X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘কোনও পরিস্থিতিতেই আমি হাল ছাড়ার পাত্র নই’

রবিউল ইসলাম, সিলেট থেকে
১৪ জানুয়ারি ২০১৯, ২১:৩১আপডেট : ১৪ জানুয়ারি ২০১৯, ২১:৩৭

লাসিথ মালিঙ্গা মানে ‘ঝাঁকড়া চুলের বাবরি দোলানো’ এক ক্রিকেটার, দুরন্ত গতিতে ব্যাটসম্যানের উইকেট এলোমেলো করে দেওয়া এক ফাস্ট বোলার। শ্রীলঙ্কা দলের সঙ্গে নিউজিল্যান্ড সফরে ছিলেন, তাই বিপিএলের শুরু থেকে খেলতে পারেননি। সোমবার সিলেটে যোগ দিয়েছেন খুলনা টাইটানসের সঙ্গে। সিলেট ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে টিম হোটেলে যেতে যেতে কথা বললেন বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে। ৩৫ বছর বয়সী ডানহাতি পেসারের সঙ্গে আলাপচারিতায় উঠে এলো নানা প্রসঙ্গ।

খুলনা টাইটানসকে প্রতিটি ম্যাচে জয় এনে দিতে চান মালিঙ্গা বাংলা ট্রিবিউন: ক্রিকেটে হাতেখড়ি কীভাবে?

মালিঙ্গা: ৮-৯ বছর বয়সে আমি টেনিস বলে ক্রিকেট খেলা শুরু করি। গলের রাথগামা গ্রামে বন্ধুদের সঙ্গে নদীর পাড়ে নিয়মিত ক্রিকেট খেলতাম। নিজ গ্রামের দেবাপাথিরাজা কলেজে প্রথম ক্রিকেট বলে খেলা শুরু করি। এরপর চম্পকা রামানায়েকের পরামর্শে কলম্বোর ফাস্ট বোলিং একাডেমিতে ভর্তি হই। ২০০১ সালে গল ক্রিকেট ক্লাবে খেলার সুযোগ হয়। সেখানেই প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক। ধারাবাহিক সাফল্য প্রথমে ‘এ’ দল, এরপর জাতীয় দলে সুযোগ করে দেয়। চম্পকা রামানায়েকের জন্যই আজ আমি এখানে।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনি পড়াশোনায় ভালো ছিলেন। তবু ক্রিকেটে কেন?

মালিঙ্গা: উচ্চতর গণিতে আমি খুব ভালো ছিলাম। এখনও ক্রিকেট খেলার পাশাপাশি পড়াশোনা করি। গ্রামের ছেলে হিসেবে ক্রিকেট খেলতে শহরে এসেছিলাম, যে কারণে আমার পড়াশোনা বন্ধ হয়ে যায়। আমি ক্রিকেট খেলতে পেরে গর্বিত এবং খুশি। অনেকে ক্রিকেট খেলে কিছুই করতে পারেনি। কিন্তু আমি জাতীয় দলে খেলতে পেরেছি।

বাংলা ট্রিবিউন: ফাস্ট বোলিংকে কেন বেছে নিলেন?

মালিঙ্গা: সবাই বলে ক্রিকেট ব্যাটসম্যানদের খেলা। কিন্তু আমি সব সময় মনে করি বোলাররা ম্যাচ জেতানো পারফর্ম করতে পারে, ম্যাচের পরিস্থিতি পাল্টে দিতে পারে।

বাংলা ট্রিবিউন: ইয়র্কার কীভাবে রপ্ত করলেন?

মালিঙ্গা: ২০০৪ সালে ওয়ানডে স্কোয়াডে প্রথমবারের মতো সুযোগ পাই। তখন দলে মাহেলা জয়াবর্ধনে ও কুমার সাঙ্গাকারা ছিলেন। বোলিং কোচ হিসেবে চম্পকা রামানায়েকেও ছিলেন। মাহেলা ও সাঙ্গা আমাকে সব সময় বলতেন, ‘নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইলে তোমাকে অন্যদের চেয়ে আলাদা কিছু করতে হবে।’ ওদের কথা শুনে আমি বুঝতে পারি, উন্নতি করতে হলে স্লোয়ার ও ইয়র্কারে দক্ষ হতে হবে।  ধীরে ধীরে আমি ইয়র্কার দিতে দক্ষ হয়ে উঠি।

বাংলা ট্রিবিউন: খুলনা টাইটানসে যোগ দিয়ে কতটা রোমাঞ্চিত?

মালিঙ্গা: আমি যেখানেই খেলি, শতভাগ দিয়ে খেলার চেষ্টা করি। গতবার বিপিএলে রংপুর রাইডার্সে খেলেছিলাম, আমাদের দল চ্যাম্পিয়ন হয়েছিল। এ বছর আমি খুলনা টাইটানসে, এখানে প্রতিটি ম্যাচ জিততে চাই। কোনও পরিস্থিতিতেই আমি হাল ছাড়ার পাত্র নই।

২০১৯ ওয়ানডে এবং ২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলার লক্ষ্য মালিঙ্গার বাংলা ট্রিবিউন: প্রথম চার ম্যাচেই হেরে গেছে খুলনা। ঘুরে দাঁড়াতে আপনি কতটা আশাবাদী?

