আজ থেকে ঠিক দেড় যুগ আগে ২০১০ সালের ১০ নভেম্বর টেস্ট ক্রিকেটের কঠিন অঙ্গনে বাংলাদেশের প্রবেশ। বঙ্গবন্ধু জাতীয় স্টেডিয়ামে অভিষেক টেস্টের অধিনায়ক নাঈমুর রহমান দুর্জয় টস করতে নেমেছিলেন ভারতের সৌরভ গাঙ্গুলীর সঙ্গে।
প্রথম টেস্ট ৯ উইকেটে হারলেও আমিনুল ইসলাম বুলবুলের দুর্দান্ত সেঞ্চুরি বিশাল প্রাপ্তি ছিল বাংলাদেশের জন্য। হাবিবুল বাশার সুমনের আক্রমণাত্মক ফিফটি আর অধিনায়ক দুর্জয়ের ৬ উইকেট শিকারও দারুণ আনন্দ দিয়েছিল দেশের মানুষকে।
তবে দেড় যুগের হিসেব করতে বসলে হতাশই হওয়ার কথা ক্রিকেটপ্রেমীদের। রবিবার ১১০তম টেস্ট খেলতে নামবে বাংলাদেশ। আগের ১০৯টি টেস্টের ৮৩টিই দিয়েছে পরাজয়ের লজ্জা। ১৬টি ড্র, আর জয়ের আনন্দে মেতে ওঠা মাত্র ১০বার।
এমন হতাশার সামনে দাঁড়িয়েও গর্বিত আকরাম খান। অভিষেক টেস্টের দুই ইনিংসে ৩৫ ও ২ রান করা আকরাম বাংলা ট্রিবিউনকে বললেন, ‘আজ আমাদের টেস্ট অভিষেকের ১৮ বছর পূর্ণ হলো। এটা খুবই গর্বের ব্যাপার। ক্রিকেট সারা বিশ্বে আমাদের পরিচিতি এনে দিয়েছে। বিশ্বের সেরা ক্রিকেটারদের সঙ্গে আমাদের ক্রিকেটাররা এখন পাল্লা দিয়ে লড়াই করছে। এটা দেখাও তৃপ্তিদায়ক। শুধু পারফরম্যান্সের জন্য আমরা টেস্ট স্ট্যাটাস পাইনি। ক্রিকেটের প্রতি বাংলাদেশের মানুষের ভালোবাসাও আমাদের টেস্ট স্ট্যাটাস এনে দিয়েছে।’
টেস্ট আঙিনায় দেড় যুগের প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তির হিসেবে মেলাতে বসে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান আকরামের উপলব্ধি, ‘১৮ বছরে আমরা হয়তো খুব বেশি দূর এগোতে পারিনি, আমাদের দল প্রত্যাশিত জায়গায় পৌঁছাতে পারেনি। আমি অন্তত যেখানে দেখতে চেয়েছিলাম, সেখানে পৌঁছাতে পারেনি বাংলাদেশ দল। আমাদের আরও এগিয়ে যাওয়া উচিত ছিল। তবে যতটা এগিয়েছি, সেটাও কম নয়। আমরা ইংল্যান্ড-অস্ট্রেলিয়ার মতো দলকে হারিয়েছি। টেস্ট ক্রিকেটে কিছু দিন ধরে আমাদের পারফরম্যান্স ভালো নয়। তবে আমি আশাবাদী, দুঃসময় পেছনে ফেলে বাংলাদেশ ঘুরে দাঁড়াবেই। আমাদের আসলে আরও টেস্ট খেলতে হবে। এখন অবশ্য আগের চেয়ে টেস্ট ম্যাচের সংখ্যা বেড়েছে, আগামী তিন/চার বছরে আরও বাড়বে।’
অভিষেক টেস্টে ৩ উইকেট শিকারের পাশাপাশি ২৬ রান (২২+৪) করা রফিক অবশ্য এতটা আশাবাদী নন। বাংলাদেশের সর্বকালের অন্যতম সেরা স্পিনার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেছেন, ‘যতটা এগোনোর কথা ছিল, আমরা ততটা এগোতে পারিনি। এখনও জিম্বাবুয়ের মতো দলের বিপক্ষে ভুগতে হয় আমাদের। টেস্ট ক্রিকেটে আরও মনোযোগ দিতে হবে। এভাবে টেস্ট ক্রিকেট হয় না।’
অভিষেক টেস্টে কোচের দায়িত্বে থাকা সারোয়ার ইমরানের বিশ্বাস, অবহেলিত ঘরোয়া ক্রিকেটই এগোতে দিচ্ছে না বাংলাদেশকে, ‘জাতীয় দলের খেলোয়াড়দের ঘরোয়া লঙ্গার ভার্সন ক্রিকেটে খেলা নিশ্চিত করতে হবে। পাশাপাশি উইকেটও তৈরি করতে হবে ভালো মানের। ঘরোয়া ক্রিকেটে খেলেই সবাই যেন আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের জন্য প্রস্তুত হতে পারে, সেদিকে মনোযোগ দিতে হবে।’