X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

ছন্নছাড়া ব্যাটিংই ছিটকে দিল খুলনাকে

রবিউল ইসলাম
০৭ ডিসেম্বর ২০১৬, ২২:৩৭আপডেট : ০৭ ডিসেম্বর ২০১৬, ২২:৪২

দ্বিতীয় কোয়ালিফাইয়ারেও লড়লেন মাহমুদউল্লাহ, যদিও পারেননি দলকে জেতাতে পুরো টুর্নামেন্টে ছন্নছাড়া ব্যাটিংই ভুগিয়েছে খুলনাকে। বেশ কয়েকটি ম্যাচে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ব্যাটিং-বোলিং দিয়ে দলকে জিতেয়েছেন। যদিও প্রায় প্রতি ম্যাচ শেষেই খুলনার অধিনায়কের কণ্ঠে আক্ষেপের নাম ছিল তাদের ব্যাটিং বিভাগ।

ব্যাটিং ব্যর্থতায় দ্বিতীয় সুযোগও হাতছাড়া করল খুলনা টাইটানস। রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে তিন বিভাগেই ছন্নছাড়া ক্রিকেট খেলেছে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের খুলনা টাইটানস। রাজশাহীর বিপক্ষে মুখোমুখি তিন লড়াইয়ে খুলনা হেরেছে ১-২-এ। বুধবার খুলনার দেওয়া ১২৬ রানের লক্ষ্য ৪ বল হাতে রেখেই টপকে যায় ড্যারেন স্যামির রাজশাহী।

টুর্নামেন্টের শুরুতে অবশ্য খুলনা টাইটানসকে নিয়ে কেউই এতটা ভাবেনি। কেননা দেশি-বিদেশি মিলিয়ে খুলনা টাইটানসে ভালোমানের তেমন নাম ছিল না। তারপরও মাহমুদউল্লাহর নেতৃত্বে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থান থেকে নিশ্চিত করে সেরা চার।

প্রথম কোয়ালিফাইয়ারে ঢাকা ডায়নামাইটসের বিপক্ষে বিধ্বস্ত হয় খুলনা। সেখানে স্পষ্টই ফুটে উঠেছে খুলনার ব্যাটিং ব্যর্থতা। যদিও আম্পায়ারের বেশ কয়েকটি বাজে সিদ্ধান্ত ছিল, যা খুলনার বিপক্ষে গিয়েছে। তারপরও ৮৬ রানে অলআউট, এটা মেনে নেওয়া কঠিন। ম্যাচটি খুলনা হেরে যায় ৫৪ রানে।

টুর্নামেন্টের নিয়ম অনুযায়ী প্রথম কোয়ালিফিইয়ারে হারা দলটি সুযোগ পাবে এলিমিনেটর রাউন্ডের জয়ী দলের বিপক্ষে দ্বিতীয় কোয়ালিফিইয়ার খেলার। সেই হিসেবে বুধবার খুলনার জন্য দ্বিতীয় সুযোগ ছিল ফাইনালে যাওয়ার। কিন্তু ৭ উইকেটে হেরে বিপিএলের চতুর্থ আসর থেকে বিদায় নিতে হয়েছে তাদের।

পুরো টুর্নামেন্টে ছন্নছাড়া ব্যাটিংই ভুগিয়েছে দলটিকে। বেশ কয়েকটা ম্যাচে অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ ব্যাটিং-বোলিং দিয়ে দলকে জিতেয়েছেন। প্রায় প্রতি ম্যাচ শেষেই খুলনার অধিনায়কের কণ্ঠে আক্ষেপের নাম ছিল তাদের ব্যাটিং বিভাগ। বোলিং কিছুটা শক্তিশালী থাকলেও মাঝেমধ্যে বোলিংয়েও পথ হারিয়েছে খুলনা।

বুধবার ছাড়িয়ে গেল আগের সব ব্যর্থতাকে। ব্যাটিংয়ে টপ অর্ডারের ব্যর্থতার পর মাত্র ১২৫ রান দাঁড় করাতে সক্ষম হয় খুলনা। দলের পক্ষে সর্বোচ্চ ৩২ রান করেন মিডল অর্ডারে খেলা আরিফুল হক। চলতি বিপিএলে এটাই আরিফুলের সর্বোচ্চ সংগ্রহ। বুধবার আরিফুল নিজের সেরা ইনিংসটা না খেললে হয়তো আরও বড় লজ্জায় পড়তে হতো খুলনাকে। এক কথায় আরিফুল খুলনাকে বড় লজ্জার হাত থেকে বাঁচিয়েছেন।

লিগ পর্বের ১২ ম্যাচ খেলে ৭টি জয় নিয়ে পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠেছিল খুলনা টাইটানস। নিজেদের প্রথম ম্যাচে এই রাজশাহী কিংসকে হারিয়ে টুর্নামেন্টের শুভসূচনা করেছিল খুলনা। অবশ্য জয়টা এসেছিল নাটকীয়ভাবেই। শেষ ওভারে মাহমুদউল্লাহ রাজশাহীর ৩ উইকেট তুলে নিলে খুলনা ম্যাচ জিতে ৩ রানে।

