বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের মনের অবস্থা বুঝতে সমস্যা হওয়ার কথা নয়। ক্রাইস্টচার্চে সন্ত্রাসী হামলায় প্রাণে বেঁচে দেশে ফিরলেও আতঙ্ক দূর হয়নি তাদের মন থেকে। তা হওয়ার কথাও নয় অবশ্য।
দেশে ফিরে বিমানবন্দরে সংবাদ সম্মেলনে টেস্ট দলের ভারপ্রাপ্ত অধিনায়ক মাহমুদউল্লাহ সবার মনের কথাই তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, ‘এ ঘটনা একেবারেই অপ্রত্যাশিত। এমন ভয়ঙ্কর ঘটনা কারোরই কাম্য নয়।’
নিজেদের ভাগ্যবান উল্লেখ করে এই মিডল অর্ডার ব্যাটসম্যান বলেছেন, ‘আমরা খুব ভাগ্যবান। এমন ঘটনার পরও আমাদের কিছু হয়নি।’
তিনি আরও বলেছেন, ‘কাল সারা রাত আমরা কেউ ঘুমাতে পারিনি। আমাদের শুধু মনে হচ্ছিল, একটু এদিক-ওদিক হলে কী ভীষণ ঘটনাই না ঘটতো!’
এমন দুঃসময়ে পাশে থাকার জন্য ক্রিকেট বোর্ডকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মাহমুদউল্লাহ। সেই সঙ্গে দেশের মানুষের কাছে দোয়া চেয়েছেন তিনি, ‘বিসিবিকে এবং পাপন ভাইকে (বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান) ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমাদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে এনেছেন তারা। দেশবাসীর কাছে আমরা দোয়া চাই। আমরা যেন মানসিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারি সেই দোয়াই চাই তাদের কাছে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান ক্রিকেটারদের পাশে থাকার কথা জানিয়ে বলেছেন, ‘আমরা ওদের বলেছি, এখন খেলা নিয়ে চিন্তা করার দরকার নেই। এখন তোমরা পরিবারের সঙ্গে থাকো, তাদের সঙ্গে সময় কাটাও, কয়েক দিন বিশ্রাম নাও। যেদিন মানসিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারবে, সেদিন আমাদের কাছে এসো।’
শুক্রবার নিউজিল্যান্ডের ক্রাইস্টচার্চের দুটি মসজিদে সন্ত্রাসীরা হামলা চালিয়ে ৪৯ জন নারী-পুরুষ ও শিশুকে হত্যা করে। হামলার স্থান থেকে ৫০ গজ দূরে ছিল তামিম-মুশফিকদের বাস। তৃতীয় টেস্টের ভেন্যু হ্যাগলি ওভাল মাঠের খুব কাছে আল নূর মসজিদে শুক্রবার স্থানীয় সময় বেলা দেড়টার দিকে সন্ত্রাসী হামলা হয়।
অনুশীলন শেষে ওই মসজিদে জুমার নামাজ পড়তে গিয়েছিলেন বাংলাদেশ দলের কয়েকজন। একটু আগে মসজিদে ঢুকলেই নৃশংস ঘটনার শিকার হতেন তারা। সংবাদ সম্মেলনের জন্য মসজিদে যেতে দেরি হওয়ায় বেঁচে যান মুশফিক-তামিমরা। মসজিদে প্রবেশের মুহূর্তে স্থানীয় এক নারী বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সতর্ক করেন গোলাগুলির কথা জানিয়ে। আতঙ্কিত খেলোয়াড়রা তখন দৌড়ে হ্যাগলি ওভালে ফেরত আসেন। ওখান থেকে বাংলাদেশ দলকে বিশেষ নিরাপত্তায় নভোটেল হোটেলে নিয়ে যাওয়া হয়।