মঙ্গলবার বিশ্বকাপের জন্য ১৫ জনের দল ঘোষণা করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড। এই দলে জায়গা নিশ্চিত করা ৬ জন এবারের ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন লিগ খেলছেন আবাহনী লিমিটেডের হয়ে। তাদের সবাই মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের বিপক্ষে দলকে জেতাতে রাখলেন গুরুত্বপূর্ণ অবদান। শীর্ষ দল লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ হেরে যাওয়ায় তাদের সঙ্গে আবাহনীর ব্যবধান আরও কমে গেছে।
অধিনায়ক মোসাদ্দেক হোসেন, সাব্বির রহমান, মোহাম্মদ মিঠুন, মোহাম্মদ সাইফউদ্দিন, সৌম্য সরকার ও মাশরাফি মুর্তজার নৈপুণ্যে মোহামেডানকে ৪৫ রানে হারিয়েছে আবাহনী। সুপার লিগে টানা দ্বিতীয় জয়ে শীর্ষে থাকা লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জের (২২) সঙ্গে দুই পয়েন্টের ব্যবধান কমিয়েছে তারা। দুই দলই খেলেছে ১৩ ম্যাচ, আবাহনীর পয়েন্ট ২০।
সাভারে বিকেএসপির তিন নম্বর মাঠে টস জিতে ব্যাট করতে নামে আবাহনী। সাব্বির, মিঠুন ও মোসাদ্দেকের হাফসেঞ্চুরির পর সাইফউদ্দিন ঝড়ে তারা ৭ উইকেটে করে ৩০৪ রান। এরপর মাশরাফির সঙ্গে বল হাতেও জ্বলে ওঠেন মোসাদ্দেক। দুজনই তিনটি করে উইকেট নিয়ে ৪৬.৩ ওভারে ২৫৯ রানে মোহামেডানকে অলআউট করতে বড় অবদান রাখেন।
৩২ রানে ২ উইকেট হারানো আবাহনী রক্ষা পায় সাব্বির ও ওয়াসিম জাফরের ৭১ রানের জুটিতে। দুজনই টানা ওভারে উইকেট হারান। ওয়াসিমের (১৯) চেয়ে এই জুটিতে সবচেয়ে বেশি অবদান রাখেন সাব্বির। ৫৩ বলে ৫ চার ও ৪ ছয়ে ইনিংস সেরা ৬৪ রান করেন তিনি।
নাজমুল হোসেন শান্তকে নিয়ে ৯১ রানের জুটি গড়ে দলকে বড় সংগ্রহের দিকে নেন মিঠুন। ৩৬ রানে শান্ত বিদায়ের পরের ওভারে আউট হন মিঠুন। তার ৫২ বলে সাজানো ৫৬ রানের ইনিংসে ছিল ৬ চার ও ২ ছয়। ইনিংসের শেষ বলে সাইফউদ্দিন আউট হওয়ার আগে মোসাদ্দেকের সঙ্গে ১০২ রানের জুটি গড়েন। তিনি ৪১ রান করেন ৩৫ বলে চারটি চার মেরে। ৫৪ রানে অপরাজিত ছিলেন মোসাদ্দেক।
মোহামেডানের পক্ষে শফিউল ইসলাম সর্বোচ্চ তিন উইকেট নেন।
বড় লক্ষ্যে নেমে মোসাদ্দেক-মাশরাফির বোলিংয়ে ৬১ রানে ৪ উইকেট হারায় মোহামেডান। ইরফান শুক্কুরকে ফিরিয়ে লিস্ট ‘এ’ ক্রিকেটে ৪০০ উইকেটের ঘরে পৌঁছান মাশরাফি। বিপদে পড়া মোহামেডানকে স্বস্তিতে ফেরায় মোহাম্মদ আশরাফুল ও রকিবুল হাসানের ১২৮ রানের জুটি।
