X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

বিপিএল চ্যাম্পিয়ন ঢাকা ডায়নামাইটস

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
০৯ ডিসেম্বর ২০১৬, ২১:৩৭আপডেট : ০৯ ডিসেম্বর ২০১৬, ২৩:০১

শিরোপা হাতে ঢাকা ডায়নামাইটস রাজশাহী কিংসের বিপক্ষে জিতে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের চতুর্থ আসরের চ্যাম্পিয়ন হলো ঢাকা ডায়নামাইটস। শুক্রবার ফাইনালে ১৬০ রানের লক্ষ্য দিয়ে রাজশাহীকে ১০৩ রানে গুটিয়ে দেয় সাকিব আল হাসানের দল। কেসরিক উইলিয়ামস রিটায়ার্ড হার্ট হলে ৯ উইকেটে শেষ হয় রাজশাহীর ইনিংস।

তুখোড় টিমওয়ার্কে ৫৬ রানে রাজশাহী কিংসকে হারিয়ে বিপিএলের শিরোপা জিতেছে ঢাকা ডায়নামাইটস। শিরোপা জয়ের জন্য ১৬০ রানের লক্ষ্যে নেমে রাজশাহী কিংস ১৭.৪ ওভারে ১০৩ রানে থেমে যায়। নয়টি উইকেট হারায় তারা, কেসরিক উইলিয়ামস আহত হওয়ায় ব্যাট করতে নামেননি।   

ওপেনার নুরুল হাসান ও মমিনুল হক দুজনের কেউই মারমুখী ব্যাটসম্যান নন, তারা শুরু থেকেই খেলেছেন কিছুটা সতর্কতার সাথে। দলীয় ১৫ রানে আউট হন নুরুল (৫)। আবু জায়েদের বলে লং অফে তার ব্যাট থেকে আসা ক্যাচটি নেন আন্দ্রে রাসেল।  

দ্বিতীয় উইকেট জুটিতে মমিনুল-সাব্বির রহমানের মাথায় ছিল রান রেটের ব্যাপারটা। তাই তারা মাঝেমধ্যেই একটু ঝুঁকি নিয়ে চার মারার কৌশলে খেলে প্রয়োজনীয় রান রেটের সঙ্গে তাল মেলান। সাব্বির শুরুতে কিছুটা আড়ষ্ট থাকলেও পরে দাঁড়িয়ে যান, কিন্তু দুর্ভাগ্য তার ও রাজশাহীর। ২২ বলে দুটি চারে ২৬ রান করার পর নন স্ট্রাইকিং এন্ডে মেহেদি মারুফের করা থ্রোতে তিনি হন রানআউট। ১০ ওভার শেষে রাজশাহীর রান ছিল ৬৩, শেষ ১০ ওভারে তাদের দরকার ছিল ৯৭। কিন্তু তারা সে চ্যালেঞ্জে জয়ী হয়নি।

১১তম ওভারের তৃতীয় বলে সাকিব আল হাসান লেগ বিফোরের ফাঁদে ফেলেন মমিনুলকে। অফ মিডলে পড়া বল সুইপ করতে গিয়ে বলে ব্যাটে করতে পারেননি ৩০ বলে তিনটি চারে ২৭ রান করা মমিনুল, সাকিবের আবেদনে সাড়া দেন আম্পায়ার। 

কিউই অলরাউন্ডার জেমস ফ্র্যাংকলিনের (৫) বিদায় ছিল রাজশাহীর শিরোপা স্বপ্নে বিশাল এক আঘাত। সানজামুল ইসলামকে ডিপ মিডউইকেট দিয়ে মারতে গিয়ে তিনি ডোয়াইন ব্রাভের হাতে ধরা পড়েন। 

১৩.৫ ওভারে দলের ৮৭ রানে অধিনায়ক ড্যারেন স্যামির বিদায়ে নিশ্চিত হয়ে যায় ঢাকার শিরোপা। দুই বল আগে সাকিবকে ছ্ক্কা মেরেছিলেন স্যামি। এবার সাকিবকে সামনে এসে খেলতে গিয়ে হন বোল্ড। ৪ বলে ৬ রান করে বিপিএলের এবারের আসরের শেষ ইনিংসটি খেলেন ক্যারিবিয়ান অলরাউন্ডার, একরাশ হতাশা নিয়ে ধরেন সাঝঘরের পথ। প্রতিপক্ষ অধিনায়ক ও দলের জন্য বিপজ্জনক নামকে আউট করে উল্লাসে ফেটে পড়েন সাকিব। 

হেরে যাওয়া লড়াই বেশিক্ষণ চালাতে পারেননি সামিত প্যাটেল, ১৭ রানে ব্রাভোর হাতে ক্যাচ দিয়ে তিনি সানজামুলের দ্বিতীয় শিকারে পরিণত হন। মেহেদি হাসান মিরাজ ১, ফরহাদ রেজা ২ ও নাজমুল হোসেন ১ রানে আত্মসমর্পণ করেন। আফিফ হোসেন ছিলেন ৪ রানে অপরাজিত। জায়েদ, সাকিব ও সানজামুল দুটি করে উইকেট নেন।

এর আগে টসে জিতে বল করতে নেমে ঢাকাকে বারবার বিপদে ফেলার চেষ্টায় ছিল রাজশাহী। কিন্তু শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপের ঢাকা শেষ পর্যন্ত ৯ উইকেটে ১৫৯ রান করে।

