ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের (ডিপিএল) চলতি আসরে প্রথম সেঞ্চুরির দেখা পেলেন এনামুল হক। তার শতকে জয়ে ফিরেছে প্রাইম ব্যাংক। এদিকে বৃহস্পতিবারের রাউন্ড দিয়েই প্রথমবার প্রিমিয়ার লিগে নেমেছিলেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। আবাহনীর জার্সিতে শুরুটা করেছেন তিনি জয় দিয়ে। আর লো স্কোরিং ম্যাচে জিতেছে শেখ জামাল।
প্রাইম ব্যাংক-রূপগঞ্জ
বিকেএসপিতে এনামুল হকের সেঞ্চুরিতে সহজ জয় পেয়েছে প্রাইম ব্যাংক। লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে তারা হারিয়েছে ৯ উইকেটে। রূপগঞ্জকে ৪৬.১ ওভারে ১৬৩ রানে অলআউট করে প্রাইম ব্যাংক ১ উইকেট হারিয়ে ১১১ বল হাতে রেখে টপকে যায় লক্ষ্য।
প্রাইম ব্যাংকের বোলারদের সামনে মোটেও সুবিধা করতে পারেননি রূপগঞ্জের ব্যাটসম্যানরা। সর্বোচ্চ ৫২ রান আসে ওপেনার মোহাম্মদ নাঈমের ব্যাট থেকে। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪৭ রান করেছেন উইকেটরক্ষক জাকের আলী। প্রতিপক্ষকে ১৬৩ রানে গুটিয়ে দেওয়ার পথে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন মোহর শেখ, আল-আমিন হোসেন, আরিফুল হক, আব্দুর রাজ্জাক ও অলক কাপালি।
সহজ লক্ষ্য সহজেই টপকে যায় প্রাইম ব্যাংক এনামুলের সেঞ্চুরিতে। আগের ম্যাচে ৩০০ ছাড়ানো স্কোর গড়েও প্রাইম দোলেশ্বরের বিপক্ষে হারতে হয়েছিল, সেই জায়গা থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে তারা পেয়েছে ৯ উইকেটের বড় জয়। এনামুল অপরাজিত থাকেন ১০০ রানে। ১১১ বলের ইনিংসটি তিনি সাজান ১২ চার ও ২ ছক্কায়। রুবেল মিয়া খেলেন ৪৪ রানের ইনিংস। আর জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়ার আগে সুদীপ চ্যাটার্জি অপরাজিত ছিলেন ১৫ রানে। সেঞ্চুরিয়ান এনামুল জিতেছেন ম্যাচসেরার পুরস্কার।
আবাহনী-ব্রাদার্স
মাশরাফি প্রিমিয়ার লিগে ফিরেছেন বৃহস্পতিবার। ফেরাটা জয় দিয়ে রাঙিয়ে নিয়েছেন বাংলাদেশের ওয়ানডে অধিনায়ক। তার দল আবাহনী ১৪ রানে ব্রার্দাস ইউনিয়নকে হারিয়ে পেয়েছে টানা তৃতীয় জয়। আবাহনী নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৬ উইকেটে করেছিল ২৩৬ রান। জবাবে ইয়াসির আলীর সেঞ্চুরিতেও ব্রাদার্সের ইনিংস শেষ হয় ৮ উইকেটে ২২২ রানে।
মিরপুরে টস হেরে ব্যাটিংয়ে নেমে বিপদে পড়ে আবাহনী। ৫৬ রানের মধ্যে তারা হারায় টপ অর্ডারের তিন ব্যাটসম্যানকে। শুরুর বিপর্যয় কাটিয়ে মোসাদ্দেক হোসেন করেন ৫৪ ও নাজমুল হোসেন শান্তর ব্যাট থেকে আসে ৪৪ রান। তবে আবাহনীর স্কোর বাড়ানোর পথে সবচেয়ে বড় অবদান মোহাম্মদ সাইফউদ্দিনের। লোয়ার অর্ডারে এই ব্যাটসম্যান ৪৫ বলে অপরাজিত থাকেন ৫৯ রানে। ঝড়ো ইনিংসটি তিনি সাজান ৪ বাউন্ডারি ও ২ ছক্কায়। মাশরাফি ১৫ বলে ৩ চার ও এক ছক্কায় অপরাজিত থাকেন ২৬ রানে।
ব্রার্দাসের সবচেয়ে সফল বোলার মেহেদী হাসান ও নাঈম ইসলাম জুনিয়র। দুজনই পেয়েছেন ২টি করে উইকেট।
২৩৭ রানের লক্ষ্যে খেলতে নেমে ইয়াসির আলী সেঞ্চুরি করেও জেতাতে পারেননি দলকে। এই ব্যাটসম্যান ১১২ বলে অপরাজিত থাকেন ১০৬ রানে। চমৎকার ইনিংসটি তিনি সাজান ৮ চার ও ২ ছক্কায়। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ২১ রান করেছেন শরিফউল্লাহ।
প্রিমিয়ার লিগে ফিরেই উইকেট পেয়েছেন মাশরাফি। এই পেসার ৩৯ রান দিয়ে পেয়েছেন ২ উইকেট। তার মতো ২ উইকেট পেয়েছেন সাব্বির রহমান। আর ১ উইকেট পেলেও দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ম্যাচসেরা হয়েছেন সাইফউদ্দিন।
শেখ জামাল-শাইনপুকুর
ফতুল্লায় শাইনপুকুরকে ১২ রানে হারিয়েছে শেখ জামাল। কুয়াশার কারণে ৪৬ ওভারে নেমে আসা ম্যাচে ৩৫.১ ওভারে ১০৬ রানে গুটিয়ে যায় শেখ জামাল। এই লক্ষ্যটাই কঠিন হয়ে যায় শাইপুকুরের, ২৯ ওভারে তার অলআউট ৯৪ রানে।
বোলারদের দাপটের ম্যাচে শেখ জামালের সর্বোচ্চ সংগ্রাহক জিয়াউর রহমান। তিনি করেছেন ৪১ রান। শাইনপুকুরের সবচেয়ে সফল বোলার সাব্বির হোসেন। ২৮ রানে তার শিকার ৪ উইকেট। ৩ উইকেট পেয়েছেন শরিফুল ইসলাম।
ব্যাট হাতে কার্যকরী ইনিংসের পর বোলিংয়ে আরও বিধ্বসী রূপে হাজির হন জিয়াউর। এই পেসার ২৩ রানে ৫ উইকেট তুলে নিয়ে গুঁড়িয়ে দেন শাইনপুকরে ব্যাটিং লাইন। ম্যাচসেরার পুরস্কার জেতা জিয়াউরের সঙ্গে সালাউদ্দিন সাকিল ২১ রান খরচায় নেন ৪ উইকেট। তাদের দাপটের সামনে সর্বোচ্চ ২৬ রান করেছেন ওপেনার সাব্বির হোসেন।