X
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

সামর্থ্যের সেরাটা দিয়ে উড়ন্ত সূচনা

গাজী আশরাফ হোসেন লিপু
০৩ জুন ২০১৯, ১০:৩৫আপডেট : ০৩ জুন ২০১৯, ১৪:৪৩

 

গাজী আশরাফ হোসেন লিপু। প্রায়ই আমাদের খেলোয়াড়দের বলতে শুনি দল সামর্থ্যের সেরাটা খেলতে পারলে আমরাই ম্যাচে জিতবো। মাহেন্দ্রক্ষণটি নির্বাচনে দারুণ একটা দিন বেছে নিয়েছিলো বাংলাদেশ। এ যাবৎকালের সর্বোচ্চ রান সংগ্রহ করলো তারা এবং বোলাররা সেটি টপকাতে দেয়নি এই ব্যাটিং উপযোগী পিচে। তবে ফিল্ডিংয়ের সেরাটা দিতে পারলে আরও অনেক ব্যবধানে এই ম্যাচ জেতা সম্ভব ছিলো।

ফাফ দু প্লেসি টস জিতে বল করার যে সিদ্ধান্তটি নিয়েছিলেন, তা ছিলো চরম একটি ভুল। তিনি তার প্রথম ম্যাচে ইংল্যান্ডের সঙ্গে এই মন্থর ম্যাচের আচরণকে আমলে নেননি এবং তার দলের বোলিং সামর্থ্যের প্রতি অগাধ আস্থা। একই সঙ্গে আমাদের ব্যাটিং শক্তির গভীরতাকেও তিনি খাটো করে দেখেছেন। সকালের ব্যাটিং সহায়ক পিচে প্রাপ্ত সুযোগটা অসাধারণ দক্ষতায় তাদের ব্যাটিং সামর্থ্যের প্রায় সেরাটা দিয়ে ৩৩০ রানের সর্বোচ্চ রেকর্ডটি করে বিশাল চাপে ফেলে দক্ষিণ আফ্রিকাকে। 

এশিয়ার দুটি দল পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার এমন করুণ ফলাফল দেখে একটা চাপা উদ্বেগ তাড়া করছিলো বাংলাদেশের সমর্থকদের। দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে খেলা ২০ ম্যাচের মাঝে ১৭টিতে হার থাকার কারণে ম্যাচ শুরুর আগে তাই কিঞ্চিতভাবে হলেও দক্ষিণ আফ্রিকাই ফেভারিট ছিলো। তবে আমাদের সাম্প্রতিক ফর্ম দলকে রেখেছিলো আস্থার তুঙ্গে। এই ম্যাচের ব্যাটিংয়ে শর্ট পিচ বলে আমাদের ঘায়েল করার পরিবর্তে উল্টো ঘায়েল হয়েছে দক্ষিণ আফ্রিকা। আর এই কাজটিতে অসাধারণ আস্থার সঙ্গে দুটি চোখ জুড়ানো পুল শট খেলেছেন সৌম্য সরকার, যা ছিলো দিনের সেরা ও ব্যাটের মাঝখান দিয়ে চমৎকার টাইমিংয়ের দুটি শট। যা আমাদের ড্রেসিং রুমে স্বস্তির পরশও ছড়ায়।

দারুণ ব্যাটিং বান্ধব এই পিচে এসে পার্টনারশিপ করার কাজটি করলেন মুশফিক ও সাকিব। তাদের ব্যাটিং দেখে কখনোই মনে হয়নি যে কোনও দক্ষিণ আফ্রিকান বোলার তাদের বিন্দুমাত্র বিচলিত করতে পেরেছেন। সিঙ্গেল ও ডাবলস নেওয়ার ব্যাপারে তারা ছিলেন যথেষ্ট তৎপর। তবে এই দুজন কৌশলী ব্যাটসম্যান ৭০ এর ঘরে আউট হয়ে যাওয়ার পর আক্ষেপে ভুগেছেন ইনিংসের শেষ অবধি ব্যাট করতে পারার সুযোগটা হাতছাড়া করায়। তবে সেই কাজটি অনেক মুন্সিয়ানার সঙ্গে করেছেন মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। দক্ষিণ আফ্রিকান বোলারদের বুকের পাঁজড়ের ওপর তা ছিলো বুলডোজার চালানোর মতো। মোসাদ্দেক তাকে ভালো সঙ্গ দিলেও ত্রিদেশীয় সিরিজের ফাইনালে খেলা সেই আত্মবিশ্বাসী ইনিংসের কাছাকাছি তিনি কাল ছিলেন না।

