X
মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪
৩ বৈশাখ ১৪৩১

সাকিবের টেস্ট অধিনায়কত্বের খতিয়ান

ফাহিম হোসেন মাজনুন
১০ ডিসেম্বর ২০১৭, ২১:৫৫আপডেট : ১০ ডিসেম্বর ২০১৭, ২২:৪৬

সাকিবের টেস্ট অধিনায়কত্বের খতিয়ান প্রথম ও একমাত্র খেলোয়াড় হিসেবে আইসিসির অলরাউন্ডার র‌্যাংকিংয়ের তিন ফরম্যাটেই শীর্ষে ওঠার কৃতিত্ব সাকিব আল হাসানের। যদিও গত অক্টোবরে ওয়ানডের এক নম্বর অলরাউন্ডারের জায়গাটি তিনি হারান পাকিস্তানের মোহাম্মদ হাফিজের কাছে। এখন তিনি টেস্ট ও টি-টোয়েন্টির শীর্ষ অলরাউন্ডার। কাকতালীয় যে বাংলাদেশের এই দুটি ফরম্যাটের নেতৃত্বও তার হাতে। রবিবার বোর্ড সভা শেষে তাকে টেস্টের অধিনায়কত্ব দেওয়া হয়েছে। আগামী জানুয়ারি-ফেব্রুয়ারিতে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দেশের মাটিতে শুরু হবে সাকিবের নতুন দায়িত্ব।

মাশরাফি মুর্তজার ছেড়ে দেওয়া দায়িত্ব হিসেবে গত এপ্রিলে টি-টোয়েন্টির অধিনায়ক হন সাকিব। সর্বশেষ হলেন পাঁচদিনের ক্রিকেটের অধিনায়ক। সাদা জার্সিতে বাংলাদেশকে নেতৃত্ব দেওয়ার অভিজ্ঞতা সাকিবের জন্য এই প্রথম নয়।  দুই বছরে ৯ টেস্টে অধিনায়কত্ব করেছিলেন তিনি। কিন্তু দলকে নেতৃত্ব দিয়ে সফলতার চেয়ে তার ব্যর্থতাই বেশি। অবশ্য ব্যক্তি সাকিব ছিলেন বেশ কয়েকটি ম্যাচে উজ্জ্বল।

২০০৯ সালে হুট করে অধিনায়কত্ব পেয়ে যান তিনি। কিংসটনে ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ৯৫ রানে জয়ের প্রথম টেস্টে চোট পান মাশরাফি, যেটা ছিল লাল বলের ক্রিকেটে এই পেসারের শেষ ম্যাচ। সেন্ট জর্জেসে আর ফিরতে পারেননি ‘নড়াইল এক্সপ্রেস’। প্রথমবার টেস্টে নেতৃত্ব দেওয়ার স্বাদ পান সাকিব। ওই ক্যারিবিয়ান সফরে অলরাউন্ড পারফরম্যান্স করে অধিনায়ক হিসেবে অভিষেক টেস্টে ঝলমলে ইনিংস খেলে দলকে জেতান ৪ উইকেটে। প্রথম ইনিংসে ১৬ রান করার পর ৯৬ রানের হার না মানা ব্যাটিংয়ে টেস্ট অধিনায়কত্বের ক্যারিয়ার শুরু করেন জয় দিয়ে। বোলিংয়ে প্রথম ইনিংসে ৩ উইকেট নেওয়ার পর শেষ ইনিংসে নেন ৫ উইকেট।

অলরাউন্ড পারফরম্যান্সে দলকে জিতিয়ে শুরু অধিনায়ক সাকিবের এরপর আরও ৮টি টেস্টে নেতৃত্ব দিয়েছেন সাকিব। কিন্তু ফিরে পাননি সেই দারুণ জয়ের স্বাদ। ভারতের বিপক্ষে দুটি টেস্ট, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে একটি, ইংল্যান্ডর বিপক্ষে হোম ও অ্যাওয়ে সিরিজে চারটি এবং জিম্বাবুয়ের মাটিতে একমাত্র টেস্টে বাংলাদেশের অধিনায়কত্ব করেছিলেন সাকিব। সবগুলোতেই ‘নখদন্তহীন’ বাঘের মতো আত্মসমর্পণ করতে হয়েছে তার দলকে।

ক্যারিবিয়ান জয়ের পর ভারতের বিপক্ষে দুই টেস্টে দারুণ শুরু করেছিলেন সাকিব। বল হাতে তিনি চট্টগ্রাম টেস্টের প্রথম ইনিংসে নেন ৫ উইকেট। কিন্তু দলকে সফলতা এনে দিতে পারেননি। ওই সিরিজে ১১৩ রান ও ১০ উইকেটে হেরে যায় স্বাগতিক বাংলাদেশ। বল হাতে দারুণ শুরু করা সাকিব ব্যাটিংয়ে ছিলেন ব্যর্থ। দুই টেস্টে তার ব্যাটিং ইনিংস ছিল ১৭, ১৭, ৩৪ ও ৭। সিরিজে পান ৯ উইকেট।

২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতে হ্যামিলটনে একমাত্র টেস্টে সাকিবের দল নিউজিল্যান্ডের রানের পাহাড়ে চাপা পড়ে। ৭ উইকেটে স্বাগতিকদের ৫৫৩ রানের ইনিংস ঘোষণার জবাবে সাকিব করেন ৮৭ রান। সঙ্গে মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরিতে ফলো অন এড়ায় বাংলাদেশ। দ্বিতীয় ইনিংসেও ব্যাটিংয়ে দুর্দান্ত সাকিব, পান ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি। অধিনায়ক হিসেবে টেস্টে প্রথম সেঞ্চুরি করলেও দলকে জেতাতে পারেননি। বাংলাদেশ হেরে যায় ১২১ রানে। বল হাতে নেন মাত্র ১ উইকেট।

নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ক্যারিয়ারের প্রথম সেঞ্চুরি উদযাপন সাকিবের ওই বছরের মার্চে ইংল্যান্ডকে স্বাগত জানায় সাকিবের বাংলাদেশ। ১৮১ রান ও ৯ উইকেটে হেরে যায় স্বাগতিকরা। চট্টগ্রামে প্রথম টেস্টে সাকিব ব্যাট হাতে মাত্র ১ ও ৪ রান করেন। তবে ইংল্যান্ডের দ্বিতীয় ইনিংসে নেন ৪ উইকেট। ঢাকায় দ্বিতীয় টেস্টে ভালো খেললেও দুই ইনিংসে হাফসেঞ্চুরি ও সেঞ্চুরি না করার আক্ষেপ ছিল সাকিবের। প্রথম ইনিংসে ৪৯ ও পরেরটায় ৯৬ রান করেন বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। বোলিংয়ে প্রথম ইনিংসে ৪ উইকেট পান সাকিব।

অধিনায়ক সাকিবের বিদেশে দ্বিতীয় টেস্ট সিরিজ ছিল ইংল্যান্ডে। হারের বৃত্ত থেকে বের হতে পারেননি দুই ম্যাচের ওই সিরিজে। প্রথমটি ৮ উইকেটে এবং পরেরটি ইনিংস ও ৮০ রানে হারে বাংলাদেশ। প্রথম টেস্টের দুই ইনিংসে ২৫ ও ১৬ রান করেন সাকিব, আর বল হাতে নেন মাত্র ৩ উইকেট। ম্যানচেস্টার টেস্টে এ বাঁহাতি স্পিনার প্রথম ইনিংসে নেন ৫ উইকেট। ইংল্যান্ডকে ৪১৯ রানে অলআউট করলেও ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় ইনিংসে হারে বাংলাদেশ। সাকিব করেন ১০ ও ১ রান।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে হেরে সাকিব হারান টেস্ট অধিনায়কত্ব ২০১১ সালে জিম্বাবুয়েতে গিয়েও একমাত্র টেস্টে বড় ব্যবধানে হারে বাংলাদেশ। আর ওই টেস্টই ছিল প্রথম মেয়াদে অধিনায়ক সাকিবের শেষ ম্যাচ। স্বাগতিকদের ৩৭০ রানে অলআউট করতে এই স্পিনার নেন তিন উইকেট। ব্যাটিংয়ে দ্বিতীয় সেরা ৬৮ রান করেও দলকে এনে দিতে পারেননি লিড। এ সুযোগে জিম্বাবুয়ে ৩৭৫ রানের টার্গেট দেয় বাংলাদেশকে, যেখানে শক্ত হাতে ব্যাট ধরতে পারেননি কেউই। সাকিব দ্বিতীয় ইনিংসে করেন মাত্র ৬ রান। ১৩০ রানে হারে বাংলাদেশ।

ওই সফরের পরই টেস্ট অধিনায়কত্ব মুশফিকুর রহিমের কাছে হারান সাকিব। ৬ বছর পর সেই মুশফিকের কাছ থেকেই যা ফিরে পেলেন এই বাঁহাতি অলরাউন্ডার।   

/এফএইচএম/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
‘সাংগ্রাই জলোৎসব’ যেন পাহাড়ে এক মিলন মেলা
‘সাংগ্রাই জলোৎসব’ যেন পাহাড়ে এক মিলন মেলা
পাঁচ উপায়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা
বাজেট ২০২৪-২৫পাঁচ উপায়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের পরিকল্পনা
টাকা ভাগাভাগি নিয়ে কাউন্সিলর-যুবলীগ নেতার সংঘর্ষে যুবক নিহত
টাকা ভাগাভাগি নিয়ে কাউন্সিলর-যুবলীগ নেতার সংঘর্ষে যুবক নিহত
অনিবন্ধিত ও অবৈধ নিউজ পোর্টাল বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
অনিবন্ধিত ও অবৈধ নিউজ পোর্টাল বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে: তথ্য প্রতিমন্ত্রী
সর্বাধিক পঠিত
ঘরে বসে আয়ের প্রলোভন: সবাই সব জেনেও ‘চুপ’
ঘরে বসে আয়ের প্রলোভন: সবাই সব জেনেও ‘চুপ’
ডাবের পানি খাওয়ার ১৫ উপকারিতা
ডাবের পানি খাওয়ার ১৫ উপকারিতা
ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেলো ১৩ জনের
ফরিদপুরে সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ গেলো ১৩ জনের
প্রকৃতির লীলাভূমি সিলেটে পর্যটকদের ভিড়
প্রকৃতির লীলাভূমি সিলেটে পর্যটকদের ভিড়
‘মাঠে আমার শরীর কেউ স্পর্শ করতে পারেনি’
‘মাঠে আমার শরীর কেউ স্পর্শ করতে পারেনি’