X
শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪
১৪ বৈশাখ ১৪৩১

‘সবাইকে জানাতে হবে আমরা দক্ষ জনশক্তির দেশ’

হিটলার এ. হালিম
০২ এপ্রিল ২০১৮, ২০:১০আপডেট : ০২ এপ্রিল ২০১৮, ২০:১৬

সৈয়দ আলমাস কবির
সৈয়দ আলমাস কবীর বাংলাদেশ অ্যাসোসিয়েশন অব সফটওয়্যার অ্যান্ড ইনফরমেশন সার্ভিসেসের (বেসিস) নবনির্বাচিত সভাপতি। ২০১৮-২০২০ মেয়াদের নির্বাচনে জয়ী হওয়ার পরে জানালেন বেসিস নিয়ে তার পরিকল্পনার কথা। বললেন, সবাইকে জানাতে হবে আমরা সস্তা শ্রমের নই, দক্ষ জনশক্তির দেশ।

এখন আর কোনও প্যানেল নেই। আমরা সবাই এক।  এখন সবাই এক সঙ্গে কাজ করবো

বাংলা ট্রিবিউন: যুদ্ধ জয় করে নির্বাচনে জয়ী হলেন। আপনার অনুভূতি জানতে চাই।

সৈয়দ আলমাস কবীর: যেকোনও নির্বাচন একটা ভোটযুদ্ধ তো বটেই। বেসিস নির্বাচনে ব্যতিক্রমী বিষয় হলো এবারের নির্বাচনটি পার্টিসিপেটরি ছিল। বেশি সংখ্যক প্রার্থী অংশ নিয়েছেন। গণতন্ত্রের চর্চা হয়েছে। তিনটা প্যানেল ছিল। স্বতন্ত্র প্রার্থীও ছিলেন। এতে করে বোঝা যায় বেসিস একটা ইন্টারেস্টের জায়গা তৈরি করতে পেরেছে। নির্বাচনের প্রার্থী এবং ভোটারদের মধ্যে একটি সৌহার্দ্যমূলক পরিবেশ বজায় ছিল। সেজন্য আমি আনন্দিত। নির্বাচনের ফল হয়ে গেছে, এখন আর কোনও প্যানেল নেই। এখন আমরা সবাই এক। সবাই এক সঙ্গে কাজ করবো।

বাংলা ট্রিবিউন: নতুন সভাপতি হিসেবে আপনার আগামীদিনের পরিকল্পনা জানতে চাই।

সৈয়দ আলমাস কবীর: দুই বছরের পরিকল্পনা আমি ৫ মিনিটে বলতে চাইছি না। তবে আমি কিছু কাজ অগ্রাধিকারভিত্তিতে করবো বলে ঠিক করেছি। এর প্রথমটি হলো আমি গ্রোথ ইকো সিস্টেম নিয়ে কাজ করতে চাই। আমি একসেস টু ফিন্যান্স, স্থান সংকুলান, বিজনেস প্রসেস ডেভেলপমেন্ট, হিউম্যান রিসোর্স ম্যানেজমেন্ট, দক্ষ জনশক্তি, মার্কেটিং ও বাংলাদেশের ব্র্যান্ডিং নিয়েও কাজ করতে চাই। ছোট কোম্পানি বা ইয়াং কোম্পানিগুলোর সাপোর্ট সিস্টেম কাজ করতে চাই। দ্বিতীয়ত, আমরা স্থানীয় বাজারের দেশিয় কোম্পানির ইন্টারেস্ট রক্ষা করতে চাই। এ নিয়ে কিছু কাজ শুরু করেছি, আরও কিছু কাজ করতে চাই। তৃতীয়ত, আমরা বাজার গবেষণা করতে চাই। ডাটার (তথ্য) অভাব রয়েছে আমাদের। আমাদের কাছে কোনও প্রকৃত ডাটা নেই। আমরা আগামী ৩ মাসের মধ্যে একটা গবেষণা করে ‘একটা গবেষণা পেপার’ প্রকাশ করতে চাই। এর মধ্যে কাজ শুরুও হয়ে গেছে।

বাংলা ট্রিবিউন: প্রকৃত ডাটা বলতে আপনি কী ধরনের ডাটার কথা বলছেন?

সৈয়দ আলমাস কবীর: এই যে আপনারা ১ বিলিয়ন, ৫ বিলিয়ন ডলার আয়ের কথা শুনছেন। কত লোক এই শিল্পে কাজ করেন, স্থানীয় বাজারের আকার কত- এ ধরনের তথ্যের বিপরীতে কোনও তথ্য পাওয়া যায় না। আমরা এই অভাবটা পূরণ করতে চাই। গবেষণার পরে আমরা মিলিয়ে দেখবো যে ১ বিলিয়ন, ৫ বিলিয়ন ডলার আয়ের কথা বলা হচ্ছে প্রকৃত অর্থে সেই আয়ের পরিমাণ কত, পার্থক্য কতটা বা কতটুকু আয় বেশি হয়েছে সেসব তুলনা করতে পারবো। এখন যা বলা হয় ইনফরমাল সার্ভে থেকে নেওয়া। আগামীতে যেটা বলা হবে সেটা ফরমাল সার্ভের ফলই বলা হবে।

বাংলা ট্রিবিউন: এতোদিনেও কেন একটা গবেষণা করা গেল না? সব তথ্যই কি অনুমিত?

