সাড়ে তিন বছরের অপেক্ষা শেষে শুক্রবার লাল বল হাতে তোলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। জাতীয় ক্রিকেট লিগে টস জিতে খুলনা বোলিং নিলে মাশরাফির প্রত্যাবর্তনটা হয় আরও আকর্ষণীয়। প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে ফেরার দিনের শুরুতেই যে বল হাতে নেওয়ার সুযোগ হয় তার। প্রথম ইনিংসে ভালো বোলিং করলেও উইকেট পেয়েছিলেন মাত্র একটি। দ্বিতীয় ইনিংসের জন্য হয়তো জমা রেখেছিলেন সব। অতঃপর দেখালেন মাশরাফি তার জাদু। রংপুরের বিপক্ষে খুলনার ড্র হওয়া ম্যাচের দ্বিতীয় ইনিংসে মাত্র ৪ ওভারে নিয়েছেন ৩ উইকেট।
সোমবার শেষ দিনের শেষ সেশনে রংপুর হারায় ৪ উইকেট, যার তিনটিই বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়কের। নিজের করা ১০ বলের মধ্যে তুলে নিয়েছেন নাসির হোসেন, মাহমুদুল হাসান ও আরিফুল হকের গুরুত্বপূর্ণ উইকেট। মাত্র ৪ ওভার বোলিংয়ে ১ মেডেন সহ ১২ রান খরচায় পেয়েছেন ৩ উইকেট। এত বছর পর খেলতে নেমে বিস্ময়কর বোলিংই উপহার দিয়েছেন মাশরাফি।
দ্বিতীয় ইনিংসে মেডেন ওভারে শুরু হয় মাশরাফির বোলিং। দ্বিতীয় ওভারে ৩ বলের মধ্যে তুলে নেন ২ উইকেট। তৃতীয় বলে নাসিরকে ফেরান উইকেটরক্ষক নুরুল হাসানের ক্যাচ বানিয়ে। পঞ্চম বলে জিয়াউর রহমানের হাতে ক্যাচ তুলে দেন মাহমুদুল হাসান। তৃতীয় ওভারের শুরুতে দুটি চার খেলেও শেষ বলে আরিফুলকে এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে সাজঘরের পথ দেখান। বৃষ্টিতে খেলা বন্ধ হওয়ার আগে আরও একটি ওভারই বোলিংয়ের সুযোগ পেয়েছিলেন মাশরাফি। এই ইনিংসে আরও বোলিংয়ের সুযোগ আসলে উইকেট সংখ্যাটা আরও বাড়তেই পারতো তার।
এর আগে শুক্রবার প্রথম ইনিংসে বোলিং করা মাশরাফি তিন স্পেলে করেছিলেন ১৩ ওভার। ৫৬ রান দিয়ে কোনও উইকেটের দেখা পাননি তিনি। দ্বিতীয় দিনে নিজের দ্বিতীয় ওভারে চার বছর পর প্রথম শ্রেণির উইকেটের দেখা পেয়েছিলেন বাংলাদেশর ওয়ানডে অধিনায়ক। রংপুরের শেষ ব্যাটসম্যান সোহরাওয়ার্দী শুভ ছিলেন প্রথম ইনিংসে মাশরাফির একমাত্র শিকার। সব মিলিয়ে প্রথম ইনিংসে মাশরাফির ১৪.৩ ওভার বোলিং করে ৬১ রান খরচায় নিয়েছেন একটি উইকেট।
২০১৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে সর্বশেষ মাশরাফি খেলেছেন লম্বা ফরম্যাটের ক্রিকেট। এরপর কয়েকবার খেলার ইচ্ছা প্রকাশ করলেও নানা কারণে খেলা হয়নি। জাতীয় লিগের প্রথম দুটি রাউন্ড খেললেও মাশরাফির আপাতত টেস্ট ক্রিকেট নিয়ে ভাবনা নেই। মূলত চ্যাম্পিয়নস ট্রফির পর ফিটনেস ট্রেনিং, অনুশীলন করলেও ম্যাচ খেলার সুযোগ পাননি তিনি। মাঠে পারফরম করার তাড়না থেকেই মাশরাফি বেছে নেন জাতীয় ক্রিকেট লিগের দুটি রাউন্ডকে।
ইনজুরির শঙ্কায় প্রথম শ্রেণির ক্রিকেট থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখেছেন মাশরাফি। জাতীয় দলের হয়ে সবশেষ টেস্ট খেলেছেন ২০০৯ সালে। ওই টেস্টের তৃতীয় দিনে ইনজুরিতে পড়ার পর ফেরা হয়নি তার।