একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলছেন চমৎকার এক ইনিংস। সেঞ্চুরি পূরণ করে ক্যারিবিয়ানদের আশা দেখাচ্ছেন শাই হোপ। এই ব্যাটসম্যানের শতকে ভর করে মিরপুরের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে ওয়েস্ট ইন্ডিজের স্কোর ৪৯ ওভারে ৬ উইকেটে ২৫০। জিততে ৬ বলে করতে হবে ৬ রান।
ওয়ানডে ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় সেঞ্চুরি পূরণ করলেন শাই হোপ। ওপেনিংয়ে নেমে এই ব্যাটসম্যান মাশরাফির বলে ১ রান নিয়ে স্পর্শ করেন তিন অঙ্কের ঘর। ১১৮ বলে পূরণ করেন তিনি সেঞ্চুরি।
একপ্রান্ত আগলে রেখে খেলেছেন চমৎকার এক ইনিংস। সময় উপযোগী ব্যাটিংয়ে কখনও ঠাণ্ডা মাথায়, কখনও আবার আক্রমণাত্মক মেজাজে ব্যাট চলিয়েছেন হোপ। ধৈর্যশীল ব্যাটিংয়ে সেঞ্চুরির উৎসবেও মেতেছেন তিনি। বাংলাদেশের বিপক্ষে চলতি ওয়ানডে সিরিজে এটাই প্রথম সেঞ্চুরির ঘটনা।
রোস্টন চেসকে ফেরালেন মোস্তাফিজ
প্রথম স্পেলে সুবিধা করতে না পারলেও স্বরূপে ফিরতে সময় নেননি মোস্তাফিজ। চমৎকার বোলিংয়ে মারলন স্যামুয়েলসকে ফেরানোর পর আউট করেছেন রোস্টন চেসকে।
বাংলাদেশের জোড়া আঘাতে তখন চাপে পড়েছে ক্যারিবিয়ানরা, শাই হোপকে সঙ্গ দিতে তখন মাঠে নেমেছিলেন চেস। যদিও কাজটা করতে পারেননি তিনি। ১৮ রান করে মোস্তাফিজের শিকার হয়ে ফিরেছেন প্যাভিলিয়নে। বাঁহাতি পেসারের স্লোয়ারে মিড অনে ধরা পড়েন তিনি তামিম ইকবালের হাতে।
জোড়া আঘাতে নিয়ন্ত্রণ বাংলাদেশের
ক্যারিবিয়ানদের ব্যাটিং অস্বস্তি ছড়িয়েছিল বাংলাদেশ ক্যাম্পে। তবে জোড়া আঘাতে ম্যাচের নিয়ন্ত্রণ আবার নিজেদের দখলে নিয়েছে স্বাগতিকরা। দ্রুত ২ উইকেট তুলে নিয়ে চেপে ধরেছে ক্যারিবিয়ানদের। মিরপুরের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে সফরকারীদের স্কোর ৩৪ ওভারে ৫ উইকেটে ১৫৯।
টেস্ট সিরিজে ওয়ানডে মেজাজে ব্যাটিং করেছিলেন শিমরন হেটমায়ার। যদিও ৫০ ওভারের ক্রিকেটে তাকে জ্বলে উঠতে দেননি বাংলাদেশের বোলাররা। প্রথম ম্যাচে ৬ রান করা ক্যারিবিয়ান ব্যাটসম্যানকে এবার ১৪ রানে ফিরিয়েছেন মোস্তাফিজুর রহমান। এই পেসারের বল ফ্লিক করতে গিয়ে স্কয়ার লিগে ধরা পড়েন বদলি খেলোয়াড় নাজমুল ইসলামের হাতে।
তার আউট পরই আবার আঘাত বাংলাদেশের। এবার মাশরাফি তুলে নেন রোভম্যান পাওয়েলের (১) উইকেট। বাংলাদেশ অধিনায়কের ডেলিভারিতে ক্যারিবিয়ান অধিনায়ক মিড অনে সহজ ক্যাচ নেন সৌম্য সরকারকে।
মোস্তাফিজের শিকার স্যামুয়েলস
দাঁড়িয়ে গিয়েছিলেন মারলন স্যামুয়েলস। শাই হোপের সঙ্গে জুটি বেঁধে বাংলাদেশকে অস্বস্তিতে রাখা এই ব্যাটসম্যানকে ফেরালেন মোস্তাফিজুর রহমান। ৩০তম ওভারে মোস্তাফিজের কাটারে মোটেও সুবিধা করতে পারছিলেন না স্যামুয়েলস। শেষ বলে আর রক্ষা হয়নি। বাংলাদেশি পেসারের কাটারে খেই হারিয়ে ধরা পড়েন উইকেটরক্ষক মুশফিকের গ্ল্যাভসে। প্যাভিলিয়নে ফেরার আগে ৪৫ বলে ২ চার ও এক ছক্কায় করেন ২৭ রান।
শাই হোপের হাফসেঞ্চুরি
