X
শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

‘যেসব কথার কারণে’ আঙুলের ছাপ পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন নিয়ে বিতর্ক

হিটলার এ. হালিম
২৬ মার্চ ২০১৬, ১৫:১৮আপডেট : ২৬ মার্চ ২০১৬, ১৫:২২

বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে (আঙুলের ছাপ) মোবাইলফোনের সিম নিবন্ধন নিয়ে বিতর্ক বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে (আঙুলের ছাপ) মোবাইলফোনের সিম নিবন্ধনকে বিতর্কিত করতে গুজব ছড়ানো হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম। তিনি বলেন, বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধনের কারণে যাদের স্বার্থ ক্ষুণ্ন হচ্ছে তারাই এটা নিয়ে ষড়যন্ত্র করছে। এটা নিয়ে প্রোপাগান্ডা ছড়ানো হচ্ছে। সিম নিবন্ধনে আঙুলের ছাপ নিয়ে জাতীয় পরিচয়পত্রের (এনআইডি) ডাটাবেজে রক্ষিত আঙুলের ছাপের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। কোনওভাবেই তা আলাদা কোথাও সংরক্ষণ করা হচ্ছে না।


তিনি আরও বলেন,আমি জানি কারা এই প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে। যারা হুমকিদাতা, যারা চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসী, অবৈধ ভিওআইপি (ভয়েস ওভার ইন্টারনেট প্রোটোকল) ব্যবসায়ীরা এসব গুজব ছড়িয়ে সাধারণ মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন।কারণ,সিম নিবন্ধনের এই প্রক্রিয়া বন্ধ করতে পারলে তারাই সবচেয়ে লাভবান হবেন।আমি জানি তারা সব রাঘব বোয়াল। কিন্তু রাঘব বোয়াল, কুমির, বাঘে তারানা হালিম ভয় পায় না।

এদিকে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসির তৈরি ‘বায়োমেট্রিক্স ভেরিফিকেশন সিস্টেম সম্পর্কিত নির্দেশনা’ অনুসরণ করেই সিম নিবন্ধন হচ্ছে। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ওই নির্দেশনাই বিতর্কের জন্ম দিয়েছে। নির্দেশনার মধ্যে এমন কিছু কথা রয়েছে যার ব্যাখ্যা অন্যরকমভাবে করছেন যারা গুজব রটনাকারীরা।

সিম নিবন্ধন প্রক্রিয়ার সঙ্গে জড়িত সবাই বলছেন,আঙুলের ছাপ কোথাও সংরক্ষণ করা হচ্ছে না। কিন্তু নির্দেশনার ৬ নম্বর পয়েন্টে বলা হয়েছে, ‘জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্য যাচাইয়ের ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে-

ক. মোবাইল অপারেটর তার অপারেটর্স বায়োমেট্রিক্স ভেরিফিকেশন প্ল্যাটফর্ম-এর মাধ্যমে সিম/রিম বিক্রেতা (রিটেইলার, ডিস্ট্রিবিউটর, কাস্টমার কেয়ার সেন্টার ইত্যাদি) নিম্নলিখিত তথ্য সংগ্রহ করবে-বিক্রেতার পরিচিতি কোড, গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, গ্রাহকের জন্ম তারিখ, গ্রাহকের আঙুলের ছাপ (জাতীয় তথ্যভাণ্ডারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ফরম্যাটে) ও যাচাইযোগ্য মোবাইল নম্বর।

অতঃপর অপারেটর উক্ত জাতীয় পরিচয়পত্র নাম্বার এবং যাচাইযোগ্য মোবাইল নাম্বারের বিপরীতে ভেরিফিকেশনের জন্য সেন্ট্রাল বায়োমেট্রিক্স ভেরিফিকেশন মনিটরিং প্ল্যাটফর্ম থেকে অনলাইন ক্লিয়ারেন্স গ্রহণ করবে।উক্ত অনলাইন ক্লিয়ারেন্স প্রাপ্তি সাপেক্ষে অপারেটর প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভান্ডারের সঙ্গে যাচাইয়ের জন্য প্রেরণ করবে। অপারেটর যাচাইয়ের ফলাফলসহ কিছু তথ্য সেন্ট্রাল বায়োমেট্রিক্স ভেরিফিকেশন মনিটরিং প্ল্যাটফর্মে পাঠাবে। যেসব তথ্য পাঠাতে হবে-বিক্রেতার পরিচিতি কোড, গ্রাহকের জাতীয় পরিচয়পত্র নম্বর, গ্রাহকের জন্ম তারিখ, গ্রাহকের আঙুলের ছাপ (জাতীয় তথ্যভাণ্ডারের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ ফরম্যাটে), যাচাইযোগ্য মোবাইল নম্বর, ট্রান্সজেকশন আইডি, ভেরিফিকেশন তারিখ ও সময় এবং ভেরিফিকেশনের ফলাফল। জাতীয় পরিচয়পত্রের তথ্যভাণ্ডার থেকে ফলাফল প্রাপ্তি সাপেক্ষে সেন্ট্রাল বায়োমেট্রিক্স ভেরিফিকেশন মনিটরিং প্ল্যাফর্মে তথ্য প্রেরণের পরেই উক্ত সিম/রিম ভেরিফিকেশন সম্পন্ন হয়েছে বলে গণ্য করা হবে।