রকিবুলকে ৪ রানের আক্ষেপে পুড়িয়ে তাদের বিচ্ছিন্ন করেন মাশরাফি। ৭৯ বলে ১০ চার ও ৩ ছয়ে ৯৬ রানে আউট হন রকিবুল। আশরাফুলকে ৬৮ রানে ফিরিয়ে পরের ওভারে মোহামেডান অধিনায়ক সোহাগ গাজীকে (২৮) বিদায় করেন সৌম্য। ২৯ রানের ব্যবধানে শেষ ৫ উইকেট হারায় মোহামেডান।
ব্যাটে-বলে অলরাউন্ড পারফর্ম করে ম্যাচসেরা হয়েছেন মোসাদ্দেক।
লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জ-শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব
ফতুল্লার খান সাহেব ওসমান আলী স্টেডিয়ামে সুপার লিগে টানা দ্বিতীয় জয় পেয়েছে শেখ জামাল ধানমন্ডি ক্লাব। টানা ৯ ম্যাচ জেতা লিজেন্ডস অব রূপগঞ্জকে তারা হারিয়েছে ৪ উইকেটে।
এই হারেও শীর্ষস্থান ধরে রেখেছে রূপগঞ্জ। ১৩ ম্যাচে ১৬ পয়েন্ট নিয়ে চার নম্বরে জায়গা পেয়েছে শেখ জামাল।
রূপগঞ্জ টস জিতে ব্যাট করতে নেমে খালেদ আহমেদের বোলিং তোপে ৪৯.৩ ওভারে ১৭১ রানে অলআউট হয়। ইলিয়াস সানির ফিফটিতে ৪৮.৩ ওভারে ৬ উইকেটে ১৭২ রান করে শেখ জামাল।
রূপগঞ্জের পক্ষে মোহাম্মদ নাঈম ইনিংস সেরা ৫৮ রান করেন। খালেদ ৭.৩ ওভারে ৩১ রান দিয়ে নেন ৪ উইকেট। লক্ষ্যে নেমে ইলিয়াসের ৫৮ রানের ইনিংস শেখ জামালের জয়ের ভিত গড়ে দেয়। শেষ দিকে তানভীর হায়দার ৪৩ রানের অপরাজিত ইনিংস খেলে জেতান ধানমন্ডির ক্লাবকে।
রূপগঞ্জের পক্ষে নাবিল সামাদ সর্বোচ্চ ৩ উইকেট নেন। বল হাতে ১ উইকেট নেওয়ার পর ফিফটি হাঁকিয়ে ম্যাচসেরা হন ইলিয়াস।
প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব-প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাব
সুপার লিগে প্রথম জয় পেয়েছে প্রাইম দোলেশ্বর স্পোর্টিং ক্লাব। ঢাকার মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে ৩৮ বল হাতে রেখে তারা প্রাইম ব্যাংক ক্রিকেট ক্লাবকে ৭ উইকেটে হারিয়েছে।
সমান ১৩ ম্যাচ খেলে দুই দলেরই পয়েন্ট ১৬। হেরেও তিনে প্রাইম ব্যাংক, আর পঞ্চম দোলেশ্বর।
টস জিতে ফিল্ডিং নিয়ে ফরহাদ রেজার বোলিংয়ে ৪৮.১ ওভারে ১৬৯ রানে অলআউট হয় প্রাইম ব্যাংক। ব্যাট হাতেও জবাব দেন ফরহাদ, তার সঙ্গে সাইফ হাসানের ফিফটিতে ৪৩.৪ ওভারে ৩ উইকেটে ১৭২ রান করে দোলেশ্বর।
ফরহাদের বোলিং তোপ সামলে কেবল অলক কাপালির ব্যাট হেসেছিল। প্রাইম ব্যাংকের পক্ষে ৬১ রানের সেরা ইনিংস খেলেন কাপালি। ৯.১ ওভারে মাত্র ২২ রান দিয়ে ৪ উইকেট নেন ফরহাদ।
২৪ বলে ৬ চার ও ২ ছয়ে ৪১ রানে অপরাজিত থেকে দোলেশ্বরকে জিতিয়ে ম্যাচসেরা ফরহাদ। ওপেনার সাইফ হাসান করেন ৫৫ রান।