X
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪
১২ বৈশাখ ১৪৩১

কামাল চৌধুরীর কবিতা : প্রেম ও দ্রোহের অভিরূপ

সৌম্য সালেক
২৮ জানুয়ারি ২০২১, ১২:০০আপডেট : ২৮ জানুয়ারি ২০২১, ১৩:৩৮

কামাল চৌধুরী সত্তর দশকের অগ্রগণ্য কবি। ১৯৫৭ সালের ২৮ জানুয়ারি তিনি কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বিজয় করা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। কাব্যগ্রন্থ : মিছিলের সমান বয়সী, টানাপোড়েনের দিন, এই পথ এই কোলাহল, এসেছি নিজের ভোরে, এই মেঘ বিদ্যুতে ভরা, ধূলি ও সাগর দৃশ্য, রোদ বৃষ্টি অন্ত্যমিল, হে মাটি পৃথিবীপুত্র, প্রেমের কবিতা, পান্থশালার ঘোড়া, নির্বাচিত কবিতা, কবিতাসংগ্রহ, শ্রেষ্ঠ কবিতা ইত্যাদি। তিনি রুদ্র পদক, সৌহার্দ্য সম্মাননা (পশ্চিমবঙ্গ), কবিতালাপ সাহিত্য পুরস্কার, জীবনানন্দ পুরস্কার, সিটি-আনান্দ আলো সাহিত্য পুরস্কার, দরিয়ানগর কবিতা সম্মাননা এবং বাংলা একাডেমী পুরস্কার পেয়েছেন।  


সব শিল্পই বস্তুনির্ভর উপাদানে গড়া বোধ ও চেতনার সমষ্টি। ভাস্কর্যের যেমন প্রস্তরখণ্ড, চিত্রকর্মের যেমন বর্ণ, সঙ্গীতের যেমন ধ্বনি; কবিতার তেমন শব্দ। তবে অন্য উপাদানগুলোর সাথে কবিতায় ব্যবহৃত শব্দের পার্থক্য হচ্ছে—শব্দ অনঙ্গ, স্পর্শাতীত; শব্দের বস্তু আড়ালে থেকে নিবিড়তম বোধ ও চৈতন্যের জানান দেয়। আমরা প্রতিনিয়ত অগণ্য শব্দ ব্যবহার করি কিন্তু কবিতার মধ্যেই শব্দ আশ্চর্য সম্ভাবনা নিয়ে, গভীর ব্যাপ্তি ও ব্যঞ্জনা নিয়ে স্বর তোলে এবং শব্দের এই অনিষ্পন্ন সম্ভাবনার মধ্যেই কবিতার মহত্ত :

‘আমাকে স্পর্শ করতে হবে শিখর চূড়া/ উপরে কীসের সত্য জেনে যেতে হবে

বহুবার ঘুমে আমার মৃত্যু হবে/ বহুবার বকুলের গন্ধে আমি জেগে যাব

আমাকে জানতে হবে কতটা উপরে চূড়া/ আমার মাথার চেয়ে কত উঁচু?’

কবিতা নিয়ে মতবিরোধ বেশ তীব্র এবং বিচ্ছিন্ন পথগামী কিন্তু এই বিচ্ছিন্নতাই কবিতার স্থায়ী সৌন্দর্যের প্রধান সাক্ষ্য। এ বিষয়ে সৈয়দ আলী আহসানের মন্তব্যটি প্রণিধানযোগ্য। ‘অনেকে কাব্য-সৃষ্টিকে প্রার্থনা-মুহূর্তের নিবেদিত চিত্ততার সঙ্গে তুলনা করেছেন। কীটস্ বলেছেন—‘আমি ক্ষণকালও কবিতা ছাড়া বাঁচতে পারি না—অর্ধদিনও নয়, সম্পূর্ণ দিন তো নয়ই।’ এসব কথা সুন্দর কিন্তু স্বপ্নের মতো অস্বচ্ছ। কবিতার প্রকাশ-রূপ শিল্পায়ত্ত শব্দের বিশেষ বিন্যাস মাত্র; যদিও সৃষ্টির আবেদনের পশ্চাতে ব্যক্তিমানসের রহস্যতত্ত্ব বর্তমান।’