পরের ম্যাচেই আসলে বোঝা গিয়েছিল খুলনার ব্যাটিং অর্ডার আসলে কতটা দুর্বল। বিপিএলের ইতিহাসে লজ্জার রেকর্ড গড়ে খুলনা মাত্র ৪৪ রানে অলআউট হয় রংপুরের বিপক্ষে।

ওই ম্যাচে ব্যাটিং ব্যর্থতার পর খুলনার অধিনায়ক প্রথমবারের মতো নিজেদের ব্যাটিং দুর্বলতা সামনে এনেছিলেন। ৪৪ রানের লজ্জার পর বেশ কয়েকটি ইনিংসে ভালো ব্যাটিং হলেও খুলনা মূলত ভুগেছে তাদের ব্যাটিংয়ে। টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে বিগ হিটার থাকতে হয়, কিন্তু আবদুল মজিদ-শুভাগত-অলক কাপালিরা মোটেও বিগ হিটার নয়। মিডল অর্ডারে এরা পারফরম্যান্স না করাতেই মূলত বেগ পেতে হয়েছে খুলনাকে।

নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচ জেতার পর অবশ্য ঘুরে দাঁড়িয়েছিল খুলনা। টানা চার ম্যাচ জিতে পয়েন্ট টেবিলে এগিয়ে গিয়েছিল। সেখানে ১৫০ ছাড়ানো কয়েকটি ম্যাচ খেললেও সব মিলিয়ে ব্যাটিংটা ভালো হয়নি। এক মাহমুদউল্লাহর ওপর নির্ভর করেই জয়ের ধারায় ছিল খুলনা।

টানা চার জয়ের পর রংপুরের বিপক্ষে জয়ের বৃত্ত ভাঙে খুলনার। ওই ম্যাচটিও হারতে হয়েছিল ব্যাটিং ব্যর্থতার কারণেই। আগে ব্যাটিং করে মাত্র ১২৫ রান সংগ্রহ করতে পারে খুলনা টাইটানস। পরের ম্যাচেই অবশ্য বরিশালের বিপক্ষে আবার জয়ে ফেরে দলটি। লিগ পর্বের প্রথম ম্যাচে রাজশাহীকে হারিয়ে শুভসূচনা করা খুলনা ফিরতি লড়াইয়ে অবশ্য হার মানে ড্যারেন স্যামিদের বিপক্ষে। রাজশাহীর ১৫৪ রান টপকাতে পারেনি খুলনা। ব্যাটসম্যানরা আবারও ব্যর্থ হলে খুলনা ১৪৫ রান করে হারে ম্যাচটি।

এই ধারা সচল থাকে লিগ পর্বে চিটাগং ভাইকিংসের বিপক্ষেও। এবার ১৩১ রানে থামে তাদের পথচলা, যা চলে কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্সের বিপক্ষেও। মাশরাফির দলের বিপক্ষে আগে ব্যাটিং করে ১৪১ রান সংগ্রহ করে খুলনা।

লিগ পর্বের শেষ ম্যাচের আগে খুলনার পয়েন্ট ছিল ১২। একই পয়েন্ট নিয়ে আরও দুটি দল থাকায় ঢাকার বিপক্ষে জিততেই হতো খুলনাকে। ওই ম্যাচে অবশ্য ব্যাটিংটা ভালো হওয়ার কারণে জিতেছে খুলনা। আর তাতেই পয়েন্ট টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে থেকে প্রথম কোয়ালিফাইয়ার খেলার সুযোগ হয় মাহমুদউল্লাহদের। কিন্তু শেষ দুটি ম্যাচে ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ফাইনাল থেকে ছিটকে গেল খুলনা।

সংবাদ সম্মেলনে মাহমুদউল্লাহর কন্ঠে আজও তাই আক্ষেপ হয়ে থাকবে খুলনার ব্যাটিং লাইনআপের ব্যর্থতার গল্পটাই!

/কেআর/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
তিন লাল কার্ডের ম্যাচ নিয়ে কে কী বললেন!
তিন লাল কার্ডের ম্যাচ নিয়ে কে কী বললেন!
প্রথম ধাপে ভোটের হার ৬০ শতাংশ, সর্বোচ্চ পশ্চিমবঙ্গে
লোকসভা নির্বাচনপ্রথম ধাপে ভোটের হার ৬০ শতাংশ, সর্বোচ্চ পশ্চিমবঙ্গে
ইসরায়েলি বিমান কীভাবে এল বাংলাদেশে, প্রশ্ন নুরের
ইসরায়েলি বিমান কীভাবে এল বাংলাদেশে, প্রশ্ন নুরের
মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি
মিয়ানমারের ২৮৫ জন সেনা ফেরত যাবে, ফিরবে ১৫০ জন বাংলাদেশি
সর্বাধিক পঠিত
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
ইরানের ওপর কোনও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়নি: ইরানি কর্মকর্তা   
ইরানের ওপর কোনও ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হয়নি: ইরানি কর্মকর্তা