অ্যান্ড্রয়েডভিত্তিক মোবাইল অ্যাপ্লিকেশন মায়া আপায় বিনিয়োগ করছে বেসরকারি উন্নয়ন সংস্থা ব্র্যাক। প্রযুক্তির মাধ্যমে আরও বেশিসংখ্যক মানুষের প্রতিদিনকার সমস্যামূলক নানা প্রশ্নের জবাবে বিশেষজ্ঞ মতামত পৌঁছে দিতে মায়া আপার সঙ্গে ব্র্যাকের এই উদ্যোগ। পাশাপাশি ব্র্যাকের আরবান ডেভেলপমেন্ট কর্মসূচি একটি পাইলট প্রজেক্টে এই অ্যাপের মাধ্যমে তৈরি পোশাক কারখানার ৫০ হাজার নারীশ্রমিককে সেবাদান করবে। বুধবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে এক অনুষ্ঠানে এই বিষয়ে ব্র্যাক-মায়া আপার চুক্তি স্বাক্ষর হয়েছে।
ব্র্যাক-মায়া আপার এই যৌথ উদ্যোগে দেশের অসংখ্য মানুষ ঘরে বসেই প্রয়োজনীয় পরামর্শ পাবেন এই আশাবাদ ব্যক্ত করে প্রধান অতিথি তারানা হালিম বলেন, টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে পৌঁছতে তথ্যপ্রযুক্তি যে অনন্য ভূমিকা রাখতে পারে, আজকের আয়োজনটি তার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। এরকম সামাজিক উদ্যোগের সঙ্গে আমরা সবসময়ই থাকব।
মায়া আপা হচ্ছে বিভিন্ন বিষয়ে পরামর্শ চাওয়ার এমন একটি ব্যবস্থা, যেখানে যে কেউ নিজের নাম-পরিচয় গোপন রেখে প্রশ্ন করতে পারেন দিনরাত ২৪ ঘণ্টা। এর মাধ্যমে স্বাস্থ্যসংক্রান্তসহ বিভিন্ন মনোসামাজিক এবং আইনি সমস্যা সমাধানের পরামর্শ পাওয়া যায়। কেউ প্রশ্ন পাঠালে সঙ্গে সঙ্গে তা সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞদের প্রোফাইলে চলে যায় এবং সর্বোচ্চ ৩ ঘণ্টার মধ্যে তারা এর জবাব দেন। পরিসংখ্যানে দেখা যায়, ২০১৫ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে মায়া আপার যাত্রা শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত এই প্ল্যাটফর্মে প্রায় দেড় লাখ প্রশ্ন করা হয়েছে। বর্তমানে প্রতিদিন ১০ হাজারেরও বেশি মানুষ এই অ্যাপ ব্যবহার করছে।
চুক্তি স্বাক্ষর উপলক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। ব্র্যাকের স্ট্র্যাটেজি, কমিউনিকেশনস অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট-এর পরিচালক আসিফ সালেহর সঞ্চালনায় এই কার্যক্রমের লক্ষ্য উদ্দেশ্য বর্ণনা করেন ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক ডা.মুহাম্মাদ মুসা। মায়া আপার কর্মকাণ্ড তুলে ধরেন মায়া’র প্রতিষ্ঠাতা আইভি এইচ রাসেল। দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর করেন ডা. মুহাম্মাদ মুসা এবং আইভি এইচ রাসেল।
উদ্যোক্তারা জানান, সারা পৃথিবীতে যে ডিজিটাল বিপ্লব ঘটছে, তার সঙ্গে বাংলাদেশের মানুষকে সংযুক্ত করতে চান তারা। এখানে প্রশ্ন করতে শুধু একটি মোবাইল নম্বরই যথেষ্ঠ, তবে কেউ চাইলে ই-মেইল ঠিকানা ব্যবহার করেও প্রশ্ন করতে পারেন। ফলে ব্যবহারকারীরা সহজে তাদের গোপনীয়তা বজায় রাখতে পারেন। আজ পর্যন্ত এই সেবা ব্যবহারকারীর মধ্যে ৬০ শতাংশ নারী এবং ৪০ শতাংশ পুরুষ। যেকোনও ধরনের অ্যান্ড্রয়েডভিত্তিক স্মার্টফোন অ্যাপ, ওয়েব এবং এসএমএসেও এ সেবাটি পাওয়া যায়। এর মাধ্যমে বাংলাদেশের শহুরে এবং গ্রামীণ মানুষের কাছে তথ্য ও পরামর্শ পৌঁছে দেওয়া সম্ভব। https://goo.gl/LTW2OA লিংকটি ডাউনলোড করে যে কেউ এই সেবা নিতে পারবেন।
ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক ডা. মুহাম্মাদ মুসা এই চুক্তি স্বাক্ষরের যৌক্তিকতা তুলে ধরে বলেন, আমাদের উদ্দেশ্য অধিক সংখ্যক মানুষের কাছে উন্নতমানের সেবা পৌঁছে দেওয়া। তথ্যপ্রযুক্তির সুবিধা নিয়ে মায়া আপার মাধ্যমে আমরা আরো পরিকল্পিত উপায়ে প্রান্তিক মানুষকে সেবা দিতে পারব।
মায়ার প্রতিষ্ঠাতা আইভি এইচ রাসেল বলেন, মায়া আপা এবং আমি ব্র্যাকের এই অঙ্গীকার পেয়ে আনন্দিত। মেশিন লার্নিং, ন্যাচারাল ল্যাঙ্গুয়েজ প্রসেসিংয়ে আমাদের ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং মোবাইল ব্যবহারকারীর অভজ্ঞিতা সমৃদ্ধতর করতে এখন ব্যাপক বিনিয়োগ করা হবে।
প্রসঙ্গত, ইতিমধ্যে রবির সঙ্গে অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে মায়া আপা প্লাস নামে একটি সেবা চালু করা হয়েছে, যার মাধ্যমে ১০ মিনিটের মধ্যেই গ্রাহকরা প্রশ্নের জবাব পাবেন।
/এইচএএইচ/
আরও পড়তে পারেন: অকেজো কম্পিউটার-মোবাইলফোনের গন্তব্য কোথায়?