মানব অনুভূতির যাবতীয় অনুষঙ্গই কবিতায় ব্যক্ত হতে পারে। অনুভূতি, স্থান, কাল, লিঙ্গ ভেদে কবিতার সীমা বা আড়ষ্টতা নেই। প্রেমানুভূতির প্রকাশ কবিতার আদিতম প্রকার এবং প্রাথমিকভাবে প্রেম-বঞ্চনার শ্রান্তি ও বিষাদ থেকে দ্রোহের উৎপাত ঘটেছে। অবশ্য প্রেম যেমন বিবিধ কামনার হতে পারে তেমনি দ্রোহও হয়—প্রিয়তমা, দেশমাতৃকা, গোত্র-সম্মান কিংবা সহায় ছিন্নতাকে কেন্দ্র করে। প্রেম যেখানে প্রোজ্জ্বল ও শক্তিমত্ত সেখানে অন্তরীণ থাকে এক সংহারবোধ তাই দ্বিতীয় পর্বে মারাত্মক ক্ষুব্ধতায় বিভক্তকারীদের উপর হামলে পড়ে। প্রেমের আকাঙ্ক্ষা এবং ন্যায্যতা যেখানে একমাত্র অবলম্বন সেখানে জয়-পরাজয় বোধের চেয়ে প্রতিঘাত সত্য হয়ে ওঠে। কামাল চৌধুরী সত্তরের অন্যতম কবি প্রতিভা। বাকশৈলীর অনন্য কৌশল তাঁর কবিতাকে করেছে স্বতন্ত্র ও প্রাণবন্ত। প্রীতি, মুক্তি চিন্তা, সংগ্রাম, সঙ্গলিপ্সা ও স্বপ্নচারিতা তাঁর কবিতার প্রবণতা হলেও—আড়ালে অভিসারে নিজেকে বিস্তৃত-সমর্পিত রেখে তিনি আসলে প্রেমিক এবং কাঙ্ক্ষিত প্রিয়ার স্পর্শের জন্য মেতে আছেন সর্বময়—

‘কার ঘরে যাবে তুমি/ সে ঘর আমার

কার চোখে চুমু খাবে/ সে চোখ আমার।’

‘রৌদ্র দিনে বৃষ্টি ফোঁটা মেখে’—আকাশের তলে তলে বৃক্ষের সংযমে এই কবির প্রেম অপেক্ষায় থাকে স্বপ্ন-ললিতার অন্বেষণে—এই স্থিতির কোমলতা চোখ এড়াতে পারে না, প্রেমিক এখানে বুক বেঁধে যেন সব লাবণ্য ধরে আছে—কবিতার শিরোনাম ‘অপেক্ষা’ : ‘স্বপ্নে দেখা সোনার মেয়ে/ তোমায় ছুঁয়ে উষ্ণ হবো/ ঝরাপাতায় তীব্র নেশা জ্বেলে।/ বৃক্ষশাখে বসতে যদি/ আদিম আমার এই কোটরে/ দিতাম তবে নবীন ঝুরি মেলে/ গলির মোড়ে দাঁড়িয়ে আছি/ গলির মোড়ে দাঁড়িয়ে আছি একা।’

পুরনো স্মৃতির তৃপ্তিসাধন লোকে করে থাকে তবে স্মৃতির মধুরিমা অনন্য উৎপ্রেক্ষায় কেবল কবির উচ্চারণেই মনোময় হয়ে ওঠে—কবিতার শিরোনাম ‘তর্পণ’—

‘সেই দীর্ঘ মধুস্মৃতি, অম্লানের আকাশমুখিতা/ সামান্য তর্পণে আজ ডুবে যাচ্ছে ইনানী-সাগরে।’ কামাল চৌধুরীর প্রেমের কবিতায় বিষাদের মৃত্যু-ছায়া নেই, নেই অস্থিরতার চটুল চিত্রমালা; অন্তরীণ আশাবাদে ধ্বনিত তাঁর বাক্ মালা বেজে চলে মনে ও মননে—

‘তবু আমার ফুল ফোটাবার আশা/ তবু আমার পাখিউড়াল কাল

এক অজানা পথের আঁকেবাঁকে/ বাজিয়ে যাব তোমার করতাল।’

কবি তাঁর ‘গৃহশিক্ষক’ শিরোনামের কবিতায় গল্পচ্ছলে আমাদের শুনিয়েছেন গভীর প্রেমের অনুভূতিমালা। যার কাছে পাঠশিক্ষা, শ্রবণ, ক্রন্দন, উচ্ছলতা, স্বপ্ন এমনকি শেখা হয়েছে জীবনের রহস্য-বৃত্তান্ত; সে তো আর কারো অধিকার যেতে পারে না—এমনি সমর্পণ ও আকাঙ্ক্ষা সংরাগে সিক্ত এই কবিতা কেবল ছুঁয়ে যায় না, স্তব্ধও করে।

‘আমি চোখ মেলে তোমাকে দেখেছি, তোমার সবুজ/ উৎকর্ণ হয়ে শুনেছি তোমার স্তোত্র, আর/ চিরসবুজ, রহস্যময়, অন্তর্ভেদী প্রবল কবিতায় ভাসতে ভাসতে/ আমি খোলস ভেঙে দাঁড়িয়ে পড়েছি অপার বিস্ময়ের এক ভূখণ্ডে/ এই আমাকে অস্ফুটিত, উন্মুক্ত, অনবগুণ্ঠিত রেখে/ আজ তোমাকে আমি অন্য কারো গৃহশিক্ষক হতে দিতে পারি না।’ যেখানে  বাস্তবতা বিমর্ষ, বিষণ্ন এবং প্রতিকূল সেখানে সম্ভাবনা ও স্বপ্নের স্বরে কেবল কবিই মধুস্বর ধ্বনি তোলে, এই তৃপ্তিটুকু পিয়াসুদের জীবন প্রেরণা। আমরা কামাল চৌধুরীর ‘খাঁচা’ শিরোনামের কবিতায় একটি ভিন্ন রকম দৃশ্যের খোঁজ পাই। এই প্রেমিক যুগল উত্তর-দক্ষিণে বিপরীতমুখি দুটি জানালা কেটে নেবে এবং রাত্রিভর আলোর সম্ভাষণে দেখে দেবে একে-অন্যের মুখ। তারপর ভীতি ও সংস্কারের বেড়ি ভেঙে শূন্যে লাফিয়ে পড়বে ওরা, বাধাহীন অসীম আকাশে ওদের ঘর হবে এবং জানালা থাকবে দু’টি উত্তর ও দক্ষিণের; দারুণ রোমেন্টিক আবহ সৃষ্টির মাধ্যমে আমরা এ কবিতায় তৈরি হতে দেখেছি এক নিবিড় স্বপ্নবসতি—

‘উত্তরের জানালা ভেঙে আমি—দক্ষিণের জানালা ভেঙে তুই/ আমরা লাফিয়ে পড়ব শূন্যে.../ তারপর পাখি হয়ে একসঙ্গে উড়তে উড়তে/ পৌঁছে যাব অচেনা এক দেশে/ সেখানে নতুন করে আমরা একটা ঘর বানাব/ যার দু’দিকে দু’টো জানালা থাকবে একটা উত্তরে—একটা দক্ষিণে....’

দুই.

