ঢাকায় দীর্ঘ ৩২ বছর পর অনুষ্ঠিত হয়ে গেল এশিয়া কাপ হকি। ১১ অক্টোবর শুরু হওয়া টুর্নামেন্ট শেষ হয়েছে ২২ অক্টোবর। যেখানে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে ভারত আর রানার্সআপ মালয়েশিয়া। পুরো এশিয়া কাপটাই হয়েছে বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের আয়োজনে। অথচ টুর্নামেন্টে আর্থিক অনিয়ম হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন ফেডারেশনের একাংশের কর্মকর্তারা!
সেই অনুসারে নিয়মের বাইরে গিয়ে অধিক অর্থ ব্যয় করার দায়ে ফেডারেশন পাঁচটি সাব কমিটির কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে। কমিটি গুলো হল-মিডিয়া, ট্রান্সপোর্ট, গ্রাউন্ডস অ্যান্ড ফেসিলিটিজ, আইন-শৃঙ্খলা ও লিয়াজোঁ।
পৃষ্ঠপোষকদের কাছ থেকে অর্জিত অর্থ দিয়েই অংশগ্রহণকারী দলগুলোর থাকা-খাওয়াসহ অন্যান্য ব্যয় মেটানো হয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয় দলের অনুশীলন ব্যয়সহ পুরো আয়োজনে ব্যয় হয়েছে প্রায় ২ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা। এই অর্থ ব্যয় হয়েছে ফেডারেশনের করে দেওয়া বিভিন্ন সাব-কমিটির মাধ্যমে। আর এই অর্থ ব্যয় নিয়েই ফেডারেশনের মধ্যে নানান অভিযোগ উঠেছে।
এই কমিটিগুলোর চেয়ারম্যান ও সম্পাদককে গত ১১ নভেম্বর চিঠি দিয়ে অধিক অর্থ ব্যয়ের কারণ ব্যাখ্যা করতে বলা হয়েছে। ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাদেক স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে- ‘বাজেট কমিটির দেওয়া নিয়মের বাইরে অধিক অর্থ ব্যয় কীভাবে করা হয়েছে, তার ব্যাখ্যা দিতে হবে। বিল-ভাউচার যা দেওয়া হয়েছে, সেখানে ত্রুটি-বিচ্যুতি দেখা গেছে।’
বৃহস্পতিবার সিঙ্গাপুর থেকে ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আব্দুস সাদেক বিষয়টি নিয়ে বলেছেন, ‘আসলে আমরা কোনও কারণ দর্শানোর নোটিশ দেইনি। কিছু কিছু বিষয়ে আর্থিক অসঙ্গতি আছে। সেই সব বিষয়ে সাব-কমিটির কাছে ব্যাখ্যা জানতে চেয়েছি। আসলে ফেডারেশনে স্বচ্ছতা আনার জন্যই এমন পদক্ষেপ।’
বড় অভিযোগ ট্রান্সপোর্ট কমিটির বিরুদ্ধে। এছাড়া টুর্নামন্টে কমিটিও দায় এড়াতে পারে না। যদিও টুর্নামেন্ট কমিটির সম্পাদক মামুনুর রশীদকে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ধরেননি। ট্রান্সপোর্ট কমিটির চেয়ারম্যান মো. ইউসুফ। চট্টগ্রামের এই সংগঠক আত্মপক্ষ সমর্থন করে বাংলা ট্রিবিউনকে বৃহস্পতিবার বলেছেন, ‘আমি এই বিষয়ে কিছুই জানি না। সাব কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে এশিয়া কাপের আগেই সভা ডেকেছিলাম, সেখানে আমাকে বেশি কিছু করতে নিরুৎসাহিত করা হয়। এরপর থেকে আমি এই কমিটির সঙ্গে নেই বলতে পারেন।’
তারপর তার ব্যাখ্যা, ‘সবকিছুই করেছে আমার সদস্য সচিব (আরিফুর হক প্রিন্স) সহ অন্যরা। আমাকে এর বেশি কিছু জিজ্ঞেস করবেন না। আর কিছু বলতে পারবো না।’
প্রিন্সের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন ধরেননি। জানা গেছে, এই কমিটির অধীনে বাজেটের বাইরে অধিক অর্থ ব্যয় হয়েছে। মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান ইউসুফ আলী ফেডারেশনের এমন পদক্ষেপে বেশ খুশি, ‘ফেডারেশন স্বচ্ছতা আনতে চায়, তাদের এমন পদক্ষেপ ইতিবাচক। আমার কমিটিতে বাজেটের বাইরে ব্যয় হয়েছে। সেটা কেন হয়েছে তা ব্যাখ্যায় বলবো। তবে আমি মনে করি যদি অনিয়ম হয়ে থাকে, তাহলে খুঁজে বের করা উচিত।’