নিউজিল্যান্ড সফরে বাংলাদেশের প্রাপ্তির খাতা শূন্য। নাজমুল হাসান মনে করেন দলের সিনিয়র খেলোয়াড়রা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হওয়াতেই সব ম্যাচ হারতে হয়েছে বাংলাদেশকে।
নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হতাশাজনক পারফরম্যান্সের পর সিনিয়র ক্রিকেটারদের দুষলেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। তিন ফরম্যাটের ক্রিকেটে ৮-০ ব্যবধান হেরে খালি হাতে বুধবার রাতে দেশে ফিরবেন তামিম-সাকিবরা।
মঙ্গলবার বেক্সিমকো কার্যালয়ে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন বিসিবির সভাপতি নাজমুল। সেখানে তিনি কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন সিনিয়র খেলোয়াড়দের, ‘ওয়ানডে ও টি-টোয়েন্টি মিলিয়ে কমপক্ষে চারটি ম্যাচ আমরা জেতার মতো পরিস্থিতিতে ছিলাম। কিন্তু ওয়ানডেতে মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতা এবং টি-টোয়েন্টিতে টপ অর্ডার ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতার কারণে আমরা একটি ম্যাচও জিততে পারিনি।’
‘সবকিছুই হয়েছে মূলত দলের সিনিয়র খেরোয়াড়রা দায়িত্ব নিতে না পারায়’-যোগ করেন পাপন। টেস্ট সিরিজের প্রসঙ্গে নাজমুল বলেছেন, ‘আমাদের ব্যাটসম্যানদের শটস সিলেকশনে অনেক দুর্বলতা রয়েছে। বিশেষকরে সিনিয়র খেলোয়াড়দের। প্রথম ৪-৫ জন যারা খেলে, তারা সাধারণত টি-টোয়েন্টি ও ওয়ানডেতে যে স্টাইলে ব্যাটিং করে সেটা টেস্টেও বজায় রাখতে চায়।’
ওয়েলিংটন টেস্টের উদাহরণ দিতে গিয়ে নাজমুল হাসান বলেছেন, ‘প্রথম টেস্টের কথা যদি ধরেন, প্রথম ইনিংসে দুই দল মিলে এক হাজারের বেশি রান করেছে। নিশ্চিতভাবেই বলা চলে এই ম্যাচটি ড্র। অথচ প্রথম ইনিংসে ৫৯৫ রান করা দল দ্বিতীয় ইনিংসে ব্যর্থ হওয়াতে বাংলাদেশ ম্যাচ হেরে গেল।’ এখানেই থামলেন না বোর্ড সভাপতি, ‘আমাদের উচিত ছিল ক্রিজে থেকে সময় নষ্ট করা। কিন্তু যেভাবে খেলা হয়েছে, বিশেষকরে আমাদের সিনিয়র খেলোয়াড়রা যেভাবে ব্যাটিং করেছে, দেখে মনে হয়েছে তারা জিততে কিংবা ড্র করতে খেলছে না। সিনিয়র কোনও খেলোয়াড়ের মাথাতেই জয় কিংবা ড্রয়ের চিন্তা ছিল না।’
টেস্টে ভালো করতে হলে খেলার ধরন পাল্টালে হবে বলে মনে করছেন বিসিবির এই প্রধান, ‘অনেকেই হয়তো এভাবে খেলেই রান করছেন। কিন্তু টেস্টের সঙ্গে এমন ধরন যায় না। খেলোয়াড়দের দলের জন্য যখন যেটা দরকার সেটা করতে হবে। পরিকল্পনার বাইরে গিয়ে কিছু করাটা অবশ্যই অন্যায়। আমাদের বেশিরভাগ সিনিয়র খেলোয়াড়দের মধ্যেই এই সমস্যা আছে। ওরা যেভাবে খেলেছে এটা অত্যন্ত দুঃখজনক।’
সব ম্যাচ হারের পেছনে পাপন দায়ী মনে করছেন ব্যাটসম্যানদের এবং তাদের দায়িত্বজ্ঞানহীন কর্মকাণ্ডকে। পাপন দলের সিনিয়রদের কাছ থেকে এই ধরনের ব্যাটিং কোনও ভাবেই আশা করনি বলে জানিয়েছেন, ‘পরিকল্পনার কোনও ঘাটতি আমি দেখি না, থাকার কোনও সুযোগও নেই। এটা খেলোয়াড়দের সমস্যা। তাদের মানসিকতায় পরিবর্তন আনা জরুরি। আপনি যদি দেখেন আমাদের সিনিয়র খেলোয়াড়রা কি ধরনের শট খেলেছে-অবিশ্বাস্য লেগেছে। এখানে পরিকল্পনার ঘাটতি কোনও ভাবেই নেই। এটা পুরোটাই খেলোয়াড়দের মানসিকতার ব্যাপার।’
ক্রাইস্টচার্চ টেস্টের ব্যাটিং নিয়ে পাপন আরও বেশি হতাশ। বিশেষকরে তামিমের দায়িত্বহীন ব্যাটিং বেশি পীড়া দিচ্ছে তাকে, ‘দলের গুরুত্বপূর্ণ তিন খেলোয়াড় যখন ইনজুরিতে, তখন যদি দলের অধিনায়ক এভাবে মারতে গিয়ে আউট হয়, এটা ভীষণ হতাশাজনক। অথচ তার ওপরই সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব। তামিম যে শটগুলোতে আউট হচ্ছে, তারপরও ওই শটগুলোই সে খেলছে বারবার। খেলোয়াড়দের এই বিষয়গুলো নিয়ে কাজ করতে হবে।’
এ ছাড়া ফিল্ডিং নিয়েও বিরক্ত পাপন। ম্যাচ হারের দ্বিতীয় কারণ হিসেবে তিনি ক্যাচ মিসকে দায়ী করেছেন, ‘ক্যাচ ড্রপ তো নিয়মিত ঘটনাই ছিল। সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এতো সহজ সহজ ক্যাচ হাত থেকে ফসকে যাচ্ছে-এটা খুবই দূর্ভাগ্যজনক।’
/আরআই/কেআর/