দক্ষিণ আফ্রিকান পেস বোলাররা লাইন লেন্থে বল করার চেয়ে সূচনাতে শর্ট পিচ বলে মনোযোগী হওয়ায় তারা সফলতার মুখ দেখেনি। গতি ও বাউন্সারে ম্যাচ জিততে চেয়েছিলেন দু প্লেসি। একই পিচে খেলা দ্বিতীয় ম্যাচের পিচের আচরণের প্রতি দাম্ভিকতা প্রদর্শনের ফলও পেয়েছেন। দ্বিতীয়বারের মতো রান চেজ করতে ব্যর্থ হলেন মন্থর ও স্পিন সহায়ক এই পিচে। আাগে ব্যাট করার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করতে ব্যর্থ হওয়ায় তার দেশে তিনি অনেক সমালোচিত হবেন। তবে ভালো লাগছে বাংলাদেশের নৈপুণ্যের চাপে তাদের চোকার বনে যেতে দেখে।

৫ জন বিশেষজ্ঞ বোলার নিয়ে খেললে কিঞ্চিত ঝুঁকি আছে, যে কোনও একজন বোলার খারাপ করলে বা ব্যথা পেলে পার্টটাইমারদের ওপর নির্ভর করতে হবে। সেটা সুখকর না হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি। কাল এনগিদির আহত হয়ে মাঠ ত্যাগ করা বা বোলিংয়ে মাশরাফির অফফর্ম ছিলো এর প্রকৃত উদাহরণ। ভালো ব্যাটিং করতে পারলে দলে ৬জন ব্যাটসম্যানই যথেষ্ট সেই বার্তাটি কাল দিয়েছে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানরা। তবে দলে একজন বিশেষজ্ঞ বোলার বাড়ানোর যে সুযোগ আছে তা সম্ভবত অনুভব করবেন টিম ম্যানেজমেন্ট।

প্রথম ম্যাচের এমন উড়ন্ত সূচনা বাংলাদেশ দলের ও বাংলাদেশের ক্রিকেটের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি। টুর্নামেন্টের মাত্র শুরু, তাই এই ফর্মটাকে হাতে ধরে বাকি পথ চলাই হবে দলের কাছে সবার প্রত্যাশা।

/এফআইআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সার্বিক অগ্রগতির পথে প্রধান বাধা বিএনপি: ওবায়দুল কাদের
সার্বিক অগ্রগতির পথে প্রধান বাধা বিএনপি: ওবায়দুল কাদের
ইউক্রেনে রুশ বিমান হামলায় দুই শিশুসহ নিহত ৮
ইউক্রেনে রুশ বিমান হামলায় দুই শিশুসহ নিহত ৮
হাসপাতালের বদলে শিশুরা ঘুমাচ্ছে স্বজনের কোলে
হাসপাতালের বদলে শিশুরা ঘুমাচ্ছে স্বজনের কোলে
পারটেক্সের বিপক্ষে হেরে রূপগঞ্জ টাইগার্সের অবনমন
পারটেক্সের বিপক্ষে হেরে রূপগঞ্জ টাইগার্সের অবনমন
সর্বাধিক পঠিত
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
নিজ বাহিনীতে ফিরে গেলেন র‍্যাবের মুখপাত্র কমান্ডার মঈন
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
আমানত এখন ব্যাংকমুখী
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
বৈধ পথে রেমিট্যান্স কম আসার ১০ কারণ
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইসরায়েলি হামলা কি প্রতিহত করতে পারবে ইরান?
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!