প্রথম ওয়ানডেতে ভালো শুরুর পরও হাফসেঞ্চুরি করতে পারেননি শাই হোপ। দ্বিতীয় ম্যাচে অবশ্য ভুল করেননি তিনি। ফিফটি পূরণ করে এগিয়ে নিচ্ছেন ওয়েস্ট ইন্ডিজকে।
মিরপুরে সিরিজের প্রথম ওয়ানডেতে আউট হয়েছিলেন তিনি ৪৩ রানে। দলের ব্যাটিং বিপর্যয়ে খেলেছিলেন সর্বোচ্চ রানের ইনিংস। দ্বিতীয় ম্যাচেও দাঁড়িয়ে গেলেন হোপ। চমৎকার ব্যাটিংয়ে পূরণ করেছেন ওয়ানডে ক্যারিয়ারের অষ্টম হাফসেঞ্চুরি। ৬৭ বলে পূরণ করেন ফিফটি।
ব্রাভোকে বোল্ড করে স্বস্তি ফেরালেন রুবেল
বারবার বোলিং পরিবর্তন করেও লাভ হচ্ছিল না। অবশেষে রুবেল হোসেন স্বস্তি ফেরালেন বাংলাদেশ ক্যাম্পে। এই পেসারের বলে বোল্ড হয়ে গেছেন ড্যারেন ব্রাভো। তার আউটে ভাঙে শাই হোপের সঙ্গে ৬৫ রানের জুটি।
শুরুতেই উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। যদিও ওই ধাক্কা কাটিয়ে ক্যারিবিয়ানদের পথে ফেরান শাই হোপ ও ড্যারেন ব্রাভো। তাদের জুটি ভীতি ছড়াচ্ছিল বাংলাদেশ দলে। কিছুতেই যখন তাদের জুটি ভাঙা যাচ্ছিল না, ঠিক তখনই রুবেলের হাতে বল তুলে দিলেন মাশরাফি। নিজের চতুর্থ বলেই এই পেসার ব্রাভোকে ফিরিয়ে ভাঙেন ৬৫ রানের জুটি। বোল্ড হওয়া ব্রাভো ৪৩ বলে করেছেন ২৭ রান।
দ্বিতীয় বলেই মিরাজের উইকেট
বল হাতে তুলে নেওয়ার দ্বিতীয় ডেলিভারিতেই উইকেট মেহেদী হাসান মিরাজের। এই স্পিনারের বলে প্যাভিলিয়নে ফিরে গেছেন ক্যারিবিয়ান ওপেনার চন্দ্রপল হেমরাজ।
দুই প্রান্তে স্পিন আক্রমণ দিয়ে শুরু করে বাংলাদেশ। প্রথম ওভারে ক্যারিবিয়ান দুই ওপেনারকে কঠিন পরীক্ষায় ফেলেছিলেন সাকিব। আর দ্বিতীয় ওভারে বোলিংয়ে আসা মিরাজ তার দ্বিতীয় বলেই তুলে নেন উইকেট। হেমরাজকে ফেরান তিনি এলবিডাব্লিউয়ের ফাঁদে ফেলে। বাঁহাতি এই ব্যাটসম্যান মাত্র ৩ রান করে ফেরেন প্যাভিলিয়নে।
বাংলাদেশের সংগ্রহ ২৫৫
তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমের পর জ্বলে উঠলো সাকিব আল হাসানের ব্যাট। তিন ব্যাটসম্যানের হাফসেঞ্চুরিতে লড়াই করার মতো পুঁজি পেয়েছে বাংলাদেশ। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে মিরপুরের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে নির্ধারিত ৫০ ওভারে স্বাগতিকরা ৭ উইকেটে করেছে ২৫৫ রান।
পাঁচ সিনিয়র ক্রিকেটার- মাশরাফি, মুশফিক, সাকিব, মাহমুদউল্লাহ ও তামিম একসঙ্গে নেমেছিলেন ‘শততম’ ওয়ানডে খেলতে। উপলক্ষটা ব্যাট হাতে স্মরণীয় করে রাখলেন তামিম-সাকিব-মুশফিক। তবে হাফসেঞ্চুরি করেও ইনিংস লম্বা করতে না পারার হতাশায় পুড়েছেন তারা।
তামিম ৬৩ বলে করেন ৫০ রান। মুশফিকের ব্যাট থেকে এসেছে ৮০ বলে ৬২। আর সাকিব ৬২ বলে খেলেছেন দলীয় সর্বোচ্চ ৬৫ রানের ইনিংস। তাদের সঙ্গে মাহমুদউল্লাহর ৩০ রানে ভর দিয়ে আড়াই শ পার করে বাংলাদেশ।
ক্যারিবিয়ানদের সবচেয়ে সফল বোলার ওশানে থমাস। ১০ ওভারে ৫৪ রান খরচায় তার শিকার ৩ উইকেট। একটি করে উইকেট পেয়েছেন কেমার রোচ, দেবেন্দ্র বিশু, কেমো পল ও রোভম্যান পাওয়েল।
