X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

মোবাইল ব্যাংকিংয়ে ‘ইউএসএসডি’র মূল্য নির্ধারণ হচ্ছে

হিটলার এ. হালিম
২২ নভেম্বর ২০১৬, ০৭:২৫আপডেট : ২২ নভেম্বর ২০১৬, ০৭:২৫

মোবাইল ব্যাংকিং মোবাইল ব্যাংকিং খরচ বাড়বে কিনা বা তা নির্ধারণকারী আনস্ট্রাকচার্ড সাপ্লিমেন্টারি সার্ভিস ডাটা (ইউএসএসডি) কোডের ব্যবহার বর্তমানের মতো থাকবে, না ব্যবহারে ‘মূল্য বেঁধে দেওয়া হবে’, তা ঠিক করতে উদ্যোগ নিয়েছে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগ। মোবাইলফোন অপারেটরগুলোর দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে এ বিষয়ে একটি কার্যকর ও গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি চালু করতে চায় মন্ত্রণালয়। কিন্তু কীভাবে তা নির্ধারিত হবে, তার কোনও রূপরেখা এখনও তৈরি হয়নি।

জানা গেছে, এই উদ্যোগ কার্যকর করতে বিভিন্ন বিষয় খতিয়ে দেখবে মন্ত্রণালয়। এখন সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের সঙ্গে আলাপ করে চূড়ান্ত করা হবে বিষয়টি। এর আগে গত ২৬ মে ইউএসএসডি বিষয়ে করণীয় ঠিক করতে বিটিআরসিতে চিঠি পাঠায় মোবাইলফোন অপারেটরগুলোর সংগঠন অ্যামটব। অন্যদিকে মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো আশঙ্কা করে আসছে, এই প্রস্তাবনা বিটিআরসি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুমোদন পেলে টাকা পাঠাতে আরও খরচ বাড়বে গ্রাহকের। যদিও অ্যামটবের মন্তব্য, গ্রাহকের খরচ বাড়বে না। মূলত সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষগুলোর চিঠি চালাচালির ফলেই মন্ত্রণালয় এই উদ্যোগ নিয়েছে বলে জানা গেছে।

জানতে চাইলে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সিনিয়র সহকারী সচিব এম রায়হান আখতার বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ইউএসএসডি কোড ব্যবহারের কাজটি রেভিনিউ শেয়ারিং মডেল হবে, না সেশনভিত্তিক হবে? এটা জটিল একটা বিষয়। তাই সমাধানও সহজ হবে না। বিষয়টি নিয়ে মোবাইলফোন অপারেটর ও মোবাইল আর্থিক সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে দূরত্ব রয়েছে। এসব সমস্যার সমাধানে কোনও করণীয় ঠিক করা যায় কিনা, তা ঠিক করতে মন্ত্রণালয়ে বৈঠক হয়েছে। কাজটি করা হবে কিনা এবং হলেও কী প্রক্রিয়ায় হবে, বৈঠক থেকেই তা ঠিক করা হবে।’

তিনি আরও বলেন, ‘ইউএসএসডি কোড মোবাইল অপারেটরগুলোর সম্পদ। তা ব্যবহারে সব পক্ষই যেন উপকৃত হয়, তা মাথায় রেখেই মন্ত্রণালয় উদ্যোগ নিয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘মোবাইল আর্থিক সেবা ব্যবহারকারীদের খরচ যেন বেড়ে না যায় সে বিষয়টাও মাথায় রাখা হবে। আবার মোবাইল আর্থিক সেবাদাতারাও যেন ক্ষতিগ্রস্ত না হন, সে বিষয়েও মন্ত্রণালয় কনসার্ন থাকবে।’  

উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের জুলাই মাসের পরিসংখ্যান অনুযায়ী বর্তমানে নিবন্ধিত মোবাইল ব্যাংকিং গ্রাহকের সংখ্যা ৩ কোটি ৬ লাখ। এর মধ্যে সিংহভাগ গ্রাহক বিকাশ ও ডাচ-বাংলা ব্যাংকের।

