কেউই নিজেদের ফেবারিট ভাবছেন না। তারপরও দুই দলই জয়ের জন্য মরিয়া। মাশরাফিতো সংবাদ সম্মেলন থেকে বেরিয়ে যেতে যেতে উপস্থিত সংবাদকর্মীদের আক্ষেপ করেই বললেন, বৃষ্টিটা হওয়ার আর সময় পেলো না!
মাশরাফির দূঃচিন্তা অবশ্য যথেষ্ট কারণ আছে। কেননা দুই দলই বুধবারের ম্যাচ জিততে মরিয়া। একে অন্যকে সমীহ করলেও ভেতরে ভেতরে ফুঁসছেন নিজেদের সামর্থ্য প্রমাণ করতে। গত রবিবার মিরপুর ঘটে যাওয়া ঘটনার পর এমটাই স্বাভাবিক হওয়ার কথা। তাইতো মাশরাফি আক্ষেপে পুড়ছেন, ইংলিশদের বদ করার তর সইছে না টাইগারদের। তবে সবকিছু ছাপিয়ে ইংলিশ বধে টাইগারদের শক্ত প্রতিপক্ষ হয়ে উঠছে বৃষ্টি।
বৃষ্টি ভিলেন না হলে বুধবারের ম্যাচটি চট্টলাবাসী প্রাণভরেই উপভোগ করার সুযোগ পাবে। দর্শকদের মনেও শঙ্কা শেষ পর্যন্ত ম্যাচটি মাঠে গড়াবে তো।
অর্নাস দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী রাসেল অপেক্ষায় আছেন বুধবার টাইগারদের পক্ষে গলা ফাটাবেন বলে। তার সেই স্বপ্নে জল ঢেলে দিতে পারে কেবল বৃষ্টিই। রাসেলের মতো চট্টগ্রামবাসীর অপেক্ষার রাত হতে যাচ্ছে বুধবারের রাতটুকু। চট্টগ্রামে মঙ্গলবার সারাদিনই থেমে থেমে বৃষ্টি হয়েছে। আবহাওয়া রিপোর্টে বৃষ্টি হওয়ার সম্ভবনা আছে বুধবারও।
মূলত চট্টগ্রামে তৃতীয় ও শেষ ম্যাচের আগে দুই দলের উত্তেজনা বিরাজ করার মূল কারণ গত রবিবার মিরপুরে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে ঘটে যাওয়া ঘটনা। রিভিউতে বাটলারে আউট এবং তামিমের সঙ্গে বেন স্টোকসের দ্বন্দ্ব মিলে দুই দলের মধ্যে চাপা ক্ষোভ বিরাজ করছে।
তারপরও দুই দলের পক্ষ থেকেই মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়েছে, যা হয়েছে সেটা অতীত। এটা নিয়ে আকড়ে থাকার কিছু নেই তাদের। সামনের ম্যাচে ভালো ক্রিকেট খেলতে মুখিয়ে তারা।
যদিও ইংলিশ প্রতিনিধি হয়ে আসা মঈন আলী সরাসরি বললেন রবিবারের ঘটনার পর তাদের অধিনায়ক যে কোনও মূল্যেই ম্যাচটি জিততে চাইবেন। মাশরাফিও জানালেন তার দল কতটা মরিয়া ম্যাচ জিততে, ‘আমরাও ম্যাচ জিততে মরিয়া থাকব। আমরা এখানে খেলতেই এসেছি। আমাদেরও চেষ্টা থাকবে জেতা।’
মঈন আলীর বলা কথার প্রতিউত্তরেই মাশরাফির যে জবাব। এই জবাবে সাধারণ হলেও এর মধ্যে ‘আগুন’ আছে। মাশরাফিরা প্রস্তুত এই ‘আগুনে’ ইংলিশদের ভস্ম করতে।
এইসব ঘটনায় খেলোয়াড়দের মধ্যে মাসনিক চাপ তৈরি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। যদিও মাশরাফি তার সম্ভাবনা ফুৎ করে উড়িয়ে দিলেন। তিনি জানান, ‘দলের কেউই বিষয়টি নিয়ে একদমই ভাবছে না। শতভাগ নিশ্চিত করে বলতে পারি, আমাদের কেউই বিষয়টি নিয়ে ভাবছেও না। আমাদের ভাবনা জুড়ে শুধুমাত্র কিভাবে ভালো ক্রিকেট খেলা যায়।’
বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক খবর হচ্ছে, তৃতীয় ম্যাচটি অনুষ্ঠিত হচ্ছে টাইগারদের পয়মন্ত ভেন্যুতে। সর্বশেষ আট ম্যাচের মধ্যে টাইগাররা এখানে হেরেছে মাত্র একটি ম্যাচ। সেই সঙ্গে এই ভেন্যুতে ২০১১ সালে ওয়ানডে বিশ্বকাপে ইংল্যান্ডকে হারানোর স্মৃতিও রয়েছে সাকিব-তামিমদের। সবমিলিয়ে টাইগারদের সিরিজ জয়ের জন্য সব ধরনের রসদই আছে। শুধু মাত্র নিয়ন্ত্রণ নেই আবহাওয়ার ওপর।
এজন্য মাশরাফি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, ‘বৃষ্টি-চিন্তার ব্যাপার। কালকে আবহাওয়া কেমন থাকবে বা কী হবে, সেটা ভাবতে হবে। তবে এখনই সিদ্ধান্ত নেওয়া কঠিন। কালকে মাঠের পরিস্থিতির ওপর নির্ভর করছে অনেককিছু।’
টাইগারদের মতোই আবহাওয়া নিয়ে চিন্তিত ইংলিশরা। তারপরও মঈন আলী বললেন, ‘আবহাওয়ার ওপরতো কারও হাত নেই। এটা নিয়ে আমরা তাই ভাবছি না। বরং মাঠের খেলার দিকেই মনোযোগ দিতে আগ্রহী।’
তিনি ঘোষণা দিলেন, ‘গত দুই ম্যাচে আমরা আমাদের সেরাটা খেলতে পারিনি। শেষ ম্যাচে আমরা খুব ভালো ভাবেই প্রস্তুত নিজেদের সেরা ক্রিকেট খেলতে। আশা করি কালকে রোমাঞ্চকর এক ম্যাচ হবে। আমি নিশ্চিত ওই ঘটনার পর বাংলাদেশ তাতিয়ে আছে আমাদের বিপক্ষে সেরাটা খেলতে।’
/আরআই/এসএনএইচ/