X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৫ বৈশাখ ১৪৩১

টি-টোয়েন্টিতেও হোয়াইটওয়াশ বাংলাদেশ

বাংলা ট্রিবিউন রিপোর্ট
২৯ অক্টোবর ২০১৭, ২১:৫৩আপডেট : ২৯ অক্টোবর ২০১৭, ২২:০৪

বাংলাদেশের ব্যাটিং বিপর্যয়ে কেবল উজ্জ্বল ছিলেন সৌম্য আবারও অসহায় আত্মসমর্পণ। টেস্ট ও ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টি সিরিজেও হোয়াইটওয়াশ। দক্ষিণ আফ্রিকায় কোনও প্রাপ্তি ছাড়াই দেশে ফিরতে হচ্ছে গত কয়েক বছরের ক্রিকেট বিস্ময় বাংলাদেশকে। রবিবার পচেফস্ট্রুমে দ্বিতীয় ও শেষ টি-টোয়েন্টিতে সাকিব আল হাসানরা হেরেছেন ৮৩ রানে। ডেভিড মিলারের রেকর্ড সেঞ্চুরিতে ২২৪ রান করা প্রোটিয়ারা সফরকারীদের ১৮.৩ ওভারে ১৪১ রানে অলআউট করেছে।

টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে সাকিব দ্রুত দক্ষিণ আফ্রিকার দুটি উইকেট তুলে নেন। বিপজ্জনক ব্যাটসম্যান এবি ডি ভিলিয়ার্সও জ্বলে ওঠার আগে নিভে যান। কিন্তু হাশিম আমলার দারুণ ইনিংসের পর মিলারের দ্রুততম সেঞ্চুরিতে বাংলাদেশকে বিশাল লক্ষ্য দেয় স্বাগতিকরা। যেই লক্ষ্যে ছুটতে গিয়ে ক্ষণে ক্ষণে উইকেট হারিয়েছে সফরকারীরা।

অথচ প্রথম ওভারে ১৭ রান তুলে দারুণ শুরুর ইঙ্গিত দেন সৌম্য সরকার ও ইমরুল কায়েসের জুটি। ওই ওভারে সৌম্য করেন ১১ রান। তবে দ্বিতীয় ওভারের প্রথম বলে জীবন পান এই ওপেনার। কিন্তু সেই ওভার থেকে শুরু হয় বাংলাদেশের ব্যাটিং বিপর্যয়, প্রথম উইকেট ইমরুলের। মাত্র ৬ রানে রানআউট হন এই ওপেনার।

এক ওভার বিরতি দিয়ে সফরকারী অধিনায়ক সাকিবকে (২) বোল্ড করেন প্রোটিয়া অধিনায়ক জেপি ডুমিনি। পরের দুই ওভারে মুশফিকুর রহিম (২) ও সাব্বির রহমান (৫) ফেরেন সাজঘরে। ৩৭ রানে ৪ উইকেটের ধাক্কা কাটিয়ে ওঠা বাংলাদেশের আর সম্ভব হয়নি।

ডি ভিলিয়ার্সকে ফেরালেন সাইফ মাহমুদউল্লাহর সঙ্গে ইনিংসের সর্বোচ্চ ৩৫ রান যোগ করে আউট হন সৌম্য। প্রথম ম্যাচের মতো দ্বিতীয় ম্যাচেও হাফসেঞ্চুরির আক্ষেপে পোড়েন এই ওপেনার। তাকে থামান অ্যারন ফাঙ্গিসো। অবশ্য এবারও তার ২৭ বলে করা ৪৪ রানই সর্বোচ্চ ব্যক্তিগত। লিটন দাস মাত্র ৯ রানে আউট হন। দ্বিতীয় সেরা ২৪ রানে মাহমুদউল্লাহ হন ফাঙ্গিসোর দ্বিতীয় শিকার। শেষ ৩ উইকেট বাংলাদেশ হারায় ১১ রানের ব্যবধানে। মেহেদী হাসান মিরাজ (১৩), তাসকিন আহমেদ (৪) ও মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন (২৩) ১৮ ও ১৯তম ওভারে আউট হন। ডুমিনি ও ফাঙ্গিসো সবচেয়ে বেশি দুটি করে উইকেট পান।

এর আগে টস জিতে বাংলাদেশ ফিল্ডিং নিলে সাকিব তার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ওভারে ২ উইকেট নিয়ে ভালো শুরুর ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। এবি ডি ভিলিয়ার্সও বেশিদূর যেতে পারেননি। দক্ষিণ আফ্রিকাকে কম স্কোরে আটকে দেওয়ার আশা জাগায় বাংলাদেশ। কিন্তু আমলার দারুণ ইনিংসের পর মিলারের দ্রুততম সেঞ্চুরিতে ৪ উইকেটে ২২৪ রানের শক্ত স্কোর করে প্রোটিয়ারা।

দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশের সফর শেষ হচ্ছে দ্বিতীয় টি-টোয়েন্টি দিয়ে। টস জিতে যেখানে প্রোটিয়াদের ব্যাটিংয়ে পাঠায় বাংলাদেশ। প্রথম ওভারে বল হাতে নেন সাকিব। পরে বল হাতে নেন তাসকিন আহমেদ। প্রথম দুই ওভারেই ২৩ রান তোলে প্রোটিয়া। কিন্তু দলের তৃতীয় ওভারেই সাকিবের বল পায়ে লেগে স্টাম্প ভেঙে দেয় মাংগালিসা মোসেহলের (৫)। বাঁহাতি স্পিনার তার পরের ওভারে স্বাগতিক অধিনায়ক জেপি ডুমিনিকেও (৪) বোল্ড করেন।

