X
শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪
১৫ চৈত্র ১৪৩০

ফিরতে চায় সিটিসেল!

হিটলার এ. হালিম
১৭ জানুয়ারি ২০১৮, ০৯:৫৯আপডেট : ১৭ জানুয়ারি ২০১৮, ১০:৪৩

সিটিসেল শূন্য থেকে আবারও প্রতিযোগিতায় ফিরতে চায় মোবাইল নেটওয়ার্ক অপারেটর সিটিসেল। এ জন্য চতুর্থ প্রজন্মের নেটওয়ার্ক তথা ফোরজি নিতে আবেদনও করেছে প্রতিষ্ঠানটি।

জানা গেছে, গত ১৪ জানুয়ারি ফোরজি আবেদনের শেষ দিনে অন্য আরও চার অপারেটরের সঙ্গে আবেদন জমা দেয় সিটিসেল। একইসঙ্গে অপারেটরটি তরঙ্গ (স্পেকট্রাম) পেতেও আবেদন করেছে। আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি তরঙ্গ নিলাম হওয়ার কথা রয়েছে।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশনের (বিটিআরসি)  মহাপরিচালক (লাইসেন্স ও আইন) কে এম শহীদুজ্জামান বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, ‘আপিল বিভাগ নির্ধারিত একটি কমিটির মাধ্যমে সিটিসেলের বকেয়া ডিসমিস করা হয়েছে। তারা বকেয়ার বড় অংশই ইতোমধ্যে পরিশোধ করেছে। বিষয়টি আদালতে শুনানির পর্যায়ে আছে। তাই আদালতের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদি সিটিসেল সব টাকা দিয়ে দেয় এবং আদালতের নির্দেশনা থাকে তাহলে আইনগত কোনও বাধা থাকবে না।’

তিনি আরও বলেন, ‘তবে থ্রিজি লাইসেন্স না থাকায় সিটিসেলকে ফোরজি লাইসেন্স নেওয়ার আগে তরঙ্গ নিলামে অংশ নিয়ে পর্যাপ্ত তরঙ্গ নিতে হবে। তারপর তারা ফোরজি লাইসেন্স নিতে পারবে।’

সূত্রে জানা গেছে, সিটিসেল ফোরজির লাইসেন্স নিয়ে আবারও টেলিকম সেবায় ফিরতে চায়। তবে তাদের এ চাওয়াটা শুধু লাইসেন্স পাওয়ার জন্যও হতে পারে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, অপারেটরটির সবগুলো বিটিএস ও গ্রাহক সেবা কেন্দ্রগুলোও বন্ধ রয়েছে। প্রধান কার্যালয়ে কোনও কর্মী নেই। লাইসেন্স নিয়ে অপারেটরটিকে চালু করতে হলে আবারও বড় ধরনের বিনিয়োগে যেতে হবে। বিনিয়োগে যাওয়ার মতো সেই সক্ষমতা তাদের আছে কিনা তা নিয়েও প্রশ্ন রয়েছে টেলিকম শিল্পের সঙ্গে জড়িতদের। তারা মনে করিয়ে দেন, অপারেটরটি এখনও সরকারের বকেয়া পরিশোধ করতে পারেনি।

সিটিসেলের সাবেক জ্যেষ্ঠ নির্বাহী ও সিটিসেল এমপ্লয়িজ ইউনিয়নের সভাপতি আশরাফুল করিম বলেন, ‘আমরাও শুনেছি সিটিসেল ফোরজির জন্য আবেদন করেছে। তবে সিটিসেলের ফোরজি লাইসেন্স পাওয়া নিয়ে সংশয় আছে। মনে হয় না সিটিসেল নতুন করে তাদের সেবা চালু করবে। শুনেছি মালিক পক্ষ ফোরজির লাইসেন্স পেলে অপারেটরটি বিক্রি করে দেবে। দেশের দু’জন বিশিষ্ট শিল্পপতির নামও শুনতে পাচ্ছি যারা ফোরজি লাইসেন্সসহ সিটিসেলকে কিনতে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। তাদের সঙ্গে বিদেশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানেরও যোগাযোগ হচ্ছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘সিটিসেলে দুই চারজন গার্ড ছাড়া আর কেউ নেই। তারা অফিস পাহারা দেয়। প্রতিষ্ঠানটির বিভিন্ন পর্যায়ের অন্তত ৫০ জন কর্মকর্তা বকেয়া বেতন এখনও বকেয়া রয়েছে। অন্যদের বকেয়া বেতন, প্রভিডেন্ড ফান্ড, গ্র্যাচুইটি ভেঙে ভেঙে কয়েক ধাপে দেওয়া হয়েছে।’

