X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৭ বৈশাখ ১৪৩১

বার্সেলোনা-চেলসির যত রোমাঞ্চকর লড়াই

ফাহিম হোসেন মাজনুন
২০ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ২২:৫১আপডেট : ২১ ফেব্রুয়ারি ২০১৮, ০১:৪৩

শেষবার বার্সা-চেলসি মুখোমুখি হয়েছিল ৬ বছর আগে চ্যাম্পিয়নস লিগের শেষ ষোলোর দ্বিতীয় সপ্তাহ শুরু। রোমাঞ্চে টইটম্বুর চেলসি ও বার্সেলোনার লড়াই শুরু হবে আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পর। দুই দল মুখোমুখি হচ্ছে দীর্ঘ ছয় বছর পর। যুদ্ধের দামামা বাজিয়ে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে স্প্যানিশ প্রতিপক্ষকে স্বাগত জানাবে গত বছরের ইংলিশ চ্যাম্পিয়নরা। এই মৌসুমে বার্সা ও চেলসি মুদ্রার এপিঠ-ওপিঠে থাকলেও ইতিহাসটা আছে দুই দলের পক্ষেই। তবে নিকট অতীত কিন্তু ইংলিশদের দিয়েছিল হাত ভরে।

সব মিলিয়ে পরিসংখ্যান ‍দুই দলের পক্ষে। ১৫ বারের দেখায় সমান ৫টি করে জয় পেয়েছে চেলসি ও বার্সা। বাকি ৫টি হয়েছে ড্র। তবে দুই দলের হার-জিত প্রায় প্রত্যেকবারই হয়েছে নাটকীয় পারফরম্যান্সে।

ইউরোপ মহাদেশের দুই প্রতিদ্বন্দ্বী ভিন্ন দেশের হলেও তাদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা ৫২ বছরের পুরোনো। সেই ১৯৬৬ সালে প্রথমবার একে অপরের মুখোমুখি হয়েছিল, ইউরোপের প্রাচীন শীর্ষ প্রতিযোগিতা আন্তঃশহর ফেয়ার্স কাপের সেমিফাইনালে। স্বাগতিক হওয়ার সুবিধা দুদলই নিয়েছিল। প্রথম লেগে বার্সেলোনা ২-০ গোলে হারায় চেলসিকে। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে পরের লেগ একই স্কোরে জেতে ইংলিশরা। দুই লেগের অগ্রগামিতা ২-২ হওয়ায় ম্যাচ আবার খেলা হয়, যেখানে ৫-০ গোলে চেলসিকে উড়িয়ে দেয় স্প্যানিশ জায়ান্টরা।

২০০০ সালে রিভালদোর জোড়া গোলে চ্যাম্পিয়নস লিগে চেলসিকে বিদায় করেছিল বার্সা দুই দলের আবার দেখা হয়েছিল তিন দশকেরও বেশি সময় পর। ২০০০ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগ কোয়ার্টার ফাইনালে। প্রথম লেগে চেলসি নিজ মাঠে পাত্তাই দেয়নি বার্সাকে। তোরে আন্দ্রে ফ্লোর জোড়া গোলে ৩-১ গোলে জিতেছিল তারা। রিভালদো-লুইস ফিগোর বার্সা হেরে যেন ফুসছিল। ন্যু ক্যাম্পে দ্বিতীয় লেগের প্রথমার্ধে রিভালদো ও ফিগোর গোলে ২-০ তে এগিয়ে থেকে শেষ করে স্বাগতিকরা। কিন্তু ৬০ মিনিটে তোরের গোল স্বস্তিতে ফেরায় চেলসিকে। ম্যাচ বাঁচাতে হন্যে হয়ে গোলের খোঁজে থাকা বার্সা শিবিরে প্রশান্তির বাতাস এনে দেয় ৮৩ মিনিটে ড্যানিয়েল ড্যানির লক্ষ্যভেদী শট। নির্ধারিত সময় শেষ হয়েছিল ৩-১ গোলে। দুই লেগের অগ্রগামিতা ৪-৪ গোল হওয়ায় ম্যাচ গড়ায় অতিরিক্ত সময়ে, যেখানে রিভালদোর পেনাল্টি গোল ও প্যাট্রিক ক্লইভার্টের গোলে ৫-১ এ জেতে বার্সা। ৬-৪ গোলের অগ্রগামিতায় সেমিফাইনালের টিকিট পায় বার্সা।

শ্বাসরুদ্ধকর ওই জয়ের স্মৃতি নিয়ে ২০০৫ সালের চ্যাম্পিয়নস লিগ শেষ ষোলোতে চেলসির বিপক্ষে মাঠে নামে বার্সা। ম্যাক্সি লোপেজ ও স্যামুয়েল এতোর লক্ষ্যভেদে ২-১ গোলে ন্যু ক্যাম্পে প্রথম লেগ জিতেছিল স্প্যানিশ জায়ান্টরা। প্রথম লেগ হারলেও ৫ বছর আগে কোয়ার্টার ফাইনালে বিদায়ের শোধ কড়ায় গণ্ডায় চেলসি নিয়েছিল দ্বিতীয় লেগ জিতে। ৪-২ গোলের জয়ে তারা বার্সার পথচলা থামিয়ে দিয়েছিল শেষ আটের আগেই। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে মাত্র ২৬ মিনিটে ৩-০ গোলে এগিয়ে গিয়েছিল চেলসি। তবে রোনালদিনহো জোড়া গোল করলে আবারও ব্লুদের বিদায় করার স্বপ্ন দেখছিল বার্সা। কিন্তু সব শেষ হয়ে যায় ৭৬ মিনিটে জন টেরি গোল করলে। ৫-৪ গোলের অগ্রগামিতায় শেষ ষোলোর বাধা পেরোয় ইংলিশরা।

