রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ (রামেক) হাসপাতাল থেকে চুরি হওয়ার ২৭ ঘণ্টা পর সেই নবজাতককে উদ্ধার করেছে পুলিশ। শনিবার (২৩ জানুয়ারি) দুপুর ১টার দিকে নগরীর মোন্নাফের মোড় পল্টুর বস্তি থেকে শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়। এ সময় চুরি করে নিয়ে যাওয়া নারী ও তার স্বামীকে আটক করা হয়েছে। রাজশাহী মহানগর পুলিশের (আরএমপি) গোয়েন্দা শাখার একটি দল এ অভিযান চালায়।
আটক নারীর নাম মৌসুমি বেগম (২৩)। তার স্বামীর নাম সজিব (২৫)। তারা নগরীর বোয়ালিয়া থানার রানীনগর পল্টু কমিশনারের বস্তির বাসিন্দা। নবজাতকসহ এদের আটকের পর বেলা ৩টায় আরএমপির ডিবি কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক।
এই কর্মকর্তা বলেন, ‘আমরা প্রাথমিকভাবে যেটা জানলাম যে বাচ্চা চুরি করা নারী নিঃসন্তান। আট বছর আগে বিয়ে হলেও তার সন্তান হয়নি। তবে তিনি কোনও বাচ্চা চোর চক্রের সঙ্গে জড়িত কি না তা আমরা খতিয়ে দেখবো।’
পুলিশ কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক জানান, বাচ্চাটিকে ইতোমধ্যে তার নানা-নানির কাছে বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে। আর বাচ্চা চুরি করে নিয়ে যাওয়ার অপরাধে আটক দুই জনের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
ডিবি কার্যালয়ে এই কন্যাশিশুর নানি তাপসী রবিদাস বলেন, বাচ্চাটার নাম রাখা হয়েছে লক্ষ্মী। তারা বাচ্চাটিকে ফিরে পেয়ে খুব খুশি।
রামেক হাসপাতালের জরুরি বিভাগের সামনেই জুতা সেলাইয়ের কাজ করেন বাচ্চাটির বাবা মাসুম রবি দাস। তিনি বলেন, ‘আমি মানুষ দেখলেই চিনতে পারি। এই মহিলাকে (মৌসুমি) আমি হাসপাতালের সামনে মাঝে-মাঝে দেখেছি।’ চুরি হয়ে যাওয়া বাচ্চা ফিরে পাওয়ায় তিনি পুলিশের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন।
মাসুম রবিদাস নগরীর আইডি বাগানপাড়া এলাকার বাসিন্দা। প্রসববেদনা নিয়ে গত বুধবার (২০ জানুয়ারি) তার স্ত্রী কমলী রবিদাস শিল্পীকে রামেক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। রাতে সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারে কন্যা সন্তানের জন্ম দেন তিনি। বৃহস্পতিবার (২১ জানুয়ারি) সকালে মৌসুমি তার কাছে গিয়ে শিশুটিকে আদর করেন। শুক্রবার (২২ জানুয়ারি) সকালে তিনি আবার যান। তখন বাচ্চাকে বুকে নিয়ে ঘুমিয়ে ছিলেন শ্রীমতি শিল্পি রাণী দাস ওরফে কমলী। এই ফাঁকে ওই নারী তার সন্তানকে নিয়ে পালিয়ে যান। বাচ্চা না পেয়ে তিনি পাশেই ঘুমিয়ে থাকা তার মাসিকে ডাকেন। এসময় মাসি ওয়ার্ডের বাইরে গিয়ে আর তাকে পাননি। এর ২৭ ঘণ্টা পর বাচ্চাটিকে উদ্ধার করল পুলিশ।
আরও পড়ুন-
রামেক হাসপাতাল থেকে নবজাতক চুরির অভিযোগ