প্রসঙ্গত, ২০১৬ সালের ৩১ জুলাই বিটিআরসি এক বিজ্ঞপ্তিতে সিটিসেলের গ্রাহকদের দুই সপ্তাহের মধ্যে বিকল্প সেবা গ্রহণের অনুরোধ জানায়। সে অনুযায়ী ১৬ আগস্ট পর্যন্ত সময় পান গ্রাহকরা। এরপর সিটিসেল উচ্চ আদালতে গেলে বিষয়টি আদালতের সিদ্ধান্তের ওপর চলে যায়। বিটিআরসির ওই নোটিশের পর আপিল বিভাগে যায় অপারেটরটি। আপিল বিভাগ ২৯ আগস্ট এই অপারেটরকে বকেয়া ৪৭৭ কোটি ৫১ লাখ টাকা দুই কিস্তিতে পরিশোধ করার শর্তে কার্যক্রম চালিয়ে যেতে বলে। এজন্য তারা সময় পেয়েছিল দুই মাস। কিছু বকেয়া পরিশোধের পর সিটিসেল আবেদন নিয়ে আপিল বিভাগে গেলে ওই বছরের ৩ নভেম্বর শর্ত সাপেক্ষে অবিলম্বে অপারেটরটির তরঙ্গ খুলে দেওয়ার নির্দেশ আসে। দুইদিন পেরিয়ে গেলেও তরঙ্গ ফিরে না পেয়ে ফের আদালতে যায় প্রতিষ্ঠানটি। এরমধ্যে তাদের পক্ষ থেকে বকেয়া টাকার মধ্যে ১৪৪ কোটি টাকা পরিশোধ করা হয়। পরে আপিল বিভাগ আদেশ দেন ১৯ নভেম্বরের (২০১৬) মধ্যে সিটিসেল বকেয়ার ১০০ কোটি টাকা পরিশোধ না করলে আবারও তরঙ্গ বন্ধ করে দিতে পারবে বিটিআরসি। এর আগে বকেয়া টাকা পরিশোধ না করায় ২০১৬ সালের ২০ অক্টোবর সিটিসেলের তরঙ্গ স্থগিত করা হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সহায়তায় প্রতিষ্ঠানের প্রধান কার্যালয়ে প্রবেশ করে তরঙ্গ বন্ধের নির্দেশনা বাস্তবায়ন করেন বিটিআরসির কর্মকর্তারা।

এছাড়া সিটিসেলের লাইসেন্স বাতিলের অনুমতি চেয়ে গত বছরের ৮ জুন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগে চিঠি পাঠায় বিটিআরসি। কমিশনের এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর আগে ৮ মে ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের সম্মেলন কক্ষে একটি বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।

অন্যদিকে ২০১৬ সালে বন্ধ হওয়ার পর অপারেটরটি ৬ নভেম্বর ফের চালু হলেও কার্যত তা ছিল কাগজ কলমে সীমাবদ্ধ। কারণ সিটিসেল নম্বর থেকে কোথাও ফোন করা যেত না এবং এসব নম্বরে কোনও ফোনও আসতো না।

আরও পড়ুন:
ইলেক্ট্রিক গাড়িতে ১১ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করবে ফোর্ড

/এমপি/এসএনএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
ভারতের নিখিলের হ্যাটট্রিকে ঊষার বড় জয়
ভারতের নিখিলের হ্যাটট্রিকে ঊষার বড় জয়
বাংলাদেশে আইসিটির ভবিষ্যৎ কেন হুমকির মুখে?  
বাংলাদেশে আইসিটির ভবিষ্যৎ কেন হুমকির মুখে?  
মস্কোতে কনসার্টে হামলা: ৯ সন্দেহভাজনকে আটক করলো তাজিকিস্তান
মস্কোতে কনসার্টে হামলা: ৯ সন্দেহভাজনকে আটক করলো তাজিকিস্তান
চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন
চট্টগ্রামে জুতার কারখানায় আগুন
সর্বাধিক পঠিত
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
অ্যাপের মাধ্যমে ৪০০ কোটি টাকার রেমিট্যান্স ব্লক করেছে এক প্রবাসী!
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
প্রথম গানে ‘প্রিয়তমা’র পুনরাবৃত্তি, কেবল... (ভিডিও)
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
চিয়া সিড খাওয়ার ৮ উপকারিতা
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
নেচে-গেয়ে বিএসএমএমইউর নতুন উপাচার্যকে বরণে সমালোচনার ঝড়
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ
বাড়লো ব্রয়লার মুরগির দাম, কারণ জানেন না কেউ