তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগের প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলক বলেছেন, অনেকে প্রতিবন্ধিতাকে বাধা মনে করেন। কিন্তু প্রতিবন্ধিতা কোনও বাধা নয়, এটা চ্যালেঞ্জ। শুধু বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ এবং ব্যক্তি, পরিবার ও রাষ্ট্রের সহযোগিতা পেলে তারা শুধু নিজেকেই জয় করে না, বদলে দেয় পুরো পৃথিবী। হয়ে ওঠে অনুকরণীয় ব্যক্তিত্ব। সোমবার রাজধানীর আগারগাঁওয়ের আইসিটি টাওয়ারে বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিল আয়োজিত প্রতিবন্ধীদের জন্য আয়োজিত চাকরি মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
পলক আরও বলেন, ডিজিটাল ডিভাইড যেন গ্রাম-শহর, নবীন-প্রবীণ এমনকি যারা বিভিন্ন প্রকার প্রতিবন্ধিতা নিয়ে জীবনযাপন করছে, তাদের মধ্য যেন কোনও প্রকার বৈষম্য তৈরি না করে সেজন্য আইসিটি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে। তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, আমাদের জাহিদ, যিনি হুইল চেয়ারে বসে তার দুটি হাত ও অদম্য মেধা ব্যবহার করে হাজার হাজার ডলার ইনকাম করে ডিজিটাল বাংলাদেশ বাস্তবায়নে অংশ নেওয়ার পাশাপাশি নিজেকে ছাড়িয়ে যাচ্ছেন। এরকম অজস্র উদাহরণ আপনাদের আশেপাশেই আছে। ওরা আমাদের স্টার্ট-আপ প্রতিযোগিতাসহ সব উদ্ভাবনী কর্মকাণ্ডে লক্ষণীয়ভাবে ভালো করছে। তাই, তাদেরকে তথ্যপ্রযুক্তি খাতে এগিয়ে দিতে ইতিমধ্যে আমরা তথ্যপ্রযুক্তিতে দক্ষতা বৃদ্ধি ও কর্সংস্থানের মাধ্যমে নিউরো ডেভেলপমেন্টাল ডিজ-এবিলিটিসহ সব ধরনের প্রতিবন্ধী ব্যক্তির ক্ষমতায়ন শীর্ষক প্রকল্প গ্রহণ করেছি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে আগামী ৩ বছরে ৩ হাজার প্রতিবন্ধীকে বিশেষায়িত প্রশিক্ষণ প্রদান করা হবে। এ খাতে তাদের সঙ্গে চাকরিদাতাদের সমন্বয় ঘটিয়ে দেওয়ার জন্য আমরা নিয়মিতভাবে ইংরেরি নববর্ষের প্রথম দিনটি তাদের জন্য চাকরি মেলার আয়োজন করছি।
অনুষ্ঠানে প্রতিবন্ধীদের জন্য ‘কথা বলতে চাই’ নামের একটি অ্যাপ উদ্বোধন করা হয়।
মেলায় গত বছরের চাকরি প্রদানকারী মাই আউটসোর্সিংয়ের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানজিরুল বাশার ও ফিফোটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তৌহিদ হোসেনকে ক্রেস্ট দিয়ে সম্মাননা প্রদান করা হয়। বাংলাদেশ কম্পিউটার কাউন্সিলের (বিসিসি) নির্বাহী পরিচালক স্বপন কুমার সরকারের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের অতিরিক্ত সচিব পার্থ প্রতিম দেব, সিএসআইডির নির্বাহী পরিচালক খন্দকার জহুরুল আলমসহ আরও অনেকে।
প্রসঙ্গত, ২০১১ সাল থেকে বিসিসি প্রতিবন্ধীদের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি প্রশিক্ষণ পরিচালনা করে আসছে। এ প্রশিক্ষণ বিসিসির ঢাকা প্রধান কার্যালয়সহ রাজশাহী, খুলনা, চট্টগ্রাম, বরিশাল, সিলেট ও ফরিদপুর জেলার মোট ৭টি কেন্দ্রে এ প্রশিক্ষণ পরিচালনা করছে। বিসিসি থেকে মোট ৫১১ জন প্রতিবন্ধী বিনামূল্যে আইসিটি প্রশিক্ষণ প্রদান করেছে। প্রতিবন্ধীদের আইসিটি প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি প্রশিক্ষিত জনবলের কর্মসংস্থানের জন্য আইসিটি বিভাগ চাকরিদাতা প্রতিষ্ঠান ও প্রার্থীদের মধ্যে সংযোগ স্থাপনের ব্যবস্থা করে থাকে। এজন্যই বিসিসি প্রতিবন্ধীদের জন্য চাকরি মেলার আয়োজন করে আসছে।