নির্দেশনায় আরও বলা হয়েছে, জাতীয় পরিচয়পত্র সংক্রান্ত তথ্য জাতীয় পরিচয়পত্র তথ্যভাণ্ডার ব্যতীত অন্য কোনও তথ্যভাণ্ডারের সঙ্গে ভেরিফিকেশন করলে তা গ্রহণযোগ্য হবে না।  

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিম সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে, আঙুলের ছাপ কোথাও সংরক্ষণ করা হচ্ছে না কেবল জাতীয় পরিচয়পত্র তথ্যভাণ্ডারের সঙ্গে মিলিয়ে দেখা হচ্ছে। কিন্তু নির্দেশনায় বলা হয়েছে, মোবাইল অপারেটর তার ‘অপারেটর্স বায়োমেট্রিক্স ভেরিফিকেশন প্ল্যাটফর্ম’ এবং ‘সেন্ট্রাল বায়োমেট্রিক্স ভেরিফিকেশন মনিটরিং প্ল্যাটফর্ম’ –এর কথা। যারা প্রোপাগান্ডা ছড়াচ্ছে তারা এই দু’টি পয়েন্ট নিয়েই বিতর্ক তৈরি করছে। সরকার বলছে, কোথাও সংরক্ষণ করা হচ্ছে না, এদিকে আবার দুটি প্ল্যাটফর্মের কথা বলা হচ্ছে।

যদিও এ বিষয়টির ব্যাখ্যাও তারানা হালিম বরাবরই দিয়ে আসছেন। তিনি বলেছেন,এ পদ্ধতিতে ব্যক্তির তথ্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে।এই তথ্য মানে আইডি নম্বর, জন্ম তারিখ, মোবাইল নম্বর ইত্যাদি।ব্যক্তির তথ্য সংরক্ষণ করা হচ্ছে,আঙুলের ছাপ সংরক্ষণ করা হচ্ছে না। তিনি আরও বলেন, এটা অনলাইন ভেরিফিকেশন, অফলাইন নয়। ফলে আঙুলের ছাপ অন্য কারও হাতে তুলে দেওয়ার কোনও সুযোগ নেই। তিনি জানান, যে ডিভাইস দিয়ে আঙুলের ছাপ নেওয়া হচ্ছে তাতে সংরক্ষণের কোনও সফটওয়্যার নেই।

ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা নিজেকে উদ্ধৃত না করে বাংলা ট্রিবিউনকে নিশ্চিত করেছেন,এসব সমস্যার কারণে নির্দেশনায় এক লাইনের একটি সংশোধনী আনা হয়েছে। ওই সংশোধনের ফলে সব ধরনের গুজব, বিভ্রান্তি ও বিতর্কের অবসান হবে।

অন্যদিকে বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামে এরিকসন আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তারানা হালিম সিম নিবন্ধন নিয়ে বলেন, আমাদের প্রাথমিক পরিকল্পনা হলো ৩০ এপ্রিলের মধ্যে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে সিম নিবন্ধন শেষ করব। এর মধ্যে যেসব সিম অনিবন্ধিত থাকবে সেগুলোকে কয়েক ঘণ্টার জন্য বন্ধ রাখা হবে।

বন্ধ রাখার সময়ও সিম নিবন্ধন করা না হলে পর্যায়ক্রমে সেসব সিম বন্ধ করে দেওয়া হবে।

এইচএএইচ /এমএসএম /এপিএইচ/

 

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ককে দল থেকে বহিষ্কার
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
সড়কে প্রাণ গেলো মোটরসাইকেল আরোহী বাবা-ছেলের
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
দেশের তথ্যপ্রযুক্তি বিশ্ব দরবারে উপস্থাপন করতে চান রাশেদুল মাজিদ
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
আগুন নেভাতে ‘দেরি করে আসায়’ ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে হামলা, দুই কর্মী আহত
সর্বাধিক পঠিত
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা