X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৩ বৈশাখ ১৪৩১

‘হার না মানার পণ নিয়ে কলকাতার মাঠে নেমেছিলাম’

তানজীম আহমেদ, চট্টগ্রাম থেকে
২০ অক্টোবর ২০১৯, ১৯:০১আপডেট : ২০ অক্টোবর ২০১৯, ১৯:২৮

ইনজুরি থেকে সেরে ১৪ মাস পর ফিরলেন জাতীয় দলে। এবং এক কথায় রাজসিক প্রত্যাবর্তন! ডিফেন্ডার হয়েও ভুটানের বিপক্ষে জোড়া গোল করে জয় এনে দিয়েছেন বাংলাদেশকে। এরপর ভারতের বিপক্ষে বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে লড়াই করেছেন জীবন বাজি রেখে। ম্যাচের শুরুতে প্রতিপক্ষের এক ফরোয়ার্ডের আঘাতে কপাল কেটে যায় তার। মাথায় ব্যান্ডেজ নিয়ে পুরো ম্যাচ খেলেছেন বীরত্বের সঙ্গে, রুখে দিয়েছেন সুনীল ছেত্রীকে নিয়ে গড়া শক্তিশালী আক্রমণভাগ। এ মুহূর্তে বাংলাদেশের ফুটবলে ‘লড়াইয়ের প্রতীক’ ইয়াসিন খান সেদিনের অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিলেন সাংবাদিকদের সঙ্গে।

ভারতের বিপক্ষে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন ইয়াসিন প্রশ্ন: কলকাতার সল্ট লেক স্টেডিয়ামে দুর্দান্ত পারফরম্যান্সের পর তো প্রশংসার জোয়ারে ভাসছেন।

ইয়াসিন: আমি শুধু নিজের দায়িত্ব পালন করেছি, কোচের নির্দেশ অনুযায়ী খেলার চেষ্টা করেছি। হার না মানার পণ নিয়ে মাঠে নেমেছিলাম। লক্ষ্যপূরণে শেষ পর্যন্ত লড়াই করেছি।

প্রশ্ন:  ম্যাচের শুরুতে ভারতের ফরোয়ার্ড আশিকের কনুইয়ের আঘাতে কপাল কেটে রক্ত ঝরছিল। তবু মাঠ ছেড়ে যাননি। কেন?

ইয়াসিন: আসলে মাথায় আঘাত পাওয়ার কিছু বুঝে উঠতে পারছিলাম না। তখন মাথা কাজ করছিল না। মাঠের বাইরে গিয়ে কোনও রকমে চিকিৎসা নিয়ে খেলায় ফিরে আসি। আমি তখন মাঠের বাইরে চলে গেলে দলের বড় ক্ষতি হতে পারতো। আমাদের ডিফেন্স লাইনে তেমন অভিজ্ঞ খেলোয়াড় নেই। আমি না থাকলে সেই জায়গায় অন্য কারও মানিয়ে নিতে সমস্যা হতো। অবশ্য আমার মধ্যে ভালো খেলার জেদও কাজ করছিল।

প্রশ্ন:  কোচ জেমি ডে তখন কী বলেছিলেন?

ইয়াসিন: কোচ বলেছিলেন তুমি পারবে। তিনি আমাকে মানসিক শক্তি জুগিয়েছেন। কষ্ট হলেও শেষ পর্যন্ত নিজের দায়িত্ব পালন করেছি। সুনীল-মানবিরদের সেভাবে খেলার সুযোগ দেইনি।

কলকাতার সল্ট লেক স্টেডিয়ামে মাথায় ব্যান্ডেজ বেঁধে ইয়াসিনের অবিস্মরণীয় লড়াই প্রশ্ন: আপনার মাথায় ব্যান্ডেজ লাগিয়ে খেলার ছবি তো ফেসবুকে ভাইরাল। অনেকেই  প্রশংসা করছেন।

ইয়াসিন: হ্যাঁ, অনেকেই অভিনন্দন জানিয়েছেন। আসলে আমি শুধু নিজের দায়িত্ব পালন করেছি, দলের প্রয়োজনে লড়াই করেছি।

প্রশ্ন: মাঝে অনেকদিন আপনার পারফরম্যান্স ভালো ছিল না। কারণ কী?

ইয়াসিন: ইনজুরি ও অন্যান্য কারণে নিজের শতভাগ দিতে পারিনি। তবে গত মৌসুমে ঘরোয়া ফুটবলে ভালোই খেলেছিলাম। সেজন্যই হয়তো জেমি ডে জাতীয় দলে আবার সুযোগ দিয়েছেন।

প্রশ্ন: মাঠের বাইরে কিছু কারণেও তো সময়টা ভালো যায়নি আপনার?

ইয়াসিন: হ্যাঁ, ২০১৬ সালে জাতীয় দলে শৃঙ্খলা ভঙ্গের কারণে শাস্তি পেয়েছিলাম। সে সব দিনের কথা ভুলে যেতে চাই। সবার ক্যারিয়ারেই উত্থান-পতন আছে। আমি এখন আগের চেয়ে অনেক সচেতন।

প্রশ্ন: এই সচেতন বোধটা কীভাবে এসেছে?

ইয়াসিন: দুঃসময়ে পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে অনেক সহযোগিতা পেয়েছি। তাছাড়া নিজের মধ্যেও মাঠে ফেরার জেদ ছিল। সব কিছু মিলে জাতীয় দলে আবার জায়গা করে নিয়েছি।

প্রশ্ন: এক সময় জাতীয় দলের ফুটবলাররা দ্বিতীয়ার্ধে লড়াই করতেই পারতেন না। কিন্তু এখন আপনারা ৯০ মিনিট একই ছন্দে খেলে যান। এর রহস্য কী?

ইয়াসিন: ভালো ফিটনেসের কারণে আমরা পুরো ৯০ মিনিট একই গতিতে খেলতে পারছি। ফিটনেসে উন্নতির কারণ, এখন ফুটবল ফেডারেশন আর ক্লাবগুলো আগের চেয়ে অনেক বেশি ফ্যাসিলিটিজ দিচ্ছে। যেমন এখন কোনও অ্যাওয়ে ম্যাচের আগে আমরা দেশের বাইরে অন্তত ১০ দিন কন্ডিশনিং ক্যাম্প করি। দেশেও দুই বেলা নিয়মিত ট্রেনিং করি। তাছাড়া কোচও আমাদের নিয়মিত পর্যবেক্ষণে রাখেন।

জাতীয় দলের অনুশীলনেও বিন্দুমাত্র ছাড় দিতে রাজি নন তিনি প্রশ্ন:  বাংলাদেশ দলে জায়গা পাওয়া এখন কতটা কঠিন?

ইয়াসিন: ভীষণ কঠিন। যে সুযোগ পাচ্ছে, সে-ই ভালো করছে। রিয়াদুল শেষ কয়েকটা ম্যাচে ভালো করেছে। তাই বাদশাকে বসিয়ে দিয়েছেন কোচ। দেখা যাবে, আমি ইনজুরিতে পড়লে আমার জায়গায় যে সুযোগ পাবে সে-ও ভালো করবে।

প্রশ্ন:  বর্তমান দল নিয়ে আপনি কতটা আশাবাদী?

ইয়াসিন: আমাদের দলটা মূলত তারুণ্যনির্ভর। প্রত্যেক পজিশনে মাত্র একজন করে সিনিয়র ফুটবলার আছে। তরুণ সদস্যরা আরও পরিণত হলে, অভিজ্ঞতা অর্জন করলে এই দল অনেক দূর যেতে পারবে।  

/টিএ/এএআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
গরমে রেললাইন বেঁকে যাওয়ার শঙ্কায় ধীরে চলছে ট্রেন
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
মন্দিরে সেলফি তুলতে গিয়ে প্রদীপে দগ্ধ নারীর মৃত্যু
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!
হোটেল রুম থেকে এই ৫ জিনিস নিয়ে আসতে পারেন ব্যাগে ভরে!