রংপুরের পীরগাছায় প্রতিবন্ধী এক নারীকে ধর্ষণ মামলায় আসামি আবুল কালামকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দিয়েছেন আদালত। এছাড়া আসামিকে ধর্ষণে জন্ম নেওয়া শিশুটির পিতৃত্ব স্বীকৃতি এবং সম্পদের ওয়ারিশ হিসেবে প্রাপ্য সম্পদ দেওয়ার আদেশ দিয়েছেন আদালত। মামলার ১২ বছর পর রবিবার (১৭ জানুয়ারি) দুপুরে রংপুরের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আদালতের বিচারক রোকনুজ্জামান এ রায় দেন।
মামলার বিবরণে জানা গেছে, ২০০৮ সালের ১ ডিসেম্বর পীরগাছা উপজেলায় শ্রবন ও বাক প্রতিবন্ধী ওই নারীকে একই গ্রামের আব্দুল জলিলের ছেলে আবুল কালাম বাসায় একা পেয়ে ধর্ষণ করে। ঘটনাটি ইশারায় মেয়েটি স্বজনদের জানান। পরে তিনি অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়েন। এরপর গত ২০০৯ সালের ৮ সেপ্টেম্বর গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়লে পীরগাছা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে তিনি একটি পুত্র সন্তান প্রসব করেন। এ ঘটনায় পীরগাছা থানায় মামলা দায়ের করতে গেলে পুলিশ মামলা গ্রহণ করায় মেয়েটির বাবা বাদী হয়ে আদালতে নারী ও শিশু নির্যাতন আইনে মামলা দায়ের করেন। আদালত অভিযোগটি মামলা হিসেবে রেকর্ড করার জন্য পীরগাছা থানাকে নির্দেশ দেন। পরবর্তীকালে পুলিশ আসামি আবুল কালামের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট দাখিল করে। মামলায় ১১ জন সাক্ষীর সাক্ষ্য শেষে বিচারক আসামি আবুল কালামকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও এক লাখ টাকা জরিমানার আদেশ দেন।
বিজ্ঞ বিচারক রায়ে প্রতিবন্ধী নারীর গর্ভে জন্ম নেওয়া সন্তানকে আসামি আবুল কালামের সন্তান হিসেবে স্বীকৃতি প্রদান এবং তার ওয়ারিশ হিসেবে সম্পত্তির ভাগ দেওয়ার আদেশ দেন। যদি কোনও সম্পদ না থাকে তা হলে রাষ্ট্রকে শিশুটির দায়িত্ব গ্রহণের আদেশ দেন।
এ ব্যাপারে সরকার পক্ষের আইনজীবী বিশেষ পিপি জাহাঙ্গীর হোসেন তুহিন জানান, তারা ন্যায়বিচার পেয়েছেন। সেই সঙ্গে ধর্ষণের ফলে জন্ম নেওয়া শিশুটির পিতা হিসেবে স্বীকৃতি এবং সম্পদের অংশ দেওয়ারও আদেশ একটি যুগান্তকারী রায় বলে জানান তিনি।
আসামি পক্ষের আইনজীবী এমদাদুল হক প্রধান অ্যাডভোকেট জানান, এ রায়ে তারা ন্যায়বিচার পাননি। উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।