চট্টগ্রাম টেস্টের ভাগ্যে কী আছে তা শনিবার দিন শেষে স্পষ্ট হতে পারে। আপাতত দুই দলের লক্ষ্য স্বতন্ত্র। বাংলাদেশের লক্ষ্য উইকেট রেখে যতদূর পর্যন্ত যাওয়া যায়। সেক্ষেত্রে লিড ১০০ কিংবা তারও বেশি হতে পারে! অপরদিকে ইংলিশদের লক্ষ্য যত দ্রুত সম্ভব স্বাগতিকদের অলআউট করে দ্বিতীয় ইনিংস শুরু করা।
তবে আজকে মুশফিকের উইকেটটি টার্নিং পয়েন্ট হয়ে আছে দুই দলের জন্য। একদিকে বাংলাদেশ শিবিরে হতাশা মুশফিকের আউট। অন্যদিকে ইংল্যান্ড শিবিরে উচ্ছ্বাস মুশফিককে শেষ বিকালে ফিরিয়ে দিয়ে।
মুশফিক যখন ফিরে যান, তখন শেষ আড়াই ওভারের জন্য নাইট ওয়াচম্যান হিসেবে নামেন পেসার শফিউল ইসলাম। তখন অপরপ্রান্তে ক্রিজে অবিচল ছিলেন বিশ্বের অন্যতম সেরা অলরাউন্ডার সাকিব আল হাসান। তিনি ৩১ রান নিয়ে অপরাজিত আছেন। আর শনিবার সেই শফিউলকে সঙ্গে নিয়েই মাঠে নামবেন সাকিব। ধারনা করা হচ্ছে, দ্বিতীয় দিনের চেয়ে তৃতীয় দিনের উইকেট আরও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে। সেক্ষেত্রে সাকিবের সঙ্গে শফিউলের টিকে থাকাটা এক প্রকার চ্যালেঞ্জই হবে।
বাংলাদেশ তাই তাকিয়ে থাকবে চট্টগ্রাম টেস্টে দুই অভিষিক্ত সাব্বির রহমান ও মেহেদী হাসান মিরাজের দিকেই। মিরাজ এরই মধ্যে বোলিং দিয়ে ষোলোআনা প্রত্যাশা মিটিয়ে ফেলেছেন। অভিষেক টেস্টেই তিনি পঞ্চম বোলার হিসেবে ৬ উইকেট শিকার করেছেন। তাই স্বাভাবিক ভাবেই তার কাছে ব্যাটিংয়ে প্রত্যাশা করাটা বাড়াবাড়ি মনে হতে পারে! কিন্তু বাস্তবিক অর্থে মিরাজের বলের চেয়ে ব্যাট হাতেই দেওয়ার আছে অনেক কিছু! গত যুব বিশ্বকাপে মেহেদী হাসান দারুণ কিছু ইনিংস খেলে হারের মুহূর্ত থেকে দলকে জয়ের বন্দরে নিয়ে এসেছিলেন। তাইতো যুব বিশ্বকাপে টুর্নামেন্ট সেরা ক্রিকেটার নির্বাচিত হয়েছিলেন। ৬ ম্যাচে ২৪২ রানের পাশাপাশি তিনি ১২টি উইকেট নিয়েছিলেন।
এছাড়া প্রথম শ্রেণির ১২টি ম্যাচে তার ব্যাট থেকে এসেছে ৫ হাফসেঞ্চুরিতে ৫২৪ রান। লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটেও কম নয়। ২৭ ম্যাচে তার সংগ্রহ ৪৮১ রান।
এমন ব্যাটিং অলরাউন্ডারের কাছ থেকে তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রত্যাশা থাকবে বাংলাদেশের। এখন দেখার বিষয় মিরাজ বোলিংয়ে প্রত্যাশা পূরণ করার পর ব্যাটিংয়ে কতটা প্রত্যাশা পূরণ করতে পারেন।
মিরাজের পরেই রয়েছেন আরেক অভিষিক্ত ক্রিকেটার সাব্বির রহমান রুম্মন। সংক্ষিপ্ত ফরম্যাটে বাংলাদেশের বিস্ফোরক এই ব্যাটসম্যান প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে বেশ ধারালো। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ৩৫ ম্যাচ খেলে ৩ সেঞ্চুরি ও ৮ হাফসেঞ্চুরিতে ১৮৪০ রান এসেছে তার ব্যাট থেকে। এছাড়া গত বছর সেপ্টেম্বরে বেঙ্গালুরু চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে ভারত ‘এ’ দলের বিপক্ষে ১২২ রানের ইনিংস খেলেছিলেন। হয়তো শনিবার ওই ম্যাচের আত্মবিশ্বাস ফিরে আসবে চট্টগ্রামের ২২ গজে!
টেস্ট সহ-অধিনায়ক তামিমের অবশ্য আশা তরুণ এই দুই ক্রিকেটার শনিবার প্রত্যাশা পূরণ করতে পারবেন, ‘আমি আরও একটু বড় রান করতে পারলে দলের জন্য ভালো হত। তবে আমি এখনও আশাবাদী। আমাদের সাকিব আছে, সাব্বির ও মিরাজ আছে। তারা ব্যাটিং করতে পারদর্শী। আশা করি ওরা জুটি বেঁধে আমাদেরকে ভালো একটি স্কোর এনে দেবে।’
/এফআইআর/