ক্রিকেটার পরিচয় ছাপিয়ে তিনি এখন ‘রাজনীতিবিদ’। আসন্ন সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী মাশরাফি মুর্তজা রাজনীতিতে আসা নিয়ে এতদিন মুখ খোলেননি। মঙ্গলবার মিরপুরে সংবাদ সম্মেলনে ওয়ানডে অধিনায়কের পুরোটা জুড়েছিল রাজনীতি।
প্রশ্ন: হঠাৎ কী ভেবে নির্বাচনে এলেন?
মাশরাফি: আমার ক্যারিয়ার শেষ হতে বেশি বাকি নেই। আমি এমন কোনও সুপার স্টার নই যে অবসরের পর আমাকে কেউ মনে রাখবে। আমি নিজের মতো স্ট্রাগল করে যতটা পেরেছি খেলেছি। তবে আমি সব সময় ক্রিকেট উপভোগ করি। ছোটবেলা থেকেই আমার স্বপ্ন রাজনীতির মাধ্যমে মানুষের সেবা করা। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বৃহৎ পরিসরে কিছু করার সুযোগ দিয়েছেন আমাকে। আমি সুযোগটা কাজে লাগাতে চাই।
প্রশ্ন: গতানুগতিক রাজনীতি থেকে দূরে থাকার ব্যাপারে আপনি কতটা আত্মবিশ্বাসী?
মাশরাফি: আমি স্বপ্ন দেখাতে আসিনি, গতানুগতিক কথাও বলতে চাই না। এখনই ভাবার কোনও কারণ নেই যে আমি নির্বাচিত হয়ে গেছি। নির্বাচিত হলেই আমার কাজের মূল্যায়ন করতে পারবেন আপনারা।
প্রশ্ন: রাজনীতিতে আসার আগে শিক্ষার্থীদের কোটা কিংবা নিরাপদ সড়ক আন্দোলন নিয়ে আপনি কিন্তু কিছুই বলেননি।
মাশরাফি: আমি তো আগে সিরিয়াসলি রাজনীতি করিনি। আমার উদ্দেশ্য খুব সিম্পল, মানুষের জন্য কিছু করে যেন শান্তি পাই। আমাকে বড় রাজনীতিবিদ ভাবলে আমার প্রতি অবিচার করা হবে। জীবনের এই অভিজ্ঞতা একদমই নতুন। তবে আমি ভালো কাজ করতে চাই। দেখা যাক, ভবিষ্যতে সেটা করতে পারি কিনা!
প্রশ্ন: নিজের এলাকার উন্নয়নের লক্ষ্যে নড়াইল ফাউন্ডেশন করেছেন। তারপরও কেন রাজনীতিতে এলেন?
মাশরাফি: আমি নড়াইল ফাউন্ডেশন থেকে রাস্তা করতে পারিনি। আমি বুঝতে পেরেছি, আমার পক্ষে ফাউন্ডেশন থেকে সব কিছু করা সম্ভব নয়। এমনকি নড়াইলের অনেক মানুষও এটার কথা জানে না।
প্রশ্ন: আমাদের দেশে প্রতিহিংসার রাজনীতির কথা সবারই জানা। আপনার দল না জিততে না পারলে নিজের ভবিষ্যত নিয়ে কি আপনি উদ্বেগে থাকবেন?
মাশরাফি: আগামীকাল আপনার জীবনে কী ঘটবে আপনি তা জানেন না। আমার জীবনে কী ঘটবে সেটাও আমি জানি না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো আমি পরিষ্কার মন-মানসিকতা নিয়ে এসেছি কিনা।
প্রশ্ন: মাশরাফিকে নড়াইলবাসী ভোট দেবে কেন?
মাশরাফি: একজন ভোটারের কাছে আমার গ্রহণযোগ্যতা থাকলেই তিনি আমাকে ভোট দেবেন। আমার পক্ষে যতটা করা সম্ভব করবো। ওয়ানডে সিরিজের পরই নড়াইলের মানুষকে আমার মেসেজ দেবো। সে বিষয়ে এখন কিছু বলা যাবে না।
প্রশ্ন: নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি শুরু করেছেন?
মাশরাফি: না, এখনও শুরু করিনি। আমি এখন পুরোপুরি খেলার মধ্যে আছি। আমি যখন যে কাজটা করি সেটা মন দিয়ে করতে পারি, আর এটাই আমার শক্তি।
প্রশ্ন: রাজনীতিতে না এলে তো আরও অনেকদিন খেলা চালিয়ে যেতে পারতেন।
মাশরাফি: আপাতত আমার লক্ষ্য বিশ্বকাপ। ওয়ানডে বিশ্বকাপ পর্যন্ত ৮ মাস মনোযোগ দিয়ে ক্রিকেট খেলবো। তারপর কী হবে সেটা সময়ই বলে দেবে। ২০১১ বিশ্বকাপের পর আপনাদের এখানের অন্তত ৫০ ভাগ মনে করেছিল আমার ক্যারিয়ার শেষ। আল্লার রহমতে ৭ বছর ধরে খেলা চালিয়ে যাচ্ছি।
প্রশ্ন: কয়েক দিন পর ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ, অথচ এখন নির্বাচন নিয়ে আলোচনা করতে হচ্ছে। এটাকে কীভাবে দেখছেন?
মাশরাফি: সেজন্যই তো আজ রাজনীতি নিয়ে কথা বললাম, যেন সিরিজের মাঝখানে এ প্রসঙ্গ না ওঠে। আমি ভেবেছি, আমার রাজনীতিতে জড়ানো নিয়ে আপনাদের মনে কোনও প্রশ্ন থাকলে তার উত্তর যেন আজই পেয়ে যান।