X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

‘বাংলাদেশের ক্রিকেটকে এগিয়ে নিতে দর্শকদের অবদান অনেক’

রবিউল ইসলাম
৩১ জানুয়ারি ২০১৯, ১৫:৫১আপডেট : ৩১ জানুয়ারি ২০১৯, ১৮:০৬

পল স্টারলিং বিপিএলে খুলনা টাইটানসের জার্সিতে দারুণ শুরু হয়েছিল পল স্টারলিংয়ের। কিন্তু রংপুর রাইডার্সের বিপক্ষে তার ৬১ রানের ওই ইনিংস বৃথা যায়। পরে নিজে তো রানে ফিরতেই পারেননি, দলও একের পর এক ব্যর্থতার বৃত্তে ঘুরপাক খেয়েছে। এনিয়ে দ্বিতীয়বার বিপিএল খেলতে এসেছেন আয়ারল্যান্ডের তারকা। এই টুর্নামেন্টে তার অভিজ্ঞতা, সম্প্রতি প্রথম টেস্ট খেলার অনুভূতি ও বাংলাদেশে সময়টা কেমন কাটছে এসব নিয়ে বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে জমালেন আলাপচারিতা:

বাংলা ট্রিবিউন: ক্রিকেটে আপনার শুরুর গল্প জানতে চাই।

স্টারলিং: ১৭ বছর বয়সে আমি মিডলসেক্সের হয়ে খেলা শুরু করি, আর পেছন ফিরে তাকায়নি। দীর্ঘ ১১ বছর সেখানে খেলছি। ক্রিকেট উপভোগ করছি বলেই সেটা পেরেছি। তখন থেকে ক্রিকেটই আমার ধ্যান-জ্ঞাণ।

বাংলা ট্রিবিউন: তবুও কি অন্য কিছু করার সুযোগ ছিল না?

স্টারলিং: সুযোগ হয়তো ছিল। কিন্তু ছোটবেলা থেকেই আমার চারপাশে ক্রিকেট খেলা দেখে বড় হয়েছি। কৈশোর থেকে আমি ক্রিকেট উপভোগ করছি। আমার বাড়ি থেকে ক্রিকেট মাঠ খুব কাছে। এজন্য সবসময় ক্রিকেট ছিল আমার সঙ্গী। মাঠে অনুশীলন করতাম আর ক্রিকেট খেলতাম। বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ক্রিকেটকে ভালোবেসে ফেলি। একটা সময় মনে হয়েছে আমাকে ক্রিকেটারই হতে হবে। ক্রিকেটার হতে পেরেছি বলেই আজ আমি এখানে।

বাংলা ট্রিবিউন: সম্প্রতি আয়ারল্যান্ড অভিষেক টেস্ট খেলেছে। পাকিস্তানের বিপক্ষে ম্যালাহাইডে সেই টেস্ট দলে আপনিও ছিলেন। এই মুহূর্তে টেস্ট নিয়ে আপনার দলের ভাবনা কী?

স্টারলিং: প্রথম টেস্ট জিততে সবাইকেই অপেক্ষা করতে হয়। নবীন হিসেবে এই ফরম্যাট খেলতে নেমে জয় পাওয়া খুব কঠিন। বাংলাদেশ ও জিম্বাবুয়ের মতো দলগুলোও প্রথম জয় পেয়েছে বেশ পরে। আমরা চেষ্টা করবো যতটা সম্ভব তাড়াতাড়ি প্রথম জয়ের স্বাদ নিতে। আগামী মার্চে আফগানিস্তানের বিপক্ষে আমাদের পরের টেস্ট। ওটা আমাদের জন্য দারুণ সুযোগ। আমরা জানি তারা (আফগানিস্তান) কতটা ভয়ঙ্কর দল। তাদের স্পিনাররা বিশ্বমানের। আশা করি আমরা ভালো পারফরম্যান্স করে আফগানিস্তানের বিপক্ষে টেস্ট জয়ের সূচনা করতে পারবো।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনি ছাড়াও উইলিয়াম পোর্টারফিল্ড, এড জয়েস ও ট্রেন্ট জনস্টন আয়ারল্যান্ডকে এগিয়ে নিচ্ছেন। এই মুহূর্তে তরুণরা কতটা প্রস্তুত?

স্টারলিং: আমরা চাই তরুণ ক্রিকেটাররা এগিয়ে আসুক। তাদের হাত ধরে আয়ারল্যান্ডের ক্রিকেট এগিয়ে যাক। আশা করি আগামী কয়েক বছরে দলে অনেক পরিবর্তন আসবে। সম্প্রতি কয়েকজন অবসর নিয়েছে, সামনেও হয়তো কেউ নেবে। তখন তরুণদেরই হাল ধরতে হবে। শূন্যস্থানগুলো তাদের পূরণ করতে হবে।  ১৮ থেকে ২০ বছর বয়সী তরুণরাই আয়ারল্যান্ড ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। এই মুহূর্তে এখানে ওখানে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে অনেক প্রতিভা। প্রতিভাকে উপযুক্ত ট্রেনিংয়ের মাধ্যমে ভবিষ্যতের জন্য তৈরি করতে হবে। তাদের বিকাশের জন্য কাজ করতে হবে। তাদের হাত ধরেই এগিয়ে যাবে আইরিশ ক্রিকেট। সামনে তাদের  কঠিন চ্যালেঞ্জ।

বাংলা ট্রিবিউন: বিপিএলে এর আগে খেলেছেন সিলেট রয়্যালসে। এবার খুলনা টাইটানসে, অভিজ্ঞতা কেমন?

স্টারলিং: আমি বাংলাদেশকে ভালোবাসি, এখানে খেলতেও ভালোবাসি। বিপিএল খেলতে পেরে আমি আনন্দিত। খুলনাকে ভালো অবস্থানে দেখতে পারলে আনন্দটা বেড়ে যেত। এই ফ্র্যাইঞ্চাজি অসাধারণ, আমাদের কোচিং স্টাফও চমৎকার। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত আমরা প্রতিযোগিতা থেকে ছিটকে গেছি। আমি মনে করি বিপিএল বিশ্বের অন্যতম সেরা টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট।

বাংলা ট্রিবিউন: মাহেলা জয়াবর্ধনের মতো কিংবদন্তি ক্রিকেটারের অধীনে খেলতে কেমন লাগছে?

স্টারলিং: মাহেলা অসাধারণ খেলোয়াড়, পাশাপাশি দারুণ কোচ। তার কাছ থেকে অনেক কিছু শেখার আছে। আমি গত কয়েক সপ্তাহে তার কাছ থেকে অনেক কিছু জানার চেষ্টা করেছি। আমি নিশ্চিত আমার ক্রিকেট ক্যারিয়ারে এগুলো প্রয়োগ করতে পারলে দারুণ উপকার পাবো।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনি কি তার কাছ থেকে কোন ব্যাটিং টিপস নিয়েছেন?

স্টারলিং: অবশ্যই, অবশ্যই। কিভাবে মাঠের চারদিকে শটস খেলতে হয়। তিনি আমাকে এই পরামর্শ দিয়েছেন। আশা করি তার পরামর্শগুলো কাজে দেবে। আমার শটের সংখ্যাও বাড়বে।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনি প্রকৃতিগতভাবেই আক্রমণাত্মক ব্যাটসম্যান। বিশেষ করে কুড়ি ওভারের ক্রিকেটে। তরুণদের জন্য কোনও পরামর্শ?

স্টারলিং: মানসিকভাবে স্থিতিশীল থাকতে হবে। বোলারকে দেখে নয়, বলকে দেখে খেলতে হবে। প্রতিটি বলকে পাখির চোখে মূল্যায়ন করতে হবে।

বাংলা ট্রিবিউন: ক্রিকেটে আপনার আইডল কে?

স্টারলিং: আমার প্রিয় ব্যাটসম্যান ড্যামিয়েন মার্টিন। অস্ট্রেলিয়ান এই লিজেন্ডের খেলা আমার খুব পছন্দ। সে যে কোনও মুহূর্তে কঠিন ম্যাচকে সহজ করে দিতে পারতো। তার ব্যাটিং দেখাও চোখকে অনেক শান্তি দিতো।

বাংলা ট্রিবিউন: আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে আপনার অনেক স্মরণীয় মুহূর্ত আছে, তার মধ্যে কোনটিকে আপনি এগিয়ে রাখবেন?

স্টারলিং: ২০১১ সালে বেলফাস্টে পাকিস্তানের বিপক্ষে ইনিংসটা আমার স্মরণীয়। ওই ম্যাচে আমি আমার সর্বোচ্চ চেষ্টা করেছিলাম। সামনেও চাই এমন ইনিংস খেলতে।

বাংলা ট্রিবিউন: ইয়র্কশায়ারের বিপক্ষে লর্ডসে আপনার সেঞ্চুরি আছে, ক্রিকেটের পুণ্যভূমিতে সেঞ্চুরি করে কেমন লেগেছে?

স্টারলিং: হ্যাঁ। ওই সেঞ্চুরি আমার কাছে বিশেষ কিছু। ২০১৭ সালে মিডলসেক্সের হয়ে ওই সেঞ্চুরি আমাকে আত্মবিশ্বাস দিয়েছে লম্বা সংস্করণে খেলার। আমার ক্যারিয়ারের অন্যতম সেরা মুহূর্ত হচ্ছে লডর্সের সেঞ্চুরিটা।

বাংলা ট্রিবিউন: বাংলাদেশের দর্শকদের কেমন দেখছেন?

স্টারলিং: বাংলাদেশ অনেক উন্নতি করেছে ক্রিকেটে। তাদের দর্শকরা আগ্রহ ভরে মাঠে আসে নিজ দলকে সমর্থন জানাতে। সত্যি কথা বলতে বাংলাদেশের এগিয়ে যাওয়ার পেছনে এই দেশের সমর্থকদের ভূমিকা আছে। দর্শকদের এতো সাপোর্ট না পেলে এতো দ্রুত বাংলাদেশ এই পর্যায়ে আসতে পারতো না।

বাংলা ট্রিবিউন: আরেকটা প্রশ্ন, অনেক দিন ধরেই বাংলাদেশে আছেন? বাংলাদেশের খাবারের স্বাদ নিয়েছেন কখনও?

স্টারলিং: আমি বাংলাদেশের খাবার খুব পছন্দ করি। বিরিয়ানি আমার পছন্দের খাবার। তবে বিশেষ পছন্দ মাটন কারি। এরই মধ্যে বাংলাদেশের বিরিয়ানির স্বাদ নিয়েছি। বিভিন্ন খাবারও চেখে দেখেছি। সব মিলিয়ে এখানকার খাবারের স্বাদ অসাধারণ।

/আরআই/এফএইচএম/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
একসঙ্গে ইফতার করলেন ছাত্রলীগ-ছাত্রদলসহ সব ছাত্রসংগঠনের নেতারা
একসঙ্গে ইফতার করলেন ছাত্রলীগ-ছাত্রদলসহ সব ছাত্রসংগঠনের নেতারা
শনিবার সকালে আবার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা বুয়েট শিক্ষার্থীদের
শনিবার সকালে আবার অবস্থান কর্মসূচির ঘোষণা বুয়েট শিক্ষার্থীদের
ইসরায়েল যা যা অস্ত্র চেয়েছিল সব পায়নি: মার্কিন সেনাপ্রধান
ইসরায়েল যা যা অস্ত্র চেয়েছিল সব পায়নি: মার্কিন সেনাপ্রধান
ছুটির দিনে নিউ মার্কেটে জনসমুদ্র
ছুটির দিনে নিউ মার্কেটে জনসমুদ্র
সর্বাধিক পঠিত
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
‘ভারতের কঠোর অবস্থানের কারণেই পিটার হাস গা ঢাকা দিয়েছেন’
‘ভারতের কঠোর অবস্থানের কারণেই পিটার হাস গা ঢাকা দিয়েছেন’
২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেট্রোরেল লাইনের ওপর থেকে ক্যাবল সরানোর অনুরোধ
২৪ ঘণ্টার মধ্যে মেট্রোরেল লাইনের ওপর থেকে ক্যাবল সরানোর অনুরোধ