X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১
চ্যাম্পিয়নস ট্রফির এপিঠ-ওপিঠ

‘ডার্ক হর্স’ নিউজিল্যান্ড

খালিদ রাজ
২৪ মে ২০১৭, ২২:২২আপডেট : ২৪ মে ২০১৭, ২২:৩৮

দরজায় কড়া নাড়ছে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি। ১ জুন থেকে ইংল্যান্ড ও ওয়েলসে শুরু হচ্ছে ওয়ানডে বিশ্বকাপের পর ক্রিকেটের সবচেয়ে বড় টুর্নামেন্ট। ৮ দেশের এই উত্তেজনাকর লড়াইয়ের আগে কোন দলের কী অবস্থা, শিরোপা দৌড়ে এগিয়ে থাকছে কে, কেনই বা ফেভারিট ধরা হচ্ছে তাদের- এই নিয়েই আমাদের বিশেষ আয়োজন। আজ থাকছে নিউজিল্যান্ডকে নিয়ে-

নিউজিল্যান্ড নিউজিল্যান্ড মানেই রাগবির দেশ। তাসমান সাগরের ওপারের দেশটির মানুষের রক্ত-শিরায় মিশে আছে খেলাটি। মাত্র ৪৮ লাখ মানুষের বসতিতে ছবির মতো সুন্দর দেশটি রাগবি থেকে পেয়েছে সবচেয়ে বেশি সাফল্য। রাগবি বিশ্বকাপের আট আসরের তিনটি শিরোপাই জিতেছে ‘অল ব্ল্যাকস’। রাগবিময় সেই দেশেই ২০১৫ সালে বেজে উঠেছিল ক্রিকেটের মধুরতম সুর। ব্যাট-বলের ঝঙ্কারে গোটা নিউজিল্যান্ডকে এক সুতোয় বেঁধেছিল ব্রেন্ডন ম্যাককালামরা দুই বছর আগের বিশ্বকাপে।

‘মৃত্যুর আগে নিউজল্যান্ডকে বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন হিসেবে দেখতে চাই’-ক্যান্সারে আক্রান্ত মার্টিন ক্রো’র চাওয়া ছিল ম্যাককালামদের কাছে। তীর্থের খুব কাছে গিয়েও পূরণ হয়নি ক্রো’র চাওয়া। তা নিয়ে কোনও আক্ষেপও ছিল না গত বছর ওপারের বাসিন্দা হওয়া নিউজিল্যান্ড কিংবদন্তির। বরং আশার আলো দেখেছিলেন কিউইদের প্রথমবার বিশ্বকাপ ফাইনালে খেলার সাফল্যে। বলেছিলেন, ‘আজ হয়নি, তাতে কী; একদিন হবেই।’ ক্রো’র এই বিশ্বাসটা সম্ভবত সব কিউইয়ের মনে বুনে দিয়েছে ২২ গজের যোদ্ধারা। ক্রিকেট বিশ্বের সমীহ যেন ২০১৫ বিশ্বকাপের পর আরও বেশি করে পাচ্ছে তারা।

তবু কেন জানি ফেভারিটের খাতায় লেখা যায় না নিউজিল্যান্ডের নাম। হ্যাঁ, অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছিল তারা দাপটের সঙ্গে, তারুণ্য ও অভিজ্ঞতার মিশেলে দলটাও অসাধারণ। এরপরও ‘সেমিফাইনাল পর্যন্ত দৌড়’- এই অপবাদ থেকে এখনও বেরোতে পারেনি কিউইরা। তাই চ্যাম্পিয়নস ট্রফির লড়াইয়ের আগেও শিরোপা জেতার দৌড়ে খুব বেশি এগিয়ে রাখছেন না ক্রিকেট বিশ্লেষকরা। যদিও ঘরের মাঠের বিশ্বকাপে ফাইনাল খেলা নিউজিল্যান্ড যে হিসাবের সব খাতা উল্টিয়ে দিতে পারে, সেই বাজি ধরার লোকের সংখ্যাও কিন্তু কম নয়। বরাবরের মতো ইংল্যান্ড ও ওয়েলসের টুর্নামেন্টেও তাই কিউইরা নামছে ‘ডার্ক হর্স’ হিসেবে।

যাদের বিপক্ষে মেলবোর্নের ফাইনালে হেরেছিল নিউজিল্যান্ড, সেই অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে চ্যাম্পিয়নস ট্রফি মিশন শুরু করবে ২০০০ সালের চ্যাম্পিয়নরা। ‘এ’ গ্রুপে তাদের পেরোতে হবে স্বাগতিক ইংল্যান্ড ও বাংলাদেশের বাধা।

কেন্দ্রবিন্দু : চ্যাম্পিয়নস ট্রফির প্রস্তুতির কথা এলে সবচেয়ে ভালো জায়গায় আছে নিউজিল্যান্ড। আয়ারল্যান্ডে ত্রিদেশীয় সিরিজে বাংলাদেশের বিপক্ষে শেষ ম্যাচের আগে জিতেছে দুটোই। এই বাংলাদেশের বিপক্ষেই আবার গ্রুপ পর্বের ম্যাচে মুখোমুখি হবে তারা। ‘আসল’ লড়াইয়ের আগে একটা দলের বিপক্ষে দুইবার খেলার অভিজ্ঞতা নিঃসন্দেহে কাজে দেবে তাদের।