প্রেমের কবিতার পাশাপাশি দ্রোহ, মুক্তিচেতনা এবং সমাজ-সংস্কারমুখী চেতনাঋদ্ধ কবিতায় কামাল চৌধুরী দারুণ পারঙ্গমতা দেখিয়েছেন। ভালোবাসতে গেলে, ভালোবাসাকে অবলম্বন করতে গেলে বাধা আসে তখন প্রকৃত প্রেমিক নিজেকে গুটিয়ে রাখে না। বরং প্রতিবাদের প্রবল ঝড়ে বীর্যবান হয়ে ওঠে তার কণ্ঠস্বর। কামাল চৌধুরীর কবিতায় আমরা ব্যাপকভাবে খুঁজে পাই দেশমাতৃকার প্রতি ভালোবাসা এবং সেই দুঃখী সময়ের দৃশ্যপট—‘পরস্পরকে সাক্ষী রেখে আমরা চিকচিক বালির ভেতর দিয়ে হেঁটে গেলাম/ লোকালয় থেকে বহু দূরে ধলেশ্বরী, তোমার জলহীন মরুভূমির মতো খাঁ খাঁ প্রান্তরে/ কুয়াশায় ভিজে ওঠা বালির চরায়/ আমাদের পদচিহ্ন ক্রমশ মিছিলের মতো বেড়ে উঠতে লাগল।’ বাঙালি জাতির সাহস ও দ্রোহের সূর্যসেনানী কবি কাজী নজরুল ইসলামকে নিয়ে লেখা কবিতায় আমরা খুঁজে পাই রাগদীপ্ত কবির এক অমল প্রতিচ্ছবি—

‘সামান্য মানুষ আজ নিজেকে লুকিয়ে রেখে কী যে এক গভীর আশায়—/ আঁকে এক অসামান্য মানুষের ছবি/ স্বপ্ন দ্যাখে; দ্যাখে এক খরাদীর্ণ মানবজমিনে/ ঝাঁকড়া চুলের এক রাগী কবি দাঁড়িয়েছে দীপ্ত পদভারে/ অজস্র শৃঙ্খল তাঁর বিষের বাঁশির সুরে ফেটে খান খান।’ মৃত্যুকামনার মধ্যে জীবনের প্রতি সংক্ষোভ ও হাহাকার লুকিয়ে থাকে এটি সাধারণ সত্য। কিন্তু কবি যখন প্রবল প্রাণপণে একে জাপটে ধরতে চায় তখন তা আর ব্যক্তির থাকে না, বিশাল সমষ্টিকে স্পর্শ করে তখন তাই হয়ে উঠে জাতিসত্তার আর্ত উচ্চারণ—‘অনুগত নদী ধুয়ে দিয়েছিল কিছু ক্লেদ হাহাকার/ পুরাতন ক্ষতে তবু বেয়নেট হেনে

প্রেতলোক থেকে উঠে আসে কালো ছায়া/ শরীরে জমেছে এক জনমের দাহ

আগুনের কাছে যাপিত জীবন—প্রভু/ আমাকে নেভাও, আমাকে নেভাও তুমি।’

‘প্রতিশোধ’ শিরোনামের কবিতায় কবির উচ্চারণ শিরতুঙ্গ স্পর্শ করেছে। আমাদের সংগ্রাম ছিল ন্যায্য ও রীতিসিদ্ধ। যদি এতে মৃত্যু নেমে আসে তাহলে—কবি প্রতিজ্ঞ যে ‘এই তলোয়ার পুত্রকে দিয়ে যাব’—প্রবল-প্রতিরোধী আর প্রাণপণ কবির সেই কথামালা থেকে সামান্য পাঠ তুলে ধরছি :

‘ঘাতকের হাতে দণ্ড দিয়েছি তুলে/ শূলে চড়িয়েছি স্বপ্নের মহাকাল

ভুল হয়ে গেছে—এখন শুধরে নেব/ ছাড়ব না তবু কিছুতেই ছাড়ব না।’