মালিঙ্গা:  বর্তমান অবস্থার পরিবর্তন হতেই পারে। আইপিএলে আমার এমন অভিজ্ঞতা  হয়েছে। আসলে ক্রিকেটে যে কোনও কিছুই হতে পারে। ক্রিকেটে শেষ বল না হওয়া পর্যন্ত কিছুই অনুমান করা সম্ভব নয়। একবার জিততে শুরু করলে সেটাই অভ্যাসে পরিণত হবে খুলনার। আমি জানি, দলের প্রত্যেকে প্রথম জয়ের জন্য অপেক্ষা করছে। আশা করি, আগামীকাল থেকে শুরু হবে আমাদের জয়যাত্রা।

বাংলা ট্রিবিউন: আবার মাহেলা জয়াবর্ধনের সঙ্গে কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। এ ব্যাপারে আপনার অনুভূতি কী?

মালিঙ্গা: তার সঙ্গে আমি দীর্ঘদিন খেলেছি। আবার আইপিএলে তার কোচিংয়ে মুম্বাই ইন্ডিয়ান্সেও খেলেছি। খুলনার সৌভাগ্য, তার মতো একজন কোচ পেয়েছে। কারণ মাহেলা সব ধরনের পরিস্থিতি বুঝতে পারেন। তরুণ প্রতিভা খুঁজে বের করতেও তিনি দক্ষ। খেলোয়াড় হিসেবে তার দলের অংশীদার হতে পেরে আমি রোমাঞ্চিত।

বাংলা ট্রিবিউন:  জাতীয় দলে আরও কতদিন খেলতে চান?

মালিঙ্গা:  ২০১৯ ওয়ানডে এবং ২০২০ টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে খেলতে চাই। আমি নিয়মিত ভালো পারফর্ম করছি, তাই বিশ্বকাপে খেলার যোগ্যতাও আমার আছে।  আমি দেশের হয়ে খেলতে ভালোবাসি।

বাংলা ট্রিবিউন: অবসরের পর পরিকল্পনা কী?

মালিঙ্গা:  অবসরের পর জাতীয় দলের জন্য ভালো ক্রিকেটার তৈরি করতে চাই, তরুণ খেলোয়াড়দের চাপ নিয়ন্ত্রণ করা শেখাতে চাই, নিজের অভিজ্ঞতা দিয়ে তাদের সব রকম সাহায্য করতে চাই।

বাংলা ট্রিবিউন: তরুণ বোলারদের জন্য আপনার পরামর্শ কী?

মালিঙ্গা: প্রথমত খেলাটা ভালো করে বুঝতে হবে। দ্বিতীয়ত আন্তর্জাতিক পর্যায়ে খেলার মতো ভিন্ন ভিন্ন স্কিল রপ্ত করতে হবে, অর্থাৎ বোলিংয়ে যেন বৈচিত্র্য থাকে।  তৃতীয়ত বোলারদের নির্দিষ্ট কিছু স্কিল অর্জন করতে হবে, যা অন্যদের চেয়ে আলাদা। চতুর্থত ধারাবাহিকতা থাকতে হবে। আর সবশেষে ম্যাচের সময় চাপ নেওয়ার মতো ক্ষমতা অর্জন করতে হবে। চাপের মধ্যে থাকলে একজন পেসার ভুল করে সাধারণত। এগুলো আয়ত্ত করতে পারলে আন্তর্জাতিক মানের পেসার হওয়া সম্ভব।

/আরআই/এএআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা বেড়ে ১৩৭
গাজায় ইসরায়েলি হামলায় নিহত সাংবাদিকের সংখ্যা বেড়ে ১৩৭
কানে ডিভাইস নিয়োগ পরীক্ষার কেন্দ্রে বোন, বাইরে থেকে উত্তর বলার অপেক্ষায় ভাই
কানে ডিভাইস নিয়োগ পরীক্ষার কেন্দ্রে বোন, বাইরে থেকে উত্তর বলার অপেক্ষায় ভাই
কাভার্ডভ্যান-লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই গাড়িতেই আগুন, প্রাণ গেলো একজনের
কাভার্ডভ্যান-লরির মুখোমুখি সংঘর্ষে দুই গাড়িতেই আগুন, প্রাণ গেলো একজনের
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
নিউ ইয়র্কে পুলিশের গুলিতে বাংলাদেশি তরুণ নিহত, যা জানা গেলো
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
বিএনপির ইফতারে সরকারবিরোধী ঐক্য নিয়ে ‘ইঙ্গিতময়’ বক্তব্য নেতাদের
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়