারিত ২০ ওভারে ১০১ রানে থামে বাংলাদেশের ইনিংস।
ভারতের বোলারদের মধ্যে রেনুকা সিং বাংলাদেশের ব্যাটারাদের কঠিন পরীক্ষায় ফেলেন। ৪ ওভারে ১৮ রান খরচায় তার শিকার তিনটি উইকেট। এছাড়া পূজা নেন দুটি উইকেট। শ্রেয়াঙ্কা পাতিল, দীপ্তি শর্মা ও রাধা যাদব প্রত্যেকে একটি করে উইকেট নিয়েছেন।
এর আগে সিলেটে টসে জিতে আগে ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত নেয় ভারত। তারা শুরুটা দেখেশুনে করলেও তৃতীয় ওভারেই বাংলাদেশকে সাফল্য এনে দেন পেসার ফারিহা ইসলাম তৃষ্ণা। ওপেনরা স্মৃতি মান্ধানাকে ৯ রানে বোল্ড করেন ফারিহা। দ্বিতীয় উইকেটে শেফালি ভার্মা ও স্বস্তিকা ভাটিয়া ৩১ বলে ৪৩ রানের জুটি গড়ে প্রতিরোধ গড়েন। রাবেয়ার ঘূর্ণিতে শেফালি ২২ বলে ৩১ রান করে আউট হন। এরপর হারমানপ্রীত কৌরকে সঙ্গে নিয়ে স্বস্তিকা গড়েন আরও ৪৫ রানের জুটি।
২২ বলে ৩০ রান করে অধিনায়ক হারমানপ্রীত লেগ স্পিনার ফাহিমার ঘূর্ণিতে এলবিডব্লিউ হন। স্কোরবোর্ডে আরও দুই রান যোগ হতেই এবার ফেরেন স্বস্তিকা। ভারতীয় এই ব্যাটারের ব্যাট থেকে আসে ২৯ বলে ৩৬ রান।
শেষ ৫ ওভারে খুব বেশি রান তুলতে পারেননি ভারতীয় ব্যাটাররা। ১৫ ওভারে তাদের রান ছিল ৪ উইকেটে ১১০। সেখান থেকে বাকি ৫ ওভারে তারা যোগ করতে পেরেছে ৩ উইকেট হারিয়ে ৩৫ রান। ইনিংসের শেষ ওভারে মারুফা মাত্র ২ রান দিয়ে দুটি উইকেট নেন। আর তাতে ভারতের সংগ্রহ দেড়শ ছোঁয়নি।
বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে রাবেয়া খান ২৩ রানে নেন তিনটি উইকেট। মারুফা দুটি এবং ফারিয়া ও ফাহিমা নেন একটি করে উইকেট।