জন টেরির দুর্দান্ত হেডে ২০০৫ সালে বার্সাকে হটিয়ে দেয় চেলসি এই টেরিই পরের বছর ডুবিয়েছিল চেলসিকে। ২০০৬ সালে আবারও শেষ ষোলোতেই তারা মুখোমুখি হয়েছিল বার্সার। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে এই সেন্টার ব্যাকের আত্মঘাতী গোলে ২-১ এ প্রথম লেগ জিতেছিল স্প্যানিশরা। লিওনেল মেসি প্রথমবার ব্লুদের বিপক্ষে খেলতে নেমেছিলেন এই ম্যাচে। পরের লেগ ড্র হয় রোনালদিনহো ও ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের গোলে। ন্যু ক্যাম্পে ওই ১-১ গোলের ড্রয়ে ৩-২ অগ্রগামিতায় এবার কোয়ার্টার ফাইনালে ওঠে বার্সা। এরপর একে একে বেনফিকা, এসি মিলান ও আর্সেনালকে হারিয়ে ১৪ বছর পর চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্বিতীয় শিরোপা জেতে তারা।

একই বছর আরও দুইবার একে অপরের সঙ্গে লড়েছে দুই দল। এই প্রথম চ্যাম্পিয়নস লিগে গ্রুপ পর্বে দেখা হয়েছিল তাদের। যেখানে চেলসি নিজ মাঠে ১-০ গোলে জিতেছিল দিদিয়ের দ্রগবার গোলে। ন্যু ক্যাম্পে ফিরতি দেখায় শেষ মিনিটে আইভরি কোস্টের এ তারকার গোলে ম্যাচটি ড্র হয় ২-২ ব্যবধানে।

শেষ মিনিটে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার গোল, ফাইনালে উঠলো বার্সেলোনা তিন বছর পর ২০০৯ সালের ইউরোপের শীর্ষ মঞ্চে ফাইনালে ওঠার লড়াইয়ে মুখোমুখি হয় বার্সা ও চেলসি। সেমিফাইনালের দুই লেগই হয়েছিল ড্র। ন্যু ক্যাম্পে কোনও দলই গোল করতে পারেনি। দ্বিতীয় লেগে মাইকেল এসিয়েনের গোলে এগিয়ে গিয়েছিল চেলসি। কিন্তু শেষ মুহূর্তে আন্দ্রেস ইনিয়েস্তার লক্ষ্যভেদী শট ইংলিশদের হতাশার সাগরে ডোবায়। অ্যাওয়ে গোলের সুবিধা নিয়ে ফাইনালে ওঠে বার্সা, যেখানে ম্যানইউকে হারিয়ে তৃতীয়বার ইউরোপের সেরা দল হয় তারা।

২০১২ সালে তোরেসের গোলে এবার হতাশায় ডুবলো বার্সেলোনা পরেরবারও তারা মাঠে মুখোমুখি সেই সেমিফাইনালেই। ২০১২ সালে ওইবার প্রতিশোধ নেয় চেলসি। দ্রগবার গোলে স্ট্যামফোর্ড ব্রিজে ১-০ ব্যবধানে জিতেছিল তারা। পরের লেগে সের্হিয়ো বুসকেৎশ ও ইনিয়েস্তার গোলে এগিয়ে গিয়েছিল বার্সা। দুই গোলে পিছিয়ে পড়েও চমৎকারভাবে ঘুরে দাঁড়ায় চেলসি। মেসির পেনাল্টি মিসের দিন রামিরেস ও ফার্নান্দো তোরেসের গোলে ২-২ ব্যবধানে ড্র করে ১০ জনের দলটি। ৩-২ গোলের অগ্রগামিতায় আগের সেমিফাইনালে বিদায়ের শোধ তোলে চেলসি এবং ফাইনালে বায়ার্ন মিউনিখকে হারিয়ে একমাত্র চ্যাম্পিয়নস লিগ শিরোপা হাতে নেয় তারা। উয়েফা ডটকম

/এফএইচএম/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ব্রাজিলিয়ান মিগেলের গোলে কষ্টে জিতলো কিংস
ব্রাজিলিয়ান মিগেলের গোলে কষ্টে জিতলো কিংস
তীব্র গরমে সুপার লিগে দুই দিন করে বিরতি
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগতীব্র গরমে সুপার লিগে দুই দিন করে বিরতি
ড্রিমলাইনারের কারিগরি বিষয়ে বোয়িংয়ের সঙ্গে কথা বলতে বিমানকে মন্ত্রীর নির্দেশ
ড্রিমলাইনারের কারিগরি বিষয়ে বোয়িংয়ের সঙ্গে কথা বলতে বিমানকে মন্ত্রীর নির্দেশ
চাঁদপুরে লঞ্চে আগুন, হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে আহত ১০
চাঁদপুরে লঞ্চে আগুন, হুড়োহুড়ি করে নামতে গিয়ে আহত ১০
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
দুর্নীতির অভিযোগ: সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাল্টা চ্যালেঞ্জ
দুর্নীতির অভিযোগ: সাবেক আইজিপি বেনজীরের পাল্টা চ্যালেঞ্জ
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
সারা দেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় ছুটি ঘোষণা
সারা দেশে স্কুল-কলেজ-মাদ্রাসায় ছুটি ঘোষণা
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া