X
মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪
৫ চৈত্র ১৪৩০

জীবনের সঙ্গী অ্যাপস

সাদিয়া ইসলাম
২০ মে ২০১৮, ২১:০৭আপডেট : ২০ মে ২০১৮, ২১:০৭

অ্যাপস ২০১৭ সালের মার্চ মাসের হিসাবে, গুগল প্লে স্টোরে সব মিলিয়ে ২৮ লাখ অ্যাপ রয়েছে। অন্যদিকে অ্যাপলের অ্যাপ স্টোর রয়েছে ২২ লাখ অ্যাপ। অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপগুলোর মধ্যে বিশ্বে জনপ্রিয়তার শীর্ষে রয়েছে টুলস, কমিউনিকেশন, ভিডিও প্লেয়ার্স অ্যান্ড এডিট, ভ্রমণ ও স্থানীয় বিভিন্ন অ্যাপ। অন্যদিকে আইওএসের তালিকায় শীর্ষে রয়েছে ইউটিলিটিস, সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং, ছবি, ভিডিও ও গেমভিত্তিক অ্যাপ।
অ্যাপ নিয়ে কাজ করা গবেষণাধর্মী প্রতিষ্ঠান অ্যাপ এনি বলছে, ২০২১ সালে  বৈশ্বিক অ্যাপ মার্কেটের মূল্য দাঁড়াবে ৬ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন ডলার। যা ২০১৬ সালে ছিল ১ দশমিক ৩ ট্রিলিয়ন। অর্থাৎ পাঁচ বছরে বৈশ্বিক অ্যাপ মার্কেটের আকার বাড়বে ৩৮০ শতাংশ।
বাংলাদেশেও অ্যাপের বাজার ক্রমেই বাড়ছে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হিসাব বলছে, বর্তমানে দেশের অ্যাপ মার্কেটের পরিমাণ ৮০০ থেকে ১ হাজার কোটি টাকা। দেশে একদিকে অ্যাপ ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে, অন্যদিকে বাড়ছে নির্মাতার সংখ্যাও। বাংলাদেশ থেকে এখন সরাসরি অ্যাপ স্টোরে অ্যাপ সরবরাহ করা যায়। এতে নির্মাতারা বেশ আগ্রহী হচ্ছেন। ফলে অ্যাপের বাজার আরও বড় হচ্ছে।
বিশ্বজুড়ে অ্যাপের বাজার ঊর্ধ্বমুখী হওয়ার কারণ সম্পর্কে অ্যাপ এনি জানায়, বিশ্বে স্মার্টফোন ব্যবহারকারীর সংখ্যা বাড়ছে। মানুষ এখন অ্যাপে অনেক  বেশি সময় দিচ্ছে। প্রতিষ্ঠানটির গবেষণা বলছে, ব্যবহারকারীরা ২০১৬ সালে অ্যাপে সময় ব্যয় করেছেন ১ দশমিক ৬ ট্রিলিয়ন ঘণ্টা। ধারণা করা হচ্ছে, ২০২১ সালে এটা ৩ দশমিক ৫ ট্রিলিয়ন ঘণ্টায় পৌঁছাবে।

অ্যাপের এই বিপ্লব ঘটার কারণ হলো, মানুষ খুব সহজেই অ্যাপ ব্যবহার করে কাজ করতে পারছে। যেসব সেবা আগে নিজে উপস্থিত থেকে নিতে হতো, সেগুলো এখন ঘরে বসেই নেওয়া সম্ভব হচ্ছে। এতে একদিকে অর্থ ও সময় বেঁচে যাচ্ছে, অন্যদিকে কমছে বাড়তি জটিলতাও। ফলে অ্যাপের প্রতি ঝুঁকছে মানুষ।

অ্যাপ এনির হিসাব বলছে, অ্যাপ ডাউনলোডের দিক থেকে শীর্ষস্থানে রয়েছে চীন। দীর্ঘদিন ধরে এ স্থান দখল করে রেখেছে দেশটি। তালিকায় দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারত। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রকে পেছনে ফেলে দ্বিতীয় অবস্থানে উঠে এসেছে তারা।  তিনে অবস্থান করছে যুক্তরাষ্ট্র।

মূলত অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম জনপ্রিয় হওয়ার পর থেকে অ্যাপ তৈরি ও ব্যবহারের বিপ্লব শুরু হয়। বর্তমানে এমন কোনও বিষয় নেই, যেগুলোর ভিত্তিতে অ্যাপ তৈরি হয়নি। লেখাপড়া, খাওয়া-দাওয়া, খেলাধুলা, ব্যায়াম, চিকিৎসা, যাতায়াত ইত্যাদি সবকিছুরই অ্যাপ রয়েছে এখন।

স্মার্টফোন ব্যবহারকারীরা সেগুলোর সাহায্য নিচ্ছেন নিয়মিত। অ্যান্ড্রয়েড অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারকারীরা আছেন অ্যাপের স্বর্গরাজ্যে। তারা সব ধরনের অ্যাপের সাহায্য নিতে পারেন কোনও জটিলতা ছাড়াই। যেখানে অন্য অপারেটিং সিস্টেম ব্যবহারকারীদের কিছু জটিলতার সম্মুখীন হতে হয়। অবশ্য সময় যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে এসব জটিলতা কমছে।

বর্তমান স্মার্টফোন গ্রাহকরা বেশিরভাগ সময় অ্যাপের ওপরই নির্ভর করেন। বলা যায়, তাদের জীবন অনেকটা অ্যাপনির্ভর হয়ে গেছে। ঘুম থেকে ওঠার মধ্য দিয়ে সবার দিন শুরু হয়। আর অ্যাপ ব্যবহারের শুরুও যেন তখন থেকেই।

সারাদিনে একজন কী করবেন, তা আগে থেকেই ঠিক করে রাখার জন্য রয়েছে ডে প্ল্যানার অ্যাপ। এখানে যে কেউ তার একটা দিনের নির্ধারিত কাজের তালিকা তৈরি করে ফেলতে পারেন। একইসঙ্গে সময়ও বণ্টন করে নিতে পারেন। এরপর ওই অ্যাপই কাজগুলোর কথা মনে করিয়ে দেবে। এতে সঠিক সময়ে সঠিক কাজটি করার তাগিদ বেড়ে যায়, ভুল হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে।

এরপর আসে শরীরচর্চার ব্যাপার। এটাও অ্যাপের সাহায্য নিয়ে আরও সুন্দরভাবে করা যায়। কোন বয়সে কী ধরনের শরীরচর্চা করা দরকার কিংবা নারী-পুরুষভেদে শরীরচর্চায় কী কী বিষয় থাকা উচিত, তা অ্যাপের মাধ্যমে জেনে নেওয়া সম্ভব। তরুণ-তরুণী পছন্দের ভিন্নতার কারণে পাওয়া যাবে বিশেষায়িত কিছু অ্যাপ।

বর্তমানে খাবার গ্রহণের ক্ষেত্রেও পরামর্শমূলক কিছু অ্যাপ রয়েছে। কোন সময়ে কোন খাবার খাওয়া উচিত, কতটুকু খাওয়া উচিত, এসব কিছু অ্যাপেই পাওয়া যায়। বিভিন্ন রোগ ও বয়সের ভিত্তিতে দেওয়া খাবারের তালিকাও বেশ উপকারী।

পরিবহন বা যাতায়াতের ক্ষেত্রেও বিপ্লব এনেছে অ্যাপ। ঢাকাবাসী ইতোমধ্যে এর সঙ্গে বেশ পরিচিত হয়ে উঠেছে। রাইড শেয়ারিং অ্যাপ শুধু যাতায়াত ব্যবস্থার জটিলতাই কমায়নি, বরং সময় ও অর্থ দুটোই বাঁচিয়ে দিচ্ছে। এখন আর পরিবহনের জন্য যাত্রীকে অপেক্ষা করতে হয় না, যাত্রীর জন্য অপেক্ষা করে পরিবহন। অ্যাপভিত্তিক পরিবহন ব্যবস্থায় নির্দিষ্ট গন্তব্যে ঝামেলাহীনভাবে যাওয়া যায়।

