উলা গুনার সুলশারের ছোঁয়ায় বদলে যাওয়া ম্যানইউর মাঠে কঠিন পরীক্ষায় দারুণ সাফল্য পেলো চোটে জর্জর প্যারিস সেন্ত জার্মেই। ১১ ম্যাচ অজেয় প্রিমিয়ার লিগ ক্লাবকে ভুলে যাওয়া হারের তেতো স্বাদ দিলো ফরাসি চ্যাম্পিয়নরা। মঙ্গলবার ওল্ড ট্র্যাফোর্ডে তারা ২-০ গোলে জিতে ইতিহাস তৈরি করেছে। প্রথম ফরাসি দল হিসেবে ইউরোপিয়ান মঞ্চে ম্যানইউকে তাদের মাটিতে হারালো পিএসজি।
পিএসজির আক্রমণভাগে ছিল বড় ধরনের শূন্যতা। গুরুতর চোটে ছিলেন না নেইমার ও এদিনসন কাভানি। তাদের অভাব পূরণ করার দায়িত্ব কে নেবেন, সেটাই ছিল দেখার বিষয়। আনহেল দি মারিয়া সেই দায়িত্ব পালন করলেন। প্রেসনেল কিমপেম্বে ও কাইলিয়ান এমবাপেকে দিয়ে দুটি গোল করাতেই আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ড রেখেছেন দারুণ অবদান। তাতে ম্যানইউ ক্যারিয়ারে প্রথম হারের অভিজ্ঞতা হলো সুলশারের।
আত্মবিশ্বাসের তুঙ্গে থাকা ম্যানইউর প্রথম সুযোগ শুরুতেই নষ্ট করে পিএসজি। ৩ মিনিটে স্বাগতিকদের ফ্রি কিক বিপদমুক্ত করে তাদের ডিফেন্ডাররা।
কিছুক্ষণ পর ম্যানইউর বক্সে আক্রমণ চালায় পিএসজি। ৬ মিনিটে দি মারিয়ার বাঁকানো শট গোলপোস্টের বাইরে দিয়ে চলে যায়।
এমবাপে ২৮ মিনিটে গোল করতে পারতেন। হুলিয়ান ড্র্যাক্সলারের বাড়িয়ে দেওয়া বলে তিনি শট নেন গোলবারের পাশ দিয়ে। যদিও তিনি ছিলেন অফসাইডে।
প্রথমার্ধের ইনজুরি সময়ের দ্বিতীয় মিনিটে দানি আলভেসের ফ্রি কিক ম্যানইউর ক্রসবারের উপর দিয়ে যায়। প্রথম ৪৫ মিনিট শেষ হয় কোনও গোল ছাড়াই। তবে বিরতিতে যাওয়ার আগে জেসি লিনগার্ড ও অ্যান্থনি মার্সিয়াল চোট নিয়ে মাঠ ছাড়লে বড় ধাক্কা খায় স্বাগতিকরা।
দ্বিতীয়ার্ধে শুরু থেকে পিএসজি চাপে রাখে ম্যানইউকে। ৫৩ মিনিটে তাদের গোলরক্ষক দাভিদ দে গেয়ার কঠিন পরীক্ষা নেন এমবাপে। ডান দিক থেকে আলভেসের ক্রসে তার হেড দারুণ দক্ষতায় মাঠের বাইরে পাঠান স্প্যানিশ গোলরক্ষক।
ওই কর্নার থেকে সর্বনাশ হয় ম্যানইউর। দি মারিয়ার কর্নার থেকে বল ব্যাকপোস্টে আসে, শক্তিশালী শটে দে গেয়াকে পরাস্ত করেন কিমপেম্বে। ১১ ম্যাচ খেলে চ্যাম্পিয়নস লিগে এটি ছিল তার প্রথম গোল।
৫৯ মিনিটে হেরেরার হাফভলি গোলপোস্টের পাশ দিয়ে গেলে ম্যানইউর হতাশা বাড়ে। কিন্তু পরের মিনিটে তারা আরও বড় ধাক্কা খায়। বাঁ দিক থেকে নিচু ক্রসে গোলমুখের সামনে বল পাঠান দি মারিয়া। আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের বাড়িয়ে দেওয়া বলে সহজে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন এমবাপে।
কিছুক্ষণ পরই দ্বিতীয় গোল করতে পারতেন এমবাপে। দে গেয়াকে একা পেয়েও লক্ষ্যভেদে ব্যর্থ হন তিনি। বেশ সময় নিয়ে গোলমুখে শট নিলে ম্যানইউ গোলরক্ষক এক হাতে তাকে ঠেকান। ৮৯ মিনিটে পল পগবা দ্বিতীয় হলুদ কার্ড দেখলে স্বাগতিকদের ম্যাচ শেষ করতে হয়েছে ১০ জন নিয়ে। আগামী ৭ মার্চ পার্ক দে প্রিন্সেসে পিএসজির মুখোমুখি হবে ম্যানইউ।
এদিন শেষ ষোলোর আরেক ম্যাচে এএস রোমা ঘরের মাঠে ২-১ গোলে হারিয়েছে এফসি পোর্তোকে। নিকোলো জানিওলোর জোড়া গোলে জিতেছে ইতালিয়ান ক্লাব। ৭০ ও ৭৬ মিনিটে তার দুটি গোলে এগিয়ে যায় রোমা। যদিও ৭৯ মিনিটে আদ্রিয়ানের গোলশোধে ম্যাচে উত্তেজনা বাড়ায় পোর্তো। কিন্তু হার এড়াতে পারেনি তারা।