এই সিরিজের আগেও ওয়ানডেতে দারুণ সময় কাটিয়েছে তারা। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে ঘরের মাঠের ওয়ানডে সিরিজ ৩-২ ব্যবধানে হারলেও উইলিয়ামসনদের পারফরম্যান্স ছিল দুর্দান্ত। তার আগের দুটো সিরিজে তো হোয়াইওয়াশ করেছিল অস্ট্রেলিয়া (২-০) ও বাংলাদেশকে (৩-০)। ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সেও উজ্জ্বল কিউইরা। ব্যাটে রীতিমত বসন্ত চলছে রস টেলরের। আয়ারল্যান্ডে তিন ম্যাচে ফিফটির দেখা পেয়েছেন তিনি। তার সঙ্গে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির স্কোয়াডে রয়েছেন উইলিয়ামসন, মার্টিন গাপটিল, টম ল্যাথাম, টিম সাউদির মতো অভিজ্ঞ খেলোয়াড়রা। আছেন ট্রেন্ট বোল্ট, কোরে অ্যান্ডারসন, জেমস নিকামের মতো তরুণ ক্রিকেটার।

শক্তি : সাউদি-বোল্টের পেস জুটি বিশ্বের যে কোনও দলের ব্যাটম্যানদের কপালে ফেলবে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। ২০১৫ বিশ্বকাপে তাদের পেসের সামনে খেই হারিয়েছেন বিশ্বসেরা সব ব্যাটসম্যান। চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবেন তারা। তাদের সঙ্গে বোলিংয়ে আলো ছড়াতে পারেন অ্যাডাম মিলনে, জিতেন প্যাটেল, মিচেল স্যান্টনার। ব্যাটের পাশাপাশি বল হাতেও দলের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠতে পারেন অ্যান্ডারসন ও নিশাম। সব মিলিয়ে বোলিংটাই বেশি শক্তিশালী চ্যাম্পিয়নস ট্রফির নিউজিল্যান্ডের।

দুর্বলতা : ব্যাটিংয়ে শুরুটা মোটেও ভালো হচ্ছে না নিউজিল্যান্ডের। ব্রেন্ডন ম্যাককালাম অবসরে যাওয়ার পর ওপেনিংটা মেলাতে পারছে না কিউইরা। ল্যাথাম ত্রিদেশীয় সিরিজে রান পাওয়ায় কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরেছে নিউজিল্যান্ড ক্যাম্পে। অ্যান্ডারসনও নেই তার চেনা ছন্দে। মিডল অর্ডারে এক টেলর ছাড়া কেউই তেমন ধারাবাহিক নন। উপরের ব্যাটসম্যানরা ব্যর্থ হলে বড় সমস্যার সামনে পড়তে হতে পারে নিউজিল্যান্ডকে।

ট্রেন্ট বোল্ট নজরে থাকবেন : বোল্টের ওপর আলোটা থাকবে সবচেয়ে বেশি। বড় মঞ্চে তিনি কী করতে পারেন, তার প্রমাণ দিয়েছেন তিনি ২০১৫ সালের বিশ্বকাপে। ২২ উইকেট নিয়ে যৌথভাবে হয়েছিলেন টুর্নামেন্টের সর্বোচ্চ উইকেট শিকারি। তার সঙ্গে অধিনায়ক উইলিয়ামসন তো আছেনই। ম্যাককালামের বিদায়ের পর অধিনায়কের দায়িত্ব নিয়ে দলকে গুছিয়ে নিয়েছেন দারুণভাবে। নেতৃত্ব পাওয়ার পর ব্যাট হাতে যেন হয়েছেন আরও ধারালো। ফর্মের তুঙ্গে থাকা রস টেলরের দিকেও রাখতে হবে বাড়তি নজর। রানে আছেন দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজ থেকেই, ত্রিদেশীয় সিরিজেও ধরে রেখেছেন যা। চার ম্যাচের তিনটিতেই পেয়েছেন হাফসেঞ্চুরির দেখা।

স্কোয়াড : কেন উইলিয়ামসন (অধিনায়ক), কোরে অ্যান্ডারসন, ট্রেন্ট বোল্ট, নাইল ব্রুম, কলিন ডি গ্র্যান্ডহোম, মার্টিন গাপটিল, টম ল্যাথাম, মিচেল ম্যাকক্লেনাগন, অ্যাডাম মিলনে, জেমি নিশাম, জিতেন প্যাটেল, লুক রঞ্চি, মিচেল স্যান্টনার, টিম সাউদি, রস টেলর।

সেরা প্রাপ্তি : জয়ী-২০০০ (আইসিসি নকআউট)।

প্রতিপক্ষ : অস্ট্রেলিয়া (২ জুন), ইংল্যান্ড (৬ জুন), বাংলাদেশ (৯ জুন)।

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে করারোপ: আইনের বিশ্লেষণ
বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে করারোপ: আইনের বিশ্লেষণ
ইউক্রেনের মার্কিন সামরিক সহায়তা আইনে স্বাক্ষর বাইডেনের
ইউক্রেনের মার্কিন সামরিক সহায়তা আইনে স্বাক্ষর বাইডেনের
নামাজ শেষে মোনাজাতে বৃষ্টির জন্য মুসল্লিদের অঝোরে কান্না
নামাজ শেষে মোনাজাতে বৃষ্টির জন্য মুসল্লিদের অঝোরে কান্না
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগে বৃষ্টির আভাস
আজকের আবহাওয়া: দুই বিভাগে বৃষ্টির আভাস
সর্বাধিক পঠিত
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
সিয়াম-মেহজাবীনের পাল্টাপাল্টি পোস্টের নেপথ্যে…
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
‘মারামারি’র ঘটনায় মিশা-ডিপজলের দুঃখপ্রকাশ
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
মিয়াবতী থেকে পিছু হটলো মিয়ানমারের বিদ্রোহীরা?
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা
‘বয়কট’ করা তরমুজের কেজি ফের ৬০ থেকে ১২০ টাকা