X
শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪
৬ বৈশাখ ১৪৩১

হৃদরোগ গবেষণায় শাখাওয়াৎ নয়নের অনন্য অর্জন

তারুণ্য ডেস্ক
২৭ জানুয়ারি ২০১৬, ১৯:২০আপডেট : ২৭ জানুয়ারি ২০১৬, ১৯:২৫

শাখাওয়াৎ নয়ন

সাধারণত কারও বুকের বামপাশে ব্যথা অনুভূত হলে, শ্বাসকষ্ট হলে, বমি বমি ভাব হলে, হার্ট অ্যাটাক/কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হলে, হার্টবিট/পালস বিট না পাওয়া গেলে চিকিৎসকরা হৃদযন্ত্রের অবস্থা সম্পর্কে জানার ও বোঝার চেষ্টা করেন। হৃদযন্ত্রের অবস্থা জানার সবচেয়ে প্রচলিত ব্যবস্থা হচ্ছে, রোগীর বুকে-পাঁজরে বিভিন্ন রকম তার লাগিয়ে ২০-২৫ মিনিট জোরে জোরে ট্রেডমিলে হাঁটা কিংবা দৌড়ানোর পর ইসিজি করে দেখা। এই ব্যবস্থায় মূলত একজন ডাক্তার দেখতে চান, রোগী সর্বোচ্চ কী পরিমাণ অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারেন। যে যতো বেশি পরিমান অক্সিজেন গ্রহণ করতে পারেন, তার হৃদযন্ত্র ততো বেশি সুস্থ। এই ব্যবস্থাকে ‘এক্সারসাইজ বেসড টেস্ট’ বলা হয়। এ রোগের ক্ষেত্রে এটিকে গোল্ড স্ট্যান্ডার্ড টেস্ট হিসেবে মনে করা হয়। এই টেস্ট আবার দুই ধরনের- (১) ম্যাক্সিমাল টেস্ট ও (২) সাব-ম্যাক্সিমাল টেস্ট। যদি রোগীর কোমরে, হাঁটুতে, মেরুদণ্ডে ব্যথা থাকে বা হাঁটা, দৌড়ানোর ক্ষেত্রে সমস্যা থাকে বা যদি ইতোপূর্বে হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকে, তাহলে তার ক্ষেত্রে এ পরীক্ষা করা যায় না। এছাড়াও এ টেস্টের ফলাফলের যথার্থতা নির্ভর করে রোগীর ধূমপান, মদ্যপান, কফি পান, নিদ্রাহীনতা, টেস্টের সময় পরিধেয় জুতা ও ওষুধ সেবনের ওপর। 

ড. শাখাওয়াৎ নয়ন ও তার দল বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে পরীক্ষা চালিয়ে বিকল্প উপায়ে কার্ডিও রিসপিরেটোরি ফিটনেস টেস্টের চেষ্টা করছেন, যাতে কোনও রকম এক্সারসাইজ বেসড টেস্ট ছাড়াই হৃদযন্ত্রের অবস্থা সম্পর্কে জানা যাবে।     

এ বিষয়ে তিনি বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমরা একটি ফর্মুলা বা এলগরিদম তৈরি করার চেষ্টা করছি। এ ফর্মুলায় একজন মানুষের রক্তচাপ, ওজন, উচ্চতা, বয়স, স্কিন ফ্যাট, পালস রেট/হার্টবিট, কোমরের মাপ, রানের মাপ, কব্জির মাপ ও আরও কিছু স্কোর বসিয়ে খুব সহজেই হৃদযন্ত্রের সুস্থতা সম্পর্কে জানা যাবে।

 গত ১৬-১৭ জানুয়ারি হংকংয়ে অনুষ্ঠিত ‘ইন্টারন্যাশনাল কনফারেন্স অন বিহ্যাভিওরাল হেলথ-২০১৬’ এ  তিনি তার হৃদরোগ বিষয়ক গবেষণাপত্র উপস্থাপন করেন। গবেষণা পত্রটি হংকংয়ের আন্তর্জাতিক কনফারেন্সে সেরা গবেষণা প্রবন্ধ হিসেবে পুরস্কৃত হয়েছে।

কনফারেন্সে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, অস্ট্রেলিয়া, কানাডাসহ মোট ২২টি দেশের গবেষক ও একাডেমিকরা তাদের গবেষণা কর্ম উপস্থাপন করেছেন। এর মধ্যে তাদের গবেষণা কর্মটি বেস্ট পেপার হিসেবে পুরস্কৃত হয়।

ড. শাখাওয়াৎ যে পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা করছেন সেটিতে কোনো ধরনের এক্সারসাইজ, হাঁটাহাঁটি বা দৌড়াদৌড়ির প্রয়োজন হবে না। কোনো ইসিজি করা দরকার হবে না, কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তারেরও (হার্ট স্পেশালিস্ট) প্রয়োজন হবে না। একজন এমবিবিএস ডাক্তারই এটা করতে পারবেন। তাই এটা সহজলভ্য এবং কম ব্যয়বহুল।  এই ব্যবস্থার মাধ্যমে হৃদযন্ত্রের অবস্থা সম্পর্কে আগে-ভাগেই জানা গেলে হৃদরোগের ঝুঁকি অনেকাংশে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে ও হৃদরোগজনিত কারণে মৃত্যুহার উল্লেখাযোগ্য হারে কমানো যাবে।

   

ড. শাখাওয়াৎ নয়ন বর্তমানে ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিংগাপুরের স্কুল অব পাবলিক হেলথে একাডেমিক হিসেবে কাজ করছেন। তিনি ২০১৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার নিউক্যাসল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করেন।

/এফএএন/

সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
জাপানি ছবির দৃশ্য নিয়ে কানের অফিসিয়াল পোস্টার
কান উৎসব ২০২৪জাপানি ছবির দৃশ্য নিয়ে কানের অফিসিয়াল পোস্টার
ড্যান্ডি সেবন থেকে পথশিশুদের বাঁচাবে কারা?
ড্যান্ডি সেবন থেকে পথশিশুদের বাঁচাবে কারা?
লখনউর কাছে হারলো চেন্নাই
লখনউর কাছে হারলো চেন্নাই
পশ্চিমবঙ্গে প্রথম দফার ভোট শেষেই বিজয় মিছিল
পশ্চিমবঙ্গে প্রথম দফার ভোট শেষেই বিজয় মিছিল
সর্বাধিক পঠিত
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
বাড়ছে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মানি, নতুন যোগ হচ্ছে স্বাধীনতা দিবসের ভাতা
ইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
ইস্পাহানে হামলাইরান ও ইসরায়েলের বক্তব্য অযৌক্তিক: এরদোয়ান
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
উপজেলা চেয়ারম্যান প্রার্থীকে অপহরণের ঘটনায় ক্ষমা চাইলেন প্রতিমন্ত্রী
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
ইরানে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল!
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া
সংঘাত বাড়াতে চায় না ইরান, ইসরায়েলকে জানিয়েছে রাশিয়া