‘ভাষা হারিয়ে ফেলেছি। এই ধরনের ব্যাটিং আমরা টিভিতে দেখেছি। এটা অবাস্তব ব্যাটিং’- ম্যাচ শেষে বলছিলেন লখনউ সুপার জায়ান্টস অধিনায়ক লোকেশ রাহুল। কারও চোখে প্লে স্টেশনের গেম হয়ে ধরা দিলো সানরাইজার্স হায়দরাবাদের ব্যাটিং। অবাস্তব ব্যাটিংই যেন করলেন ট্র্যাভিস হেড ও অভিষেক শর্মা। পুরো ম্যাচে প্রতিদ্বন্দ্বিতা দেখা গেছে এই দুই ওপেনারের মধ্যে। কে কাকে ছাড়িয়ে যেতে পারেন, সেই প্রতিযোগিতা হয়েছে। আর তাতে অসহায় আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে লখনউকে।
প্রথমবার আইপিএলে লখনউকে হারানোর স্বাদ পেয়েছে হায়দরাবাদ, তাও আবার ১০ উইকেটে। একশর বেশি টার্গেটে নেমে সবচেয়ে বেশি বল হাতে রেখে জেতার রেকর্ডও গড়েছে তারা। দশম ওভারের চতুর্থ বলে অভিষেক যখন ছক্কা মেরে দলের জয় নিশ্চিত করলেন, তখনও ৬২ বল বাকি!
এই আসরে দিল্লি ক্যাপিটালসের বিপক্ষে পাওয়ার প্লেতে ১২৫ রানের বিশ্ব রেকর্ড গড়েছিল হায়দরাবাদ। একই আইপিএলে পাওয়ার প্লেতে ১০৭ রানের দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সংগ্রহ গড়লো তারা বুধবার।
দিল্লির বিপক্ষে সেদিন ১৬ বলে হাফ সেঞ্চুরি করেছিলেন হেড। অস্ট্রেলিয়ান ওপেনার সমান বল খেলে লখনউর বিপক্ষেও ফিফটি করলেন। অভিষেকের হাফ সেঞ্চুরি করতে বেশি সময় নেননি। তিনি ১৯ বলে পঞ্চাশ ছোঁন।
লখনউর কৃষ্ণাপ্পা গৌতম ইনিংসের প্রথম ওভারে ৮ রান দেন। এরপর কোনও বোলারই ছাড় পাননি। ৩.১ ওভারে পঞ্চাশ রান যোগ হয় দলীয় স্কোরবোর্ডে। একশ হয়েছে ষষ্ঠ ওভারের চতুর্থ বলে।
হাফ সেঞ্চুরি করেও থামেননি অভিষেক কিংবা হেড। একই আগ্রাসন নিয়ে খেলে গেছেন বাকি সময়। দ্বিতীয় টাইম আউটের আগেই নিশ্চিত হয়ে যায় জয়। প্রথম ১০ ওভারের মধ্যে আইপিএলে রেকর্ড ১৬৭ রান করে হায়দরাবাদ।
৩০ বলে ৮৯ রানে অপরাজিত থেকে ম্যাচসেরা হয়েছেন হেড। আটটি করে চার ও ছয় মারেন তিনি। ২৮ বলে ৮ চার ও ৬ ছয়ে ৭৫ রানে অপরাজিত ছিলেন অভিষেক।
হায়দরাবাদের মাঠে টসে জিতে আগে ব্যাটিং নেয় লখনউ। ১২তম ওভারে ৬৬ রানে চার উইকেট হারানোর পর নিকোলাস পুরান ও আয়ুশ বাদোনির ৯৯ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটি ছিল কার্যকরী। ৪৮ রানে পুরান ও বাদোনি ৫৫ রানে অপরাজিত ছিলেন।
১২ ম্যাচে ১৪ পয়েন্ট নিয়ে তৃতীয় স্থানে হায়দরাবাদ। তাদের এই জয়ে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্স প্রথম দল হিসেবে আইপিএল থেকে বিদায় নিলো। লখনউ সমান খেলে ১২ পয়েন্ট নিয়ে ছয়ে। সমান সংখ্যক ম্যাচ খেলে ৮ পয়েন্ট নিয়ে নয় নম্বরে মুম্বাই, বাকি দুই ম্যাচ জিতলেও তারা সেরা চারে থাকতে পারবে না।