ব্রাজিলে যাচ্ছেন বাংলাদেশের চার তরুণ ফুটবলার। তাদের শুভকামনা জানানোর অনুষ্ঠানে ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত জানিয়েছেন, বাংলাদেশের জন্য আরও চমক অপেক্ষা করছে।
ব্রাজিলিয়ান ক্লাব গামা ফুটবল একাডেমিতে এক মাসের প্রশিক্ষণে মঙ্গলবার রাতে দেশ ছাড়বেন ফরোয়ার্ড জোগেন লাকরা, দুই মিডফিল্ডার ওমর ফারুক মিঠু ও লতিফুর রহমান নাহিদ এবং ডিফেন্ডার নাজমুল আকন্দ। এই চার ফুটবলারকে শুভকামনা জানাতে আজ (সোমবার) বাফুফে ভবনে আয়োজন করা হয়েছিল সংবাদ সম্মেলন।
সেখানে উপস্থিত ছিলেন ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত জোয়াও তাবাজারা দি অলিভেইরা জুনিয়র। ফুটবলের মাধ্যমে বাংলাদেশ ও ব্রাজিলের সম্পর্ক সুন্দর করার লক্ষ্যের প্রথম ধাপ পূরণ হওয়ার আনন্দ তার চোখেমুখে, ‘ফুটবলের মাধ্যমে দুই দেশের মধ্যে নতুন করে সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে। এই প্রকল্প এখানেই শেষ নয়। ভবিষ্যতে আরও ফুটবলারের প্রশক্ষণ নেওয়ার সুযোগ আছে। আমি ঢাকায় এসে শুরু থেকে চিন্তা করে যাচ্ছিলাম ফুটবলের মাধ্যমে কিছু একটা হোক। অবশেষে সেটা হচ্ছে। এতে আমি খুশি। আশা করছি এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচি তাদের ক্যারিয়ারের জন্য ইতিবাচক হবে।’
চার ফুটবলারের উদ্দেশ্যে এই কূটনৈতিকের প্রত্যাশা, ‘ওরা ব্রাজিলে যাবে। সেখানে ফুটবল প্রশিক্ষণ নেবে। ব্রাজিলের ফুটবল ঐতিহ্য থেকে শুরু করে সবকিছু প্রত্যক্ষ করার সুযোগ আছে। বর্তমানে কোপা আমেরিকা ফুটবল চলছে, এই উৎসবেরও অংশ হবে ওরা।’
গত বছর বিশ্বকাপে বাংলাদেশে ব্রাজিল সমর্থকদের উন্মাদনা দেখে রাষ্ট্রদূত নিজেই অবাক হয়েছিলেন। ব্রাজিলের মতো বাংলাদেশেও যে ফুটবলের সমর্থক কম নয়, তা উল্লেখ করে তিনি বলেছেন, ‘গত বিশ্বকাপে দেখেছি এখানকার ফুটবল উন্মাদনা। আসলে ফুটবল বাংলাদেশের মানুষের হৃদয়ে আছে। আমি যেখানে গেছি, সেখানেই ফুটবলের প্রতি তাদের আলাদা টান দেখেছি।’
রাশিয়া বিশ্বকাপের সময় ঢাকায় এসে ব্রাজিলের একটি টেলিভিশন চ্যানেল থেকে ডকুমেন্টারি হয়েছে। তখন সংবাদ সম্মেলনে ব্রাজিলিয়ান কিংবদন্তি জিকোর ঢাকার আসার কথা বলা হয়েছিল। এবার অবশ্য ব্রাজিলের রাষ্ট্রদূত অন্য কথা শোনালেন, ‘জিকো নানান কাজে ব্যস্ত থাকায় আসতে পারেননি। পরবর্তীতে জাপানের কোচ হওয়াতে তার ব্যস্ততা আরও বেড়ে যায়। তবে বাংলাদেশের ফুটবলের জন্য চমক আছে। এই বছর কিংবা আগামী বছর তা দেখতে পাওয়া যাবে। তবে সেটা কী, এখনও চূড়ান্ত হয়নি। দুদেশের মধ্যে আলোচনার পর ঠিক হবে।’
ব্রাজিল থেকে আসার পর চার তরুণ ফুটবলারকে একাডেমিতে নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেন বাফুফে সভাপতি কাজী সালাউদ্দিন, ‘ব্রাজিলে নতুন অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে ছেলেরা। তারপর দেশে এসে তারা আমাদের একাডেমিতে যোগ দেবে। চার ফুটবলারকে উন্নত প্রশিক্ষণের সুযোগ করে দেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি।’
যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী জাহিদ আহসান রাসেল বলেছেন, ‘স্বপ্নের কেবল শুরু। এক মাসের জন্য যাচ্ছে ওরা। এক বছরের জন্য যেতে পারলে ভালো হতো। তবে বয়স ১৮ বছরের নিচে হওয়ায় সেটা সম্ভব হয়নি। তবে ভবিষ্যতে আরও সুযোগ থাকবে।’
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের আমেরিকাস অনুবিভাগের পরিচালক এম জে এইচ জাবেদ দীর্ঘমেয়াদে প্রজেক্ট নিয়ে কাজ করার কথা শোনালেন, ‘আমাদের এই প্রজেক্টে ব্রাজিলিয়ান রাষ্ট্রদূত অনেক সহায়তা করেছেন। আশা করছি ব্রাজিল থেকে অনেক অভিজ্ঞতা অর্জন করতে পারবে ফুটবলাররা। ভবিষ্যতে আরও অনেকে সুযোগ পাবে।’