সংবাদভিত্তিক এমন কিছু অ্যাপ রয়েছে যেগুলো গ্রাহককে সময়মতো বার্তা পৌঁছে দেয়। এগুলো ব্যবহার করে নির্দিষ্ট সংবাদপত্র পাঠ করা যায় এবং টেলিভিশন দেখাও সম্ভব। এতে সময়ের অপব্যবহার হয় না। যেকোনও সময় যেকোনও স্থানে থেকেই সুবিধাগুলো নেওয়া যায়।

বর্তমানে এমন কিছু গেমিং অ্যাপ রয়েছে, যেগুলো ছেলেবেলায় ফিরিয়ে নিয়ে যায়। হাতের স্মার্টফোনেই পাওয়া যায় দুরন্ত শৈশবের অনুভূতি। 

শিক্ষামূলক কাজের জন্য প্রচুর অ্যাপ রয়েছে। বর্তমানে অ্যাপ স্টোরগুলোতে রয়েছে অসংখ্য ডিকশনারি। এগুলোর সাহায্যে মুহূর্তেই শব্দের অর্থ খুঁজে বের করা সম্ভব। আগে একটা শব্দ খুঁজে পেতে অনেক সময় লাগলেও এখন লিখে সার্চ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে চলে আসে। এতে সময় বাঁচে। এছাড়া ভাষা শেখার অ্যাপ, পেইন্টিং শেখার অ্যাপ, বই খুঁজে পাওয়ার অ্যাপও রয়েছে।

চিকিৎসাসেবার তথ্যও আজকাল অ্যাপে পাওয়া যাচ্ছে। এ ধরনের অ্যাপ দেশে জনপ্রিয়তাও পেয়েছে। ঘরে বসে ডাক্তারের সিরিয়াল নেওয়া, প্রয়োজনীয় প্রাথমিক পরামর্শ এখন অ্যাপের মাধ্যমেই পাওয়া যাচ্ছে। ফলে হাসপাতালে গিয়ে ঘণ্টার পর ঘণ্টা সময় অপচয় করার প্রয়োজন পড়ছে না। এছাড়া জটিলতাও কমেছে অনেক।

/এইচএএইচ/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
সুইডেনের বিপক্ষে পর্তুগাল দলে জায়গা হয়নি রোনালদোর
সুইডেনের বিপক্ষে পর্তুগাল দলে জায়গা হয়নি রোনালদোর
মিয়ানমারের বিমান হামলায় উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ মহাসচিব
মিয়ানমারের বিমান হামলায় উদ্বিগ্ন জাতিসংঘ মহাসচিব
ইনজুরিতে আর্জেন্টিনার প্রীতি ম্যাচে খেলা হচ্ছে না মেসির  
ইনজুরিতে আর্জেন্টিনার প্রীতি ম্যাচে খেলা হচ্ছে না মেসির  
এবার রাজশাহীর আম গাছে প্রচুর মুকুল, স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা
এবার রাজশাহীর আম গাছে প্রচুর মুকুল, স্বপ্ন বুনছেন চাষিরা
সর্বাধিক পঠিত
লিটনের বাদ পড়া নিয়ে যা বললেন হাথুরুসিংহে
লিটনের বাদ পড়া নিয়ে যা বললেন হাথুরুসিংহে
শ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে ওয়ানডে সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ
তৃতীয় ওয়ানডেশ্রীলঙ্কাকে উড়িয়ে ওয়ানডে সিরিজ জিতলো বাংলাদেশ
পদ্মার গ্রাহকরা এক্সিম ব্যাংক থেকে আমানত তুলতে পারবেন
একীভূত হলো দুই ব্যাংকপদ্মার গ্রাহকরা এক্সিম ব্যাংক থেকে আমানত তুলতে পারবেন
সুইডেনের রাজকন্যার জন্য দুটি হেলিপ্যাড নির্মাণ, ৫০০ স্থানে থাকবে পুলিশ
সুইডেনের রাজকন্যার জন্য দুটি হেলিপ্যাড নির্মাণ, ৫০০ স্থানে থাকবে পুলিশ
সঞ্চয়ী হিসাবের অর্ধকোটি টাকা লোপাট করে আত্মগোপনে পোস্ট মাস্টার
সঞ্চয়ী হিসাবের অর্ধকোটি টাকা লোপাট করে আত্মগোপনে পোস্ট মাস্টার