ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে আরও একটি শিরোপা ঘরে তুলেছে আবাহনী। মঙ্গলবার শেখ জামালকে হারিয়ে দুই ম্যাচ আগেই ২৩তম শিরোপা নিশ্চিত করেছে তারা। শিরোপা জয়ের পর আবাহনীর অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত তার প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, আবাহনীই চ্যাম্পিয়নশিপের দাবিদার।
চলতি মৌসুমে এখন অব্দি আবাহনীর জন্য কোন ক্লাবই বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। লিগ পর্বে টানা ১১ ম্যাচ জয়ের পর সুপার লিগেও জয়ের ধারা অব্যাহত রেখেছে। হবেই না কেন? জাতীয় দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটারকে নিয়েই যে দল গঠন করেছে ২৩ বারের চ্যাম্পিয়নদের। এমন দল শিরোপা না জিতলে বরং সমালোচনার মুখে পড়তে হতো। তবে নিজেদের পরিকল্পনায় সফল হওয়ায় দারুণ উচ্ছ্বসিত মোসাদ্দেক, ‘আমরা টুর্নামেন্ট শুরুর আগেই বলেছিলাম যেভাবে দল গড়েছি তাতে চ্যাম্পিয়নশিপের দাবিদার আমরাই। পারফরম্যান্সও তা-ই বলে। আমরা কোনও ম্যাচ হারিনি। সবগুলো ম্যাচে জিতেছি দাপট দেখিয়ে। কখনো অস্বস্তিতে পড়িনি।’
মোসাদ্দেক ১২ বছর ধরে আবাহনীর জার্সিতে খেলছেন। এই ক্লাবের প্রতি তার নিবেদনের কমতিও নেই। মোসাদ্দেকের গর্ব হয় এই ভেবে যে, আবাহনীর মতো বড় একটি ক্লাব তার প্রতি আস্থা রাখছে, ‘এটা অনেকটা গর্বের বিষয়। এতো বড় একটি ক্লাব। দল গঠনের আগেই আমার কথা বিবেচনা করে, আমাকে ঘিরে পরিকল্পনা সাজায়। কাকে নেওয়া যায়, কাকে কোন সময় আনা যায় এসব নিয়ে আলোচনা করে। আমার কাজটা আসলে সুজন স্যারই সহজ করে দিয়েছেন। আমাদের বোঝাপড়াটা ভালো বলেই দল পরিচালনা করতে যেমন সুবিধা হয়, ঠিক তেমনি সাফল্যও আসে।’
বিকেএসপির-৪ নম্বর মাঠে মঙ্গলবার অপরাজিত ৫৩ রানের ঝকঝকে ইনিংস খেলে আবাহনীকে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের শিরোপা জেতাতে অবদান রাখেন মোসাদ্দেক। শেখ জামালকে হারানোর ম্যাচে ম্যাচ সেরাও হয়েছেন তিনি। যদিও আবাহনীর অধিনায়ক নিজেদের সাফল্যের জন্য কৃতিত্ব দিলেন দলের সবাইকে, ‘ফ্র্যাঞ্চাইজি বা ক্লাব ক্রিকেটে আপনি যদি পারফরম্যান্স না করেন, তাহলে আপনাকে কিন্তু খেলাবে না। ক্রিকেটে তো আরও বেশি। আমার কাছে মনে হয় যেখানে যতটুকু সম্ভাবনা ছিল, আমি পারফর্ম করেছি এবং ভালো করেছি। আবাহনী সেই বিশ্বাসটা আমার ওপর করেছে। শুধু ক্রেডিট আমার দিলে হবে না। দলের বাকিরাও সবাই অবদান রেখেছে।’
জাতীয় দলের বেশিরভাগ ক্রিকেটার নিয়ে দল গঠন করায় শেষ দিকে এসে বিপাকেও পড়তে হয় আবাহনীকে। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজ খেলতে জাতীয় দলের ক্যাম্পে দলটির বেশিরভাগ ক্রিকেটার চট্টগ্রামে ছিলেন। এই অবস্থায় আবাহনী দশ ক্রিকেটারকে হারিয়ে একাদশ গঠন করা নিয়েই শঙ্কায় পড়ে যায়। শেষ পর্যন্ত বাহনীর আবেদনের প্রেক্ষিতে বিসিবি আফিফ হোসেন, তানভীর ইসলাম ও তানজিম হাসান সাকিবকে এই ম্যাচের জন্য ছেড়ে দেয়। তারপরও বাইরের বেশ কিছু ক্রিকেটারকে নিয়ে শেখ জামালের বিপক্ষে খেলতে নামে আবাহনী।
মূল একাদশের ক্রিকেটারদের বাদ দিয়ে সাকিব, সোহানদের শেখ জামালকে হারাতে পেরে দারুণ খুশি মোসাদ্দেক, ‘গতকালের ম্যাচটা চ্যালেঞ্জিং ছিল। কারণ, আমাদের নিয়মিত ৮-৯ ক্রিকেটারকে পাইনি। শেখ জামাল ধানমণ্ডি ক্লাব শক্তিশালী দল ছিল। সাকিব ভাই আবার যোগ দিয়েছিল। সব মিলিয়েই আমি বলবো চ্যালেঞ্জিং ছিল। সবাই নিজেদের দায়িত্ব পালন করেছে ঠিকমতো। শেষ পর্যন্ত আমরা জেতায় বেশ খুশি।’