১০ জানুয়ারি ১৯৭২ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান স্বাধীন স্বদেশে ফিরে আসলেন। এই আগমনের প্রতি দৃষ্টি ও মনোযোগ ছিল গোটা জাতির। দেশ মুক্তি পেয়েছে দুঃশাসন থেকে আর মুক্তিকামীদের স্বপ্নচারী ফিরে আসবে এই প্রতিক্ষায় আবেগ উৎকণ্ঠা ছিল সমগ্র জাতির। তারপর যেদিন তিনি ফিরে আসলেন—ঋতু বদল হলো স্বদেশের, স্তব্ধতার মধ্যে সুর বেজে উঠল। আমরা এই উত্তাল উত্তেজনার কিছু পাঠ কবির কাছ থেকেই তুলে ধরছি— ‘তিনি ফিরে আসলেন, তখনও এই মাটি রক্তে ভেজা/ চতুর্দিকে শোক, আহাজারি, ধ্বংসচিহ্ন, পোড়াগ্রাম/ বিধ্বস্ত জনপদ, তিনি ফিরে আসলেন, ধ্বংসস্তূপের ভেতর ফুটে উঠল কৃষ্ণচুড়া/ মুকুলিত হলো অপেক্ষার শিমুল/ শোক থেকে জেগে উঠল স্বপ্ন, রক্তে বাজল দারুণ দামামা/ বেদনার অশ্রুরেখা মুছে ফেলে।’

পণ্যায়ন ও পুঁজিবাদের ছোবলে ধ্বংস হচ্ছে প্রকৃতি ও বাংলার শ্যামল চরাচর। ১৯৯৭ সালের ১৪ জুন বহুজাতিক কোম্পানির গ্যাসকূপ খননকালে মৌলভীবাজারের মাগুরছড়ায় এক ধ্বংসযজ্ঞ সৃষ্টি হয়েছিল যার ফলে ভস্ম হয়েছিল বিস্তীর্ণ বনভূমি। অপরিকল্পিত এমন কর্মকাণ্ড কিংবা হস্তক্ষেপ রাষ্ট্রের জন্য কখনোই ইতিবাচক নয়। নগরসভ্যতার নাম করে এসব অন্যায় কখনোই সমাজকে উন্নতি দিতে পারে না, বরং এতে স্বার্থ হাসিল হয় কতিপয় কপটের। কবিকে অসতর্ক বা অচেতন হলে চলে না, তাঁকে দেখতে হয় এবং জানান দিতে হয়। কবিতার শিরোনাম—‘মাগুরছড়া’ : ‘অরণ্যের মৃত্যু হয়, ঘটে যায় বোবা রক্তপাত/ দাবানল ফেরি করে বঙ্গদেশে বহুজাতিকতা।’

ঐতিহাসিক সত্যের সাথে সমকালীন বিষয়, চিন্তা ও প্রবণতার সংযোগ রেখে কবি কামাল চৌধুরী তাঁর কবিতায় আমাদের শোনাতে চান—স্বপ্ন ও সুন্দরের গান; যেখানে প্রেম ও প্রতিরোধ অবিচ্ছিন্ন ঐকতান তোলে। প্রাপ্তি ও অপ্রাপ্তির ভিন্নপার্শ্বে যে আকাঙ্ক্ষা ও অভিঘাত রয়েছে তাই কামাল চৌধুরীর কবিতার পাঠসূত্র। শ্রুতি ও পাঠ মাধুর্যকে রক্ষা করে এবং ছন্দকে আপনমতো ছড়িয়ে বিছিয়ে তিনি নির্মাণ করেছেন ধ্রুপদী এক কাব্যভাষা, যেখানে বক্তব্যের দৃঢ়তা তাঁর কবিতাকে দিয়েছে বিশেষ বৈচিত্র্য ও স্বাতন্ত্র্য। রূপ নিরীক্ষণপূর্বক ভাব ও বস্তুর অন্তরীণ আনন্দকে উদ্ভাবন করে তার নান্দনিক বাক্ পরিবেশনাই কবির কাজ। এ কাজে যেমন প্রয়োজন সূক্ষ্মদৃষ্টির তেমনি প্রয়োজন শব্দ বিন্যাসের প্রকৌশল। আর এই দ্বিমাত্রিক অভিযোজনেই নীরব তপস্যা চালিয়ে যাচ্ছেন কবি কামাল চৌধুরী