খেলতে নেমে ভাগ্যদেবীর আশীর্বাদসিক্ত ইনিংস দিয়েই দলের পথচলার সূচনা করেন মেহেদী মারুফ। কেসরিক উইলিয়ামসের শর্ট পিচ বল স্টিয়ার করে স্লিপে দাঁড়ানো ড্যারেন স্যামির হাতে ধরা পড়া থেকে অল্পের জন্য বেঁচে যান তিনি। তখন তার রান ছিল ৫। এর পরের ওভারে ফরহাদ রেজার বল পুল করে তিনি বল আকাশে তুলে দিলেও তা পড়ে তিন ফিল্ডারের মাঝখানে। তবে দুইবার বেঁচে গিয়েও বেশিদূর এগোতে পারেননি মারুফ। মেহেদী হাসান মিরাজের করা দ্বিতীয় বলটিতে তেড়ে মারতে গিয়ে পয়েন্টে উইলিয়ামসের হাতে ধরা পড়েন মারুফ। ১০ বলে ৮ রান ছিল তার সংগ্রহ।

এরপর নাসির হোসেন বিদায় নেন টিনএজ স্পিনার আফিফ হোসেনের করা প্রথম ওভারের শেষ বলে। ক্রিজ ছেড়ে আগেই বেরিয়ে এসেছিলেন নাসির। আফিফ শর্ট বল দিয়েছিলেন। উইকেটরক্ষক নুরুল যখন উইকেট ভেঙে দেন, ৫ রান করা নাসির তখন দাঁড়ানো ক্রিজের কয়েক ফুট বাইরে।

এরপর মিরাজকে চমৎকার এক স্কয়ার ড্রাইভে চার মারা মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতও বিদায় নেন ৫ রানে। স্যামির করা প্রথম বলটি ছিল ইয়র্কার লেংথের, লাইন মিস করে লেগ স্টাম্পের ওপর লেগ বিফোর হন মোসাদ্দেক।

ওপেনার এভিন লুইস ৯ম ওভারে স্যামিকে দুটি চার মারার পর অতি আত্মবিশ্বাসী হয়ে ওঠেন। পরের ওভারে ফরহাদ রেজার লেগ স্টাম্পের ওপর পড়া বল শরীরের ভারসাম্য রাখতে না পারা সত্ত্বেও খেলে বসেন। বলটি ফাইন লেগে উইলিয়ামসের হাতে জমা পড়ে।  তাতেই শেষ হয় তার ৩১ বলে ৮টি চারে করা লুইসের ৪৫ রানের ইনিংস।

এরপরই ব্রাভো এসে জুটি বাঁধেন কুমার সাঙ্গকারার সঙ্গে। ১০ বলে ১৩ রান করে তিনি হয়ে উঠছিলেন রাজশাহীর হুমকি। তবে সাঙ্গাকারার সঙ্গে ভুল বোঝাবুঝিতে তিনি রানআউট হন। এই উইকেটের পতনের পর উইন্ডিজ অলরাউন্ডার রাসেলের বিগ হিটের সুবিধাও নিতে পারেনি ঢাকা। কারণ সামিত প্যাটেলের বল লং অফে ড্রাইভ করে তালুবন্দী হন রাসেল। যদিও সীমানার দঁড়ির সামনে বল ধরে তা  উপরে ছুড়ে মেরে মাঠের বাইরে চলে গিয়েছিলেন ক্যাচ ধরা ফরহাদ। ঝাঁপিয়ে পড়ে ফেরত এসে আবার বল নেন হাতের মুঠোয়। এমন দর্শনীয় ক্যাচে ৮ রানে সাজঘরের পথ ধরেন রাসেল।

দলের ব্যাটিং গভীরতা বোঝাতে আট নম্বরে ব্যাট করতে নামেন অধিনায়ক সাকিব আল হাসান। কিন্তু ছয় বলে ১২ রান করে ফরহাদ রেজার ইয়র্কারে হন বোল্ড।

এক প্রান্তে উইকেটের পতন নিয়মিত ঘটনা হলেও অন্যপ্রান্তে সাঙ্গাকারা ছিলেন অবিচল। দুই বল বাকি থাকতে তিনি আউট হন। ৩৩ বলে ৩৬ রান করেন শ্রীলঙ্কান ব্যাটসম্যান,  যেখানে ছিল দুটি চার ও একটি ছক্কা। তার এই ইনিংসেই লড়াই করার মতো সংগ্রহ পায় ঢাকা।

/আরএম/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বর্ষার আগেই চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু, মোকাবিলায় যা করছে ডিএনসিসি
বর্ষার আগেই চোখ রাঙাচ্ছে ডেঙ্গু, মোকাবিলায় যা করছে ডিএনসিসি
গোপনে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
গোপনে ইউক্রেনকে দূরপাল্লার ক্ষেপণাস্ত্র দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র
টিপু-প্রীতি হত্যা মামলার অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ ২৯ এপ্রিল
টিপু-প্রীতি হত্যা মামলার অভিযোগ গঠন বিষয়ে আদেশ ২৯ এপ্রিল
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
২৪ ঘণ্টা পর আবার কমলো সোনার দাম
আপিল বিভাগে নিয়োগ পেলেন তিন বিচারপতি
আপিল বিভাগে নিয়োগ পেলেন তিন বিচারপতি