দ্রুত ২ উইকেট নেন সাকিব ডি ভিলিয়ার্স ১টি করে চার ও ছয় মেরে নিজেকে মেলে ধরার আগেই আউট হন। আমলার সঙ্গে তার জুটিটি ছিল ৪১ রান। ডি ভিলিয়ার্সকে ২০ রানে সাইফ ক্যাচ বানান ইমরুল কায়েসের। ১০ ওভারে ৩ উইকেটে ৭৮ রান দক্ষিণ আফ্রিকার স্কোরবোর্ডে। বড় কোনও লক্ষ্য না পাওয়ার স্বপ্ন দেখছিল বাংলাদেশ। কিন্তু ১০ম ওভারে প্রথম জীবন পাওয়া মিলার সব আশা-আকাঙ্ক্ষা জলে ভাসালেন। ডি ভিলিয়ার্স ফেরার পরের ওভারেই রুবেল হোসেন পেতে পারতেন মিলারের উইকেট। কিন্তু ডানদিকে ঝাপিয়ে পড়লেও বল গ্লাভসবন্দি করতে পারেননি উইকেটরক্ষক মুশফিকুর রহিম। পরে আরও দুইবার জীবন পান মিলার। অল্পের জন্য স্টাম্পিং হননি তিনি। এছাড়া ফিল্ডিংয়ে তিন ফিল্ডারের সিদ্ধান্তহীনতায় ক্যাচ হননি এই ব্যাটসম্যান। শেষ পর্যন্ত তার ব্যাটেই বিশাল স্কোর করে প্রোটিয়ারা।

আমলা-মিলারের জুটিতে আসে ৭৯ রান। ৩২ বলে হাফসেঞ্চুরি করে সেঞ্চুরির আভাস দিচ্ছিলেন আমলা। কিন্তু এই ওপেনার ৫১ বলে ৮৫ রান করে সাইফের বলে সৌম্য সরকারকে ক্যাচ দেন।

ডেভিড মিলারের সেঞ্চুরি উদযাপন তবে সাইফের এই অর্জন ম্লান হয়ে যায় তার চতুর্থ ওভারে। ১৯তম ওভারে তাকে টানা ৫টি ছয় মারেন মিলার। ওই ওভারের শেষ বলে বাংলাদেশি পেসার দেন ১ রান। মাত্র ৩৫ বলে সেঞ্চুরি করেন মিলার, ভাঙেন টি-টোয়েন্টির দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড। ২০১২ সালে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে হ্যামিলটনে ৪৫ বলে করা দক্ষিণ আফ্রিকান ব্যাটসম্যান রিচার্ড লেভির সেঞ্চুরিই ছিল এতদিন দ্রুততম। এবার সেই রেকর্ড গড়লেন আরেক প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান। ৩৬ বলে ৭ চার ও ৯ ছয়ে ১০১ রানে অপরাজিত ছিলেন মিলার।  

দুর্দান্ত সেঞ্চুরির পথে মিলার এক মাসেরও বেশি সময় ধরে দক্ষিণ আফ্রিকায় বাংলাদেশ। প্রস্তুতি ম্যাচসহ নবম ম্যাচে খেলছে তারা। কিন্তু একটিও জয়ের স্বাদ পায়নি। একপেশে লড়াইয়ে দুই টেস্ট ও তিন ওয়ানডেতে হেরে গেছে তারা। শুধু প্রথম টি-টোয়েন্টিতে যা একটু লড়াই দেখা গেছে বাংলাদেশের। কিন্তু হেরে যায় ২০ রানে। আর শেষ ম্যাচে হেরে টেস্ট ও ওয়ানডের পর টি-টোয়েন্টিতেও হোয়াইটওয়াশ হলো বাংলাদেশ।

/এফএইচএম/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
শিশুকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে ৪ কিশোর সংশোধনাগারে
শিশুকে পালাক্রমে ধর্ষণের অভিযোগে ৪ কিশোর সংশোধনাগারে
পাঞ্জাবের আশুতোষের ঝড়ও যথেষ্ট হলো না, মুম্বাইয়ের তৃতীয় জয়
পাঞ্জাবের আশুতোষের ঝড়ও যথেষ্ট হলো না, মুম্বাইয়ের তৃতীয় জয়
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
কানের সমান্তরাল বিভাগে ঢাকার দুই নির্মাতার স্বল্পদৈর্ঘ্য
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
এআই প্রযুক্তিতে প্রথম বাংলা গানের অ্যালবাম
সর্বাধিক পঠিত
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
সয়াবিন তেলের দাম পুনর্নির্ধারণ করলো সরকার
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ফিলিস্তিনের পূর্ণ সদস্যপদ নিয়ে জাতিসংঘে ভোট
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
ডিএমপির ৬ কর্মকর্তার বদলি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
পিএসসির সদস্য ড. প্রদীপ কুমারকে শপথ করালেন প্রধান বিচারপতি
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন
পরীমনির বিরুদ্ধে ‘অভিযোগ সত্য’, গ্রেফতারি পরোয়ানা জারির আবেদন