অনেক দিন ধরেই তার ব্যাটে রানের জোয়ার। ২০১৪ সালে অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপের সর্বোচ্চ রান সংগ্রাহক সাদমান ইসলাম ঘরোয়া ক্রিকেটে ব্যাট হাতে দারুণ সফল। সদ্যসমাপ্ত জাতীয় ক্রিকেট লিগে সবচেয়ে বেশি রান করার সুবাদে সুযোগ পান ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে প্রস্তুতি ম্যাচে। বিসিবি একাদশের হয়ে ৭৩ রানের দুর্দান্ত ইনিংস খেলার পুরস্কার হিসেবে তিনি এখন প্রথম টেস্টের দলে। হঠাৎ জাতীয় দলে সুযোগ পেয়ে ২৩ বছর বয়সী বাঁহাতি ওপেনার কিছুটা হতচকিত। ঘোর লাগা চোখেই মঙ্গলবার দুপুরে একান্তে কথা বললেন বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে।
বাংলা ট্রিবিউন: প্রস্তুতি ম্যাচ থেকে সরাসরি জাতীয় দলে। কেমন লাগছে?
সাদমান: খুব ভালো লাগছে, পরিবারের সবাই খুব খুশি, বন্ধু-বান্ধবরা শুভেচ্ছা জানাচ্ছে। আশা করেছিলাম প্রস্তুতি ম্যাচে ভালো খেলতে পারলে জাতীয় দলে সুযোগ আসবে। দলে সুযোগ পেয়ে ভালো লাগছে।
বাংলা ট্রিবিউন: জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছেন। ক্যারিয়ার নিয়ে এখন আপনার কী ভাবনা?
সাদমান: সবারই জাতীয় দলে খেলার স্বপ্ন থাকে। আমি হঠাৎ এসে হঠাৎ করে হারিয়ে যেতে চাই না। জাতীয় দলে নিয়মিত হতে পারফরম্যান্সের বিকল্প নেই। যেন হারিয়ে না যাই সেজন্য আমাকে অবশ্যই পায়ের নিচের মাটি শক্ত করতে হবে। মাঠে নামার সুযোগ পেলে ভালো খেলতে চাই। দলে সুযোগ পেয়েই আনন্দে আত্মহারা নই আমি। মাঠে নেমে ভালো পারফর্ম করে উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে চাই।
বাংলা ট্রিবিউন: প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অনেক দিন ধরে খেলছেন, রানও করছেন নিয়মিত। জাতীয় দলে সুযোগ কি সঠিক সময়েই পেলেন?
সাদমান: অবশ্যই। আমি প্রায় চার/পাঁচ বছর ধরে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে খেলছি। এই পর্যায়ে খেলার মতো আত্মবিশ্বাস আছে আমার। নিজেই উপলব্ধি করতে পারছি আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলাটা কেমন হয়।
বাংলা ট্রিবিউন: প্রস্তুতি ম্যাচে ৭৩ রান করার পর ভেবেছিলেন প্রথম টেস্টের দলে সুযোগ পাবেন?
সাদমান: ম্যাচের প্রথম দিন কোচ (স্টিভ রোডস) মাঠে এসে বলেছিলেন তিনি সবার ব্যাটিং দেখবেন। ম্যাচের আগেই আমার মনে হয়েছিল, ভালো খেলতে পারলে হয়তো জাতীয় দলে সুযোগ আসবে। ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে ম্যাচটা খেলেছি। হয়তো আমার ব্যাটিং ভালো লেগেছে বলে নির্বাচকরা আমাকে সুযোগ দিয়েছেন।
বাংলা ট্রিবিউন: মাঠে কোচ-নির্বাচকদের উপস্থিতি কি আপনাকে বাড়তি অনুপ্রেরণা দিয়েছে?
সাদমান: না,উনাদের উপস্থিতি আমাকে বাড়তি অনুপ্রেরণা দেয়নি। আমি শুধু নিজের স্বাভাবিক খেলাটা খেলার চেষ্টা করেছি। জানতাম, তাদের সামনে বাড়তি কিছু করার ভাবনা মনের মধ্যে চাপ ফেলতে পারে।
বাংলা ট্রিবিউন: ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুই পেসার কেমার রোচ ও শ্যানন গ্যাব্রিয়েলকে সাফল্যের সঙ্গে মোকাবেলা করে আপনি কতটা আত্মবিশ্বাসী?
সাদমান: ওদের বিপক্ষে ব্যাটিং করে আমার আত্মবিশ্বাস অনেক বেড়ে গেছে। আমাদের ঘরোয়া ক্রিকেটেও কিন্তু তাদের মতো পেসার আছে। তবে আমাদের পেসারদের তেমন নামডাক নেই। বল টু বল দেখে খেলার পরিকল্পনা ছিল আমার। সেই পরিকল্পনায় আমি সফল।
বাংলা ট্রিবিউন: ৪২টি প্রথম শ্রেণির ম্যাচ খেলে টেস্ট দলে সুযোগ পেলেন। এই অভিজ্ঞতা কতটা কাজে দেবে?
সাদমান: একজন ব্যাটসম্যানের যথেষ্ট অভিজ্ঞতা অর্জন করেই জাতীয় দলে সুযোগ পাওয়া উচিত। আসলে কম ফার্স্ট ক্লাস ম্যাচ খেললে এই পর্যায়ের ক্রিকেটটা কেমন তা ঠিক বোঝা যায় না। আমি মনে করি ঠিক সময়েই জাতীয় দলে সুযোগ পেয়েছি। যেহেতু অনেক ম্যাচ খেলেছি, তাই আমি জানি কীভাবে ইনিংস গুছিয়ে নিতে হয়।
বাংলা ট্রিবিউন: ক্রিকেটে আপনার আদর্শ কে?
সাদমান: অবশ্যই তামিম ভাই। তার খেলা দেখে বড় হয়েছি। তার মতো জাতীয় দলে নির্ভরতার প্রতীক হতে চাই।