সিলেট সিক্সার্সের সঙ্গে ম্যাচটি বৃষ্টিতে হয় পরিত্যক্ত। তার আগের ম্যাচেও লড়াইয়ের আভাস দিয়েছিল খুলনা টাইটানস। যদিও ঢাকা শেষের ওভারে নাটকীয়ভাবে ম্যাচ জিতে নেয়। পয়েন্ট টেবিলে নিজেদের অবস্থান পাকা করতে তাই আজকের ম্যাচে জিততে মরিয়াই ছিল মাহমুদউল্লাহর দল। শুক্রবার চিটাগং ভাইকিংসকে ৫ উইকেটে হারিয়ে জয়ে ফিরেছে খুলনা টাইটানস। এই জয়ে ৬ ম্যাচে ৭ পয়েন্ট নিয়ে টেবিলের দ্বিতীয় স্থানে উঠে গেছে খুলনা টাইটানস।
১৬১ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে দলীয় ১৫ রানে ফিরে যান ক্লিঙ্গার। আপাত দৃষ্টিতে ধাক্কা মনে হলেও এরপর আরও তেতে উঠেন রাইলি রোসো। ৫ ওভারে ঝড়ো গতিতে খেলে দলীয় অর্ধশত রান পূরণ করেন। ষষ্ঠ ওভারে তার সঙ্গী ধীমান ঘোষকে ফেরান সিকান্দার রাজা। তাতেও অবশ্য রাশ টেনে ধরতে পারেনি চিটাগং। আগ্রাসী ভঙ্গিতেই খেলতে থাকেন ওপেনার রোসো। ব্যক্তিগত ৪৯ রানে ব্যাট করতে থাকা এই মারকুটে ব্যাটসম্যানকে বোল্ড করে বিদায় দেন আল আমিন। কিছু রান যোগ করে এরপরে ফিরে যান নাজমুল হোসেন শান্ত। এর পরেই লড়াই চালিয়ে যেতে থাকেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার সঙ্গে সমান তালে ব্যাট চালিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন আরিফুল হক। এক পর্যায়ে তাণ্ডবের মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেন দুজন। ২৪ বলে যখন ৩৪ রানে ব্যাট করছিলেন আরিফুল তখনই তাকে তালুবন্দী করেন পেসার তাসকিন। অবশ্য তাতেও থেমে থাকেনি খুলনা। দুর্দান্ত ফর্মে থাকা ব্র্যাথওয়েট তাসকিনের এক বলে চার আরেক বলে ছয় মেরে দিয়ে ১৮তম ওভারে দলকে জয়ের দ্বারপ্রান্তে পৌঁছে দেন। পরের ওভারের দ্বিতীয় বলে চার মেরে জয় নিয়ে মাঠ ছাড়েন মাহমুদউল্লাহ। খুলনা অধিনায়ক অপরাজিত ছিলেন ৪৮ রানে। তার ৩৫ বলের ইনিংসে ছিল ৩টি চার ও একটি ছয়। সঙ্গে ১০ রানে ব্যাট করছিলেন ব্র্যাথওয়েট।
এর আগে খুলনাকে ১৬১ রানের টার্গেট দেয় চিটাগং ভাইকিংস। টসে হেরে ব্যাট করে চিটাগং সংগ্রহ করে ৫ উইকেটে ১৬০ রান। আগের দুই ম্যাচেই টসে হেরে ব্যাটিংয়ে নামতে হয়েছিল খুলনা টাইটানসকে। শুক্রবারের ম্যাচে অবশ্য টসে জিতেই ফিল্ডিং নেয় খুলনা টাইটানস। চিটাগং ভাইকিংসকে ব্যাটিংয়ে পাঠায় মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের দল।
মিসবাহ না থাকায় আজকে চিটাগংয়ের নেতৃত্বে ছিলেন লুক রনকি। ওপেনিংয়ে নেমে তেমন কিছুই করতে পারেননি অধিনায়ক। আবু জায়েদের প্রথম ওভারের শেষ বলে খুব উঁচুতে মেরে খেলেছিলেন। তাতে ধরা পড়েন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের হাতে। শুরুতে ধাক্কা খেলেও এরপর চিটাগংয়ের হয়ে প্রতিরোধ দিয়ে দাঁড়িয়ে যান সৌম্য সরকার ও এনামুল হক বিজয়। এই জুটিতেই ১৪ ওভারে শত রান পার করে চিটাগং।
হুমকি হয়ে খুলনাকে ভোগানো এই জুটি ভাঙেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। তার বলে উঠিয়ে মেরেছিলেন সৌম্য সরকার। কিন্তু ৩২ রানে ব্যাট করতে থাকা এই ব্যাটসম্যানকে তালুবন্দী করেন ব্র্যাথওয়েট। অপরদিকে হাফসেঞ্চুরি তুলে পরের ওভারেই ফেরেন এনামুল হক বিজয়। আবু জায়েদের বলে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন ৬২ রানে। এরপরেই পাল্টে যায় চিটাগংয়ের ইনিংস। একই ওভারে উঠিয়ে মেরে ক্যাচ দিয়ে ফেরেন নতুন নামা সিকান্দার রাজা। ততক্ষণে চিটাগংয়ের স্কোর ১০৭ রানে ৪ উইকেট! ততক্ষণে অবশ্য রানের চাকা খানিক সময়ের জন্যে স্লথ হলেও শেষ দিকে ঝড় তুলেন প্রোটিয়া তারকা ভ্যান জিল ও আফগান নাজিবুল্লাহ জাদরান। এই জুটিতে ৩২ বলে আসে ৫০ রান। শেষ ওভারে রান আউটে এই জুটি ভাঙেন মাহমুদউল্লাহ। ২৪ রানে ফেরেন আফগান ক্রিকেটার জাদরান। আর তাদের ঝড়ো ব্যাটিংয়েই ৫ উইকেটে ১৬০ রানের সংগ্রহ পায় চিটাগং ভাইকিংস।
খুলনার পক্ষে একাই ৪ ওভারে ২৬ রান দিয়ে ৩ উইকেট নেন আবু জায়েদ। একটি নেন অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ।