X
শুক্রবার, ০৩ মে ২০২৪
১৯ বৈশাখ ১৪৩১

এসএ গেমসে বাংলাদেশকে ব্যর্থ বলতে নারাজ জেমি

তানজীম আহমেদ
১২ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:৪৯আপডেট : ১২ ডিসেম্বর ২০১৯, ১১:৫০

জেমি ডে দারুণ গতিতে ছুটতে ছুটতে হঠাৎ যেন দিগভ্রান্ত বাংলাদেশের ফুটবল। বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে কাতার ও ভারতের সঙ্গে দারুণ লড়াইয়ের পর ওমানের বিপক্ষে দাঁড়াতেই পারেনি বাংলাদেশ। এসএ গেমসেও তারা ব্যর্থ, পাঁচ দলের লড়াইয়ে তৃতীয় হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হচ্ছে ব্রোঞ্জ নিয়ে। জেমি ডে অবশ্য দলকে ব্যর্থ বলতে রাজি নন। জাতীয় দলের ইংলিশ কোচের সঙ্গে বাংলা ট্রিবিউনের দীর্ঘ আলাপচারিতায় উঠে এলো এসএ গেমস সহ নানা প্রসঙ্গ।

বাংলা ট্রিবিউন: এসএ গেমসে প্রত্যাশা অনুযায়ী দল ভালো করতে পারেনি। আপনি কীভাবে দেখছেন?

জেমি: হ্যাঁ, প্রত্যাশা ছিল সোনা জয়ের। তা হয়নি। আমরা চার ম্যাচের তিনটিতে ভালো খেলেছি। নেপালের বিপক্ষে তো ভালো খেলেই হারতে হয়েছে। এখানেও একই গল্প। গোল করা যায়নি। যদি আমরা এই গেমস থেকে সোনা জিততে পারতাম তাহলে খুব ভালো হতো। কিন্তু হয়তো এবার সময়টা আমাদের ছিল না।

বাংলা ট্রিবিউন: ভারত-পাকিস্তান ছিল না এই গেমসে। তারপরেও তৃতীয় হতে হয়েছে দলকে!

জেমি: যে কোনও প্রতিযোগিতাই কঠিন। সেখানে যেই দল থাকুক বা না থাকুক। প্রতিটি দলের সুযোগ থাকে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনার মতে ফাইনালে উঠতে না পারার পেছনে মূল কারণ কী?

জেমি: আসলে আমাদের কোয়ালিটি স্ট্রাইকারের অভাব আছে। আর হবেই না বা কেন। খেলোয়াড়রা তো ক্লাবে ঠিক তার পজিশনে খেলতে পারছে না। আমি মনে করি না পারফরম্যান্স খারাপ ছিল। ছেলেরা চেষ্টা করেছে। পরিশ্রমও কম করেনি। সেরাটা দিয়েছে। কিন্তু যতক্ষণ পর্যন্ত আমাদের যোগ্য স্ট্রাইকার না থাকবে, ততক্ষণ পর্যন্ত আমাদের পক্ষে গোল পাওয়া সহজ হবে না।

বাংলা ট্রিবিউন: এসএ গেমসে তো পুরো জাতীয় দলই খেলেছে। তারপরেও সাফল্য না পাওয়াটাকে কী ব্যর্থতা বলবেন না?

জেমি: আমি অনূর্ধ্ব-২৩ দল নিয়ে গেছি। পারফরম্যান্স কিংবা বয়স যাই বলুন না কেন এটাই আমার জাতীয় দল। তবে অন্যদেরও অভিজ্ঞ খেলোয়াড় কম ছিল না। ভুটানের ১৫, নেপালের ৯ ও শ্রীলঙ্কার তো ৮ জন আছে। সুতরাং এই গেমসে সব দলই প্রায় সমান ছিল।

এসএ গেমসে বাংলাদেশকে ব্যর্থ বলতে নারাজ জেমি বাংলা ট্রিবিউন: বিশ্বকাপ বাছাই পর্বে কাতার ও ভারতের বিপক্ষে দল দুর্দান্ত খেলেছে। কিন্তু ওমান ও এরপরে এই গেমসে আশা অনুযায়ী খেলতে পারেনি।

জেমি: আমি মনে করি না তেমনটা হয়েছে। দেখুন, ওমান আমাদের চেয়ে র‌্যাংকিংয়ে অনেক এগিয়ে আছে। আমরা তাদের বিপক্ষে সাধ্যমতো খেলার চেষ্টা করেছি। আর নেপালেও খারাপ খেলেনি দল। সবাই শুধু রেজাল্ট চায়। এখানে প্রশংসা কমই হয়। আমি এতে কিছু মনে করি না। আমি এখনও এখানে এসে অনেক কিছু শিখছি। আমাদের তো একাডেমি কিংবা অবকাঠামো উন্নয়ন বলতে সেভাবে কিছু নেই। তাহলে আমরা উন্নতি করবো কী করে।

বাংলা ট্রিবিউন: তাহলে বর্তমান সময়ে আপনার উপলব্ধি কী?

জেমি: এখানে কোচিং সুবিধাদি সহ অবকাঠামো ততটা ভালো না। মালদ্বীপের জনসংখ্যা কত কম! সেখানে ৩৫০ জন পেশাদার ফুটবলার রয়েছে। তারা তো উন্নতি করছে। যদি সেভাবে পরিকল্পনা নেওয়া যেতো, তাহলে বাংলাদেশের র‌্যাংকিংয়ে আরও উন্নতি করার সুযোগ থাকতো।

বাংলা ট্রিবিউন: আপনি কী হতাশ?

জেমি: না। শেষ ১৪ মাসে দলের পারফরম্যান্স চমৎকার। এই গেমসে দল খারাপ খেলেনি। তবে আমাদের আরও অপেক্ষা করতে হবে। এখনও অনেক কাজ বাকি আছে। যদি আমরা চেষ্টা করতে থাকি, তাহলে একসময় ইতিবাচক ফল সম্ভব।

বাংলা ট্রিবিউন: অনেকে বলছে, আপনি ডিফেন্সিভ পদ্ধতিতে দলকে খেলান। এতে করে প্রয়োজন অনুযায়ী দল আক্রমণাত্মক ফুটবলে সেভাবে অভ্যস্ত হতে পারছে না।

জেমি: আমরা যেসব দলের বিপক্ষে খেলছি, তারা আমাদের চেয়ে র‌্যাংকিংয়ে এগিয়ে আছে। যদি আমরা নির্ভার হয়ে খেলি, তাহলে চার থেকে পাঁচ গোলে হারের সম্ভাবনা থাকে। আর ডিফেন্স জমাট করে প্রতি-আক্রমণে খেলে আমরা তো গোল করার সুযোগ পাচ্ছি। কিন্তু দেখা যায় অধিকাংশ সময় আমরা ব্যর্থ হচ্ছি। এই যেমন গেমসে শেষ ম্যাচে নেপালের বিপক্ষে সুযোগ পেয়েও গোল করতে পারিনি। নেপাল একটি সুযোগ পেয়ে গোল করে ম্যাচ জিতে নিয়েছে।

এসএ গেমসে বাংলাদেশকে ব্যর্থ বলতে নারাজ জেমি বাংলা ট্রিবিউন: আপনি প্রায় বলছেন, আপনার খেলোয়াড়রা ক্লান্ত।

জেমি: হ্যাঁ, এটা তো সত্যি। তারা লম্বা সময় ধরে খেলে আসছে। সেভাবে কোনও বিশ্রাম পাচ্ছে না। এই দেখুন, আমাদের পরবর্তী লক্ষ্য হলো বঙ্গবন্ধু গোল্ডকাপ। অথচ এর আগে খেলোয়াড়রা ঘরোয়া ফুটবলে ব্যস্ত হয়ে পড়বে। আমি আবারও ক্লান্ত একটি দল পাবো।

বাংলা ট্রিবিউন: এই অবস্থা কাটানোর উপায় কী?

জেমি: বিশ্ব ফুটবল কিন্তু এভাবে চলে না। সেখানে ৬ সপ্তাহের বিশ্রাম আছে। ফিফার নির্দিষ্ট সূচিতেই আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলে থাকে। এর বাইরে কেউ খেলে না। এছাড়া খেলোয়াড়দের সেখানে ক্লান্তি কিংবা অবসাদ কাটানোর জন্য ব্যবস্থা থাকে। যা এখানে নেই। যদি এসব ঠিক না থাকে তাহলে উন্নতি করা কঠিন। পৃথিবীর অনেক দুর্বল দেশই পরিকল্পনা করে এগিয়ে গেছে। এই যেমন ভিয়েতনামে একাডেমি ও বিদেশি কোচ এনে নিজেদের উন্নতি করে যাচ্ছে। জাতীয় দলও সাফল্য পাচ্ছে। আসলে বড় ধরনের বিনিয়োগ ছাড়া উপায় নেই।

/টিএ/এফএইচএম/এএআর/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
অপহৃত ১০ বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে আরাকান আর্মি
অপহৃত ১০ বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে আরাকান আর্মি
ধানমন্ডিতে ছাদ থেকে পড়ে গৃহকর্মী আহত 
ধানমন্ডিতে ছাদ থেকে পড়ে গৃহকর্মী আহত 
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে সকার স্কুলের বাছাইয়ে ৩ বাংলাদেশি কিশোর
ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডে সকার স্কুলের বাছাইয়ে ৩ বাংলাদেশি কিশোর
দীর্ঘ অপেক্ষার পর ঢাকায় স্বস্তির বৃষ্টি, কমলো তাপমাত্রা
দীর্ঘ অপেক্ষার পর ঢাকায় স্বস্তির বৃষ্টি, কমলো তাপমাত্রা
সর্বাধিক পঠিত
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পদ্মা নদীতে চুবানো নিয়ে যা বললেন ড. ইউনূস
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষ, খুলনা-মোংলায় শুরু হচ্ছে ট্রেন চলাচল
আরও কমলো সোনার দাম
আরও কমলো সোনার দাম
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক হচ্ছে
অষ্টম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষা অবৈতনিক হচ্ছে
লাউ খেলে মিলবে এই ৮ উপকারিতা
লাউ খেলে মিলবে এই ৮ উপকারিতা