দোহাই মা-কালী
বন্দিজীবন কাকে বলে অজানা নয়।
জেলে ছিলাম মাসের পর মাস।
একাকিত্বের প্রহার, নিষ্ঠুর শৃঙ্খল।
যুগপৎ সন্ত্রাস আর বীভৎস ভাইরাস
আদ্যিকাল থেকে মানুষের আর্তনাদ,
ক্ষুধাব্যাধির যন্ত্রণা।
প্রহরে-প্রহরে মৃত্যু, কবরশ্মশান
দোহাই মা-কালী, রক্তমাখা জিভ আর ব্যাদান করো না।
আমার পতাকা
বলো হে ঈশ্বরীপাটনী, কীভাবে তোমার সন্তান
থাকবে দুধেভাতে, মুমূর্ষু বঙ্গদেশে?
যে-তাকাই তীক্ষ্ণ মৃত্যুবান।
বাঁচার সমস্ত পথ রুদ্ধ, বাঁচাও দুঃসহ বদ্ধ-পরিবেশে
নিমেষে উধাও জীবন, বাতাসে বিষমাখা
খাদ্যাভাব ঘরে-ঘরে, দূষিত পানীয়।
অমৃতস্য পুত্র: নিশ্চিহ্ন অচিরে? আমার পতাকা
বহনের কেউ নেই হে স্বজন, প্রিয়?
আমরা সবাই
দেশব্যাপী মহামারী
বন্ধ হাজারদুয়ারি
প্রেমের তাজমহল
মাঠে-মাঠে সতেজ উর্বর ঘাস
পাখির সোনালি নীলাকাশ
নির্মল সুবাতাস
চোখমুখ জ্বলছে না
সড়কে যানবাহন চলছে না
শব্দরাজির তাণ্ডব নেই
ধুলোধোঁয়া হটাৎ উধাও
লোকে কয় ‘বাড়ি যাও
যমদূত নিকটেই’
মৃত্যুর দেখা-না-দেখা নানামুখ
চারদিকে ছড়ানো অসুখ
কুটিল পৃথিবী প্রতিশোধে মাতোয়ারা
জলে ভাসে লৌহ, শিলা
আসন্ন ধ্বংসের লীলা
আমরা সবাই মৌন, দিশেহারা
দিনগুলো
রেহানা আকতার বললেন, ‘মানুষ বান্ধব নয় আর,
দেখা সাক্ষাতেও ওজরআপত্তি, আত্মীয়কুল দূরে, এই লীলাখেলার
অবসান কবে, কোন নিয়তি ঘিরছে আমাদের?’
বললাম, ‘নানাবিধ পাপ পরতে-পরতে
রেহাই পাওয়া দুস্কর, গ্রীষ্মে বা শরতে
সমষ্টিগত জঞ্জাল, নেই সেই দিনগুলো প্রেম-সোহাগের’