জানা গেছে, মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের আয়ের ৭ ভাগ মোবাইল অপারেটরদের সঙ্গে ভাগাভাগি করে তাদের ইউএসএসডি চ্যানেল ব্যবহার করে মোবাইল আর্থিক সেবা দেওয়ার জন্য। এছাড়া আয়ের প্রায় ৮০ ভাগই পায় মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা এজেন্ট ও পরিবেশক। আর সংশ্লিষ্ট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানটি পায় ১৩-১৬ ভাগ। মোবাইলফোন অপারেটররা যে ৭ ভাগ টাকা পায়, তাদের পরিমাণকে আরও বাড়িয়ে নিতেই অ্যামটব প্রস্তাব পাঠিয়েছে বলে জানা গেছে। এ ক্ষেত্রে তারা রেভিনিউ শেয়ারিং মডেলের পরিবর্তে ইউএসএসডি সেশনবেজড চার্জ আরোপ করতে চায়। এ কারণেই খরচ বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। কেননা মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো কিছু সেবা একেবারে বিনামূল্যে দেয়।

মোবাইল ব্যাংকিং সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলো ব্যালেন্স চেক, পেমেন্ট, এয়ার টাইম রিচার্জ, আন-সাকসেসফুল ট্রান্সজেকশন ও ক্যাশ-ইনের কোনও টাকা চার্জ করে না। কেবল পি টু পি (সেন্ড মানিতে ৫ টাকা), টাকা উত্তোলন করতে ১ দশমিক ৮৫ শতাংশ এবং এটিম বুথ থেকে টাকা তোলার সময় ২ শতাংশ টাকা চার্জ করা হয়।

অ্যামটবের মহাসচিব টিআইএম নূরুল কবীর বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘ইউএসএসডি চ্যানেল হলো মোবাইল অপারেটরগুলোর অন্যতম একটি রিসোর্স। এর কস্ট অব অপরচুনিটি রয়েছে। এটা তো এনগেজড করে রাখতে পারি না। আমরা মনে করছি, এই বিষয়ে স্বচ্ছতার অভাব রয়েছে। প্রতিযোগিতার অভাব রয়েছে। আমরা চাই বিষয়টি প্রতিযোগিতামূলক হোক।’

অ্যামটব সূত্রে জানা গেছে, গত ২৬ মে অ্যামটব বিটিআরসিতে এ বিষয়ক চিঠিটি পাঠায়। চিঠিতে সেশনবেজড চার্জের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, মোবাইলফোন অপারেটররা রেভিনিউ শেয়ারিংয়ের ভিত্তিতে যে টাকা (মোট আয়ের ৭ শতাংশ) পায় সেটা যৌক্তিক করার প্রয়োজন রয়েছে। অ্যামটব নতুন করে যে প্রস্তাব দিয়েছে, তাতে বলা হয়েছে ২ মিনিটের (একটি লেনদেন সম্পন্ন করতে সর্বনিম্ন ১ মিনিট ২০ সেকেন্ড সময় প্রয়োজন হয়) একটি লেনদেনের জন্য দেড় টাকা এবং এসএমএস-এর চার্জের জন্য ২০ পয়সা দিতে হবে অপারেটরদের।

গত ৩০ আগস্ট টেলিকম সাংবাদিকদের সংগঠন টিআরএনবি আয়োজিত এক গোলটেবিল বৈঠকে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম বলেন, ‘মোবাইল ফিনান্সিয়াল সার্ভিসের একচেটিয়া বাজারকে প্রতিযোগিতামূলক বাজারে পরিণত করা হবে। প্রয়োজনে নীতিমালায় পরিবর্তন আনা হবে। এই সেবা নিরাপদ ও কার্যকর করতে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিটিআরসির যৌথ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা করা দরকার। প্রয়োজন হলে বাংলাদেশ ব্যাংক ও বিটিআরসির মধ্যে একটি যৌথ অংশীদারিত্ব প্রতিষ্ঠা করা হবে।’

/এইচএএইচ/এসএনএইচ/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
নির্দেশের পরও হল ত্যাগ করছেন না চুয়েট শিক্ষার্থীরা, বাসে আগুন
নির্দেশের পরও হল ত্যাগ করছেন না চুয়েট শিক্ষার্থীরা, বাসে আগুন
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ
এক কোরাল ৩৩ হাজার টাকায় বিক্রি
এক কোরাল ৩৩ হাজার টাকায় বিক্রি
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা