বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রথম ম্যাচের ভেন্যু ওভাল টাইগার ভক্তদের দখলে। ২৫ হাজার ধারণ ক্ষমতার এই ঐতিহাসিক স্টেডিয়াম সেজে উঠেছে লাল-সবুজ পতাকা আর জার্সিতে। ওভাল যেন আজ ইংল্যান্ডের বুকে এক টুকরো মিরপুর। সৌম্য-মুশফিক-সাকিবদের এক একটা শটে উন্মাতাল হয়ে উঠেছে গ্যালারি। প্রতিটি চার-ছক্কায় চিৎকারে ফেটে পড়েছে সারা মাঠ।
লাল-সবুজ জার্সি পড়ে, মাথায় জাতীয় পতাকা বেঁধে প্রবাসীরা এসেছেন ওভালে। কেউ বাঘের রঙে সেজেছেন, কেউ জাতীয় পতাকার রঙে পোশাক পরেছেন। লন্ডন প্রবাসী বাংলাদেশিরা ২০ বছর পর বিশ্বকাপে টাইগারদের ম্যাচ দেখার সুযোগ পেয়ে উচ্ছ্বসিত।
গ্যালারিতে বাংলাদেশের তুলনায় প্রোটিয়া সমর্থকদের সংখ্যা বেশ কম। বাংলাদেশের ব্যাটিং দেখে তারাও অভিভূত। অ্যালেক স্টুয়ার্ট নামে দক্ষিণ আফ্রিকার এক সমর্থক সাকিবের ফিফটির পর হাততালি দিয়ে অভিবাদন জানালেন। অ্যালেক বাংলা ট্রিবিউনকে বললেন, ‘বাংলাদেশ খুব ভালো দল। তারা ভীষণ বিপজ্জনক। তবে আজ আমরাই জিতবো।’
স্থানীয় সময় সকাল ৮টাতেই স্টেডিয়ামে হাজির প্রবাসীরা। শুধু লন্ডন নয়, কার্ডিফ, ম্যানচেস্টার, লিভারপুল থেকেও অনেক বাংলাদেশি এসেছেন খেলা দেখতে। তাদের সবার পথ মিশে গিয়েছিল অন্যতম প্রাচীন ক্রিকেট মাঠ ওভালে।
তৃতীয় উইকেটে সাকিব-মুশফিকের ১৪২ রানের জুটি মন ভরে উপভোগ করেছেন বাংলাদেশের ভক্তরা। তারা সারাক্ষণ বলতে থাকেন, ‘দৌড়া বাঘ আইলো’, ‘খেলবে টাইগার, জিততে টাইগার’, ‘সাকিব-সাকিব’ কিংবা ‘মুশফিক-মুশফিক’। এমনকি ইংল্যান্ডের অনেক মানুষও আজ বাংলাদেশের সমর্থক।
লন্ডন প্রবাসী খোরশেদ বাংলা ট্রিবিউনকে বললেন, ‘দেশের বাইরে থাকি, খেলা দেখার সুযোগ তেমন পাই না। এবার বাংলাদেশের সব ম্যাচ মাঠে বসে দেখার চেষ্টা করবো। আশা করি, দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়ে দারুণভাবে বিশ্বকাপ শুরু করবে বাংলাদেশ।’
যুক্তরাজ্যে তৃণমূল পর্যায়ে ক্রিকেট নিয়ে কাজ করেন বাংলাদেশে কোচ ও সংগঠক শহীদুল আলম রতন। সাকিব-মুশফিকের ছোটবেলার কোচ তিনি। সপরিবারে খেলা দেখতে আসা প্রবাসী এই কোচ জানালেন, ‘নানা কারণে খুব ব্যস্ত ছিলাম। ক্রিকেটারদের সঙ্গে দেখা করতে টিম হোটেলে যেতে পারিনি। আজ মাঠে এসেছি। আশা করি, হাসি মুখে মাঠ ছাড়তে পারবো। ব্যাটিং তো ভালোই হলো। নিয়ন্ত্রিত বোলিং করতে পারলে আমরাই ম্যাচটা জিতবো।’ গ্যালারিতে আছেন মোহামেডান ও ভিক্টোরিয়া ক্লাবের সাবেক পরিচালক লুৎফর রহমান বাদলও। সাকিব-মুশফিকের প্রতিটি শটে উচ্ছ্বাসে ভেসেছেন তিনি।
বাংলাদেশ ব্যাটিংয়ে নিজেদের কাজটা করে রেখেছে। এবার বোলিং ঠিকঠাক করতে পারলে হাসিমুখে বাড়ি ফেরা সম্ভব। প্রবাসী বাংলাদেশিরা তারই অপেক্ষায় এখন!