সৈয়দ আলমাস কবীর: করা হয়নি আসলে তা নয়। আমরা বেসিস থেকেও একবার করার চেষ্টা করেছি। প্রতি বছর একবার সদস্য কোম্পানিগুলোকে সদস্যপদ নবায়নের সময় কমপ্লায়েন্স ফরম পূরণ করতে দিই। ওখানে অনেক তথ্য দিতে হয়। মুশকিল হচ্ছে, সবাই ঠিকমতো ফরম পূরণ করেন না। তথ্য দিতে চান না। হয়তো ভাবেন আমার তথ্য প্রকাশ হয়ে যাবে। এছাড়া বেসিস একবার করেছে, আইসিটি বিভাগ একবার গবেষণা করেছে। আসলে কোনোটাই কমপ্রিহেন্সিভ গবেষণা ছিল না। এবারেরটা সব মানদণ্ড যেন পূরণ করতে পারে সেই বিষয়টি খেয়াল রাখা হবে।

আমরা সব সময় প্রচার করে এসেছি আমাদের শ্রম খুব সস্তা। এর মানে হলো বাংলাদেশ সস্তায় শ্রমিক কর্মী পাওয়া যায়। এটা ঠিক অ্যাপ্রোচ নয়। ব্র্যান্ডিং করার সময় প্রথমে আমাদের আস্থা তৈরি করতে হবে। বলতে হবে আমাদের এখানে আসো। ভালো কাজ করিয়ে নিতে পারবে। সবাইকে জানাতে হবে আমরা দক্ষ জনশক্তির দেশ

সৈয়দ আলমাস কবির বলছেন তার পরিকল্পনার কথা বাংলা ট্রিবিউন: স্থানীয় সফটওয়্যার নির্মাতাদের সাশ্রয়ী খরচে কাজ করার সুযোগ দেওয়ার কোনও পরিকল্পনা কি আপনার আছে?

সৈয়দ আলমাস কবীর: এরইমধ্যে সফটওয়্যার রফতানিতে ১০ শতাংশ প্রণোদনা ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। আমরা চেষ্টা করবো বেসিসের তালিকাভুক্ত কোম্পানি বা প্রণোদনা প্রাপ্ত কোম্পানিগুলো যেন ৫০ ভাগ কম খরচে ইন্টারনেট কিনতে পারে, বিদ্যুৎ বিলে ছাড় পায় –এরকম উদ্যোগ নেওয়া হবে।  

বাংলা ট্রিবিউন: সফটওয়্যার রফতানি বাড়ানোর জন্য আপনি কী ধরনের উদ্যোগ নেবেন?

সৈয়দ আলমাস কবীর: প্রথম কথা হলো বাংলাদেশকে ব্র্যান্ডিং করতে হবে। এটা দ্রুত করা যাবে না। এমন কি আমার মেয়াদেও করা সম্ভব হবে না। এজন্য ৫-৬ বছর সময় লেগে যেতে পারে কিন্তু শুরুটা এখনই করতে হবে। আমরা সব সময় প্রচার করে এসেছি আমাদের শ্রম খুব সস্তা। এর মানে হলো বাংলাদেশ সস্তায় শ্রমিক কর্মী পাওয়া যায়। এটা ঠিক অ্যাপ্রোচ নয়। ব্র্যান্ডিং করার সময় প্রথমে আমাদের আস্থা তৈরি করতে হবে। বলতে হবে আমাদের এখানে আসো। ভালো কাজ করিয়ে নিতে পারবে। সবাইকে জানাতে হবে আমরা দক্ষ জনশক্তির দেশ। এখানে দক্ষ লোক আছে। এখন এই ব্র্যান্ডিংটাই করতে হবে।

বাংলা ট্রিবিউন: সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

সৈয়দ আলমাস কবীর: বাংলা ট্রিবিউনকে শুভেচ্ছা।

          

/এইচএএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
লাল কৃষ্ণচূড়া, বেগুনি জারুলে ছুঁয়ে যায় তপ্ত হৃদয়
লাল কৃষ্ণচূড়া, বেগুনি জারুলে ছুঁয়ে যায় তপ্ত হৃদয়
টিভিতে আজকের খেলা (২৭ এপ্রিল, ২০২৪)
টিভিতে আজকের খেলা (২৭ এপ্রিল, ২০২৪)
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
সাদি মহম্মদ: ভাইয়ের কান্না, বন্ধুর স্মৃতি, সতীর্থদের গানে স্মরণ…
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
খালি বাসায় ফ্যানে ঝুলছিল কিশোরী গৃহকর্মীর লাশ
সর্বাধিক পঠিত
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
পুলিশের সব স্থাপনায় নিরাপত্তা জোরদারের নির্দেশ
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
সরকারি না হলেও সলিমুল্লাহ কলেজে অধ্যাপক ১৪ জন
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
মৌসুমের সব রেকর্ড ভেঙে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা চুয়াডাঙ্গায়
এগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
ঈদের ছবিএগিয়েছে ‘ওমর’, চমকে দিলো ‘লিপস্টিক’!
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা
কুষ্টিয়ায় এযাবৎকালের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা