X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

সাকিব ভাইয়ের কাছ থেকে প্রতিনিয়ত শিখতে চাই: মিরাজ

রবিউল ইসলাম, ম্যানচেস্টার থেকে
০৮ জুলাই ২০১৯, ১৪:০৯আপডেট : ১০ জুলাই ২০১৯, ০০:০১

মেহেদী হাসান মিরাজ। পেস সহায়ক ইংলিশ কন্ডিশন হওয়ার পরেও স্পিনে সফলতা পেয়েছেন মেহেদী হাসান মিরাজ। খুব বেশি উইকেট না নিলেও রানের গতি কমাতে ব্যাটসম্যানদের বেঁধে রাখতে সক্ষম ছিলেন। বাংলাদেশের বোলারদের মধ্যে সবচেয়ে কৃপণ বোলার ছিলেন (৫.০৮ ইকোনোমি) তিনি। তার এমন সফলতার পেছনে প্রেরণাদায়ী ছিলেন একজন-সাকিব আল হাসান।

বিশ্বকাপে ব্যাট-বলে ধারাবাহিকভাবে মাতিয়েছেন সাকিব। মিরাজ জানালেন সেরাটা দেওয়ার এই প্রেরণা তিনি পেয়েছেন বিশ্বসেরা অলরাউন্ডারের কাছ থেকেই। বিশ্বকাপ মিশন শেষ করে মাশরাফিরা দেশে ফিরে আসলেও ইংল্যান্ডে থেকে গেছেন তিনি। কয়েকটি দিন স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে সময় কাটাবেন। নানা ব্যস্ততার মাঝেও বাংলা ট্রিবিউনের সঙ্গে কথা বললেন তরুণ এই ক্রিকেটার।

বাংলা ট্রিবিউন: ইংল্যান্ডের উইকেটে স্পিনে সাহায্য পাওয়া কঠিন। কিন্তু আপনি সফল হলেন, পরিকল্পনা কী ছিল?

মিরাজ: পুরো বিশ্বকাপে আমি যে পরিকল্পনা করেছিলাম, তার মাঝেই ছিলাম। আমার পরিকল্পনা ছিল ইকোনমি ঠিক রেখে বোলিং করা।  হয়তো আমি বেশি উইকেট পাইনি। উইকেটের জন্য চেষ্টাও করিনি। লাইন ও লেন্থ ঠিক রেখে বোলিং করে যাওয়ার চেষ্টা করেছি।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনার চোখে বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রাপ্তি কী?

মিরাজ: দল ভালো করলে আরও ভালো লাগতো। দল সেমিফাইনালে না যাওয়াতে ভালো লাগছে না। এটাই স্বাভাবিক, আমাদের স্বপ্ন ছিল সেমিফাইনাল খেলবো। দলে ব্যক্তিগত কিছু পারফরম্যান্স আছে, সেগুলো অনেক বড় প্রাপ্তি। সাকিব ভাই অসাধারণ পারফরম্যান্স করেছেন। এরকম পারফরম্যান্স খুব কমই দেখা যায়। ৬০৬ রান ও ১১ উইকেট- এটা আমাদের জন্য অনেক বড় প্রাপ্তি।

বাংলা ট্রিবিউন: সাকিবের খেলাতো খুব কাছ থেকে দেখেছেন, তার কাছ থেকে কী শেখার আছে?

মিরাজ: বিশ্বকাপ শুরুর আগে সাকিব ভাই দুই-আড়াই মাস অনেক পরিশ্রম করেছেন। সেই পরিশ্রম কিন্তু আমরা কেউ দেখিনি। উনি আইপিএলে থাকাকালীন কঠোর পরিশ্রম করেছেন। বিশ্বকাপের জন্য শারীরিক, মানসিকভাবে অনেক ভাবে নিজেকে তৈরি করেছেন। আমরা যখন সাকিব ভাইকে দুই মাস পর দেখি, সবাই অবাক হয়ে গিয়েছিলাম- এতোটা শুকিয়েছিল। পুরো বিশ্বকাপে সে যেভাবে চেয়েছে, সেভাবে পারফর্ম করতে পেরেছে। তার কাছ থেকে আমি প্রতিনিয়ত এসব বিষয় শিখতে চাই। সাকিব ভাইয়ের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে আরও ভালো করতে চাই।

বাংলা ট্রিবিউন: আর কী শিখতে চান?

মিরাজ: তার মানসিক চিন্তা অনেক উঁচু মানের। যখন ক্রিকেট খেলেন, তখন নিজের ধাঁচে ক্রিকেট খেলেন। যেভাবে পছন্দ করেন সেভাবেই কাজ করেন। আমার কাছে মনে হয় উনি বেশি কিছু চিন্তা না করে নিজের জায়গায় থেকে খেলেন। ওনার এই মানসিকতাটা অনুকরণ করার মতো। ওনার মনোভাব ও নিজেকে উজাড় করে দেওয়ার ক্ষমতা অন্যরকম। এগুলো তার কাছ থেকে শিখে নিতে চাই।

বাংলা ট্রিবিউন: স্পিন বোলিং কোচ সুনীল যোশির কাছ থেকে কী শিখেছেন?

মিরাজ: উনি আমাকে বলেন যে, আমাকে ইকোনমি বোলার হতে হবে। বিশ্বের স্পিনার হিসেবে এক নম্বর হতে হবে। সব সময় উৎসাহিত করেন। খেলার ভেতরে, বাইরে পরামর্শ দেন। সাকিব ভাইও সহায়তা করেন। স্পিনার হিসেবে কোন জায়গায় বল ফেললে ভালো হবে তা বুঝিয়ে দেন। তার (সাকিব) বোলিং দেখে অনেক সময় আমি শিখে নিতে পারি, যে কী ধরণের বোলিং করা লাগবে।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনার বোলিংয়ে খুব বেশি বৈচিত্র্য নেই, তবুও সাফল্য পাওয়ার রহস্য কী?

মিরাজ: যদি মানসিকভাবে অনেক শক্তিশালী হওয়া যায় কিংবা চিন্তা করা যে আমি পারবোই- তাহলে যে কোনও কন্ডিশনেই সফল হওয়া সম্ভব। আমি সব সময় চিন্তা করেছি, ইংল্যান্ডে আমাকে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হবে। তারপরও আমাকে সেই চ্যালেঞ্জ নিতে হবে এমন পরিকল্পনা ছিল।

বাংলা ট্রিবিউন: কোন ব্যাটসম্যানের বিপক্ষে বোলিং করা কঠিন মনে হয়েছে?

মিরাজ: কোনও ব্যাটসম্যানকে কঠিন মনে হয়নি। কারণ আমি নিজেকে ওভাবে তৈরি করেছি। মনোবল শক্ত রেখেছি। সব সময় নিজের সঙ্গে নিজে কথা বলেছি। এরকম চিন্তায় বোলিং করে সফলতা পেয়েছি। মাথায় ছিল যত বড় ব্যাটসম্যানই হোক আমি আধিপত্য বিস্তার করার চেষ্টা করবো। এটাই আমার কাজকে সহজ করে দিয়েছে।

বাংলা ট্রিবিউন: বিশ্বকাপে আপনার সেরা উইকেট কোনটিকে রাখবেন?

মিরাজ: অবশ্যই ফাফ দু প্লেসির উইকেটটি।

বাংলা ট্রিবিউন: বার্মিংহামে ভারতের বিপক্ষে ম্যাচটি ছিল বাঁচা-মরার লড়াই। ওই ম্যাচটি হেরে যাওয়ার পর ড্রেসিং রুমের অবস্থা কেমন ছিল?

মিরাজ: ওই হারটা মেনে নেওয়া কষ্টকর ছিল। একটা বড় টুর্নামেন্ট খেলতে এসে, এভাবে বিদায় নেওয়াটা সবার জন্যই কঠিন ছিল। আমাদের সবার স্বপ্ন ছিল সেমিফাইনাল খেলবো। খেলোয়াড় হিসেবে সবার মন খারাপ ছিল। এখন এগিয়ে যেতে হবে। এটা নিয়ে বসে থাকলে সামনের ফলও খারাপ হবে।

বাংলা ট্রিবিউন: প্রথমবারের মতো লর্ডসে খেললেন, অনুভূতিটা কেমন ছিল?

মিরাজ: সবার স্বপ্ন থাকে লর্ডসে খেলার। আমারও স্বপ্ন ছিল এখানে খেলার। স্মরণীয় দিন হয়ে থাকবে, কারণ এখানে বাংলাদেশের প্রথম ওয়ানডের প্রথম বলটা আমি করেছি। 

বাংলা ট্রিবিউন: কম্পিউটার অ্যানালিস্ট শ্রীনিবাস চন্দ্রশেখরের সঙ্গে বোলিং নিয়ে কথা হয় কিনা?

মিরাজ: আমি সব সময় ওর (শ্রীনি) সঙ্গে বোলিং নিয়ে কথা বলি, আমার বোলিং খারাপ হচ্ছে কোথায়? সেটা ভালো হলেও বলি। আগের ম্যাচগুলোর সব ভিডিও ওর থেকে নেওয়ার চেষ্টা করি। ভালো বোলিংয়ের ভিডিও নিয়ে আত্মবিশ্বাস বাড়ানোর চেষ্টা করি। আর খারাপ বোলিংয়ের ভিডিও নিয়ে ভুলগুলো শুধরে নেই।

/এফআইআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখলে আমাদের লজ্জা হয়: শাহবাজ
বাংলাদেশের উন্নয়ন দেখলে আমাদের লজ্জা হয়: শাহবাজ
৬ ম্যাচ পর জয় দেখলো বেঙ্গালুরু 
৬ ম্যাচ পর জয় দেখলো বেঙ্গালুরু 
সাদি মহম্মদ স্মরণে ‘রবিরাগ’র বিশেষ আয়োজন
সাদি মহম্মদ স্মরণে ‘রবিরাগ’র বিশেষ আয়োজন
‘নীরব এলাকা’, তবু হর্নের শব্দে টেকা দায়
‘নীরব এলাকা’, তবু হর্নের শব্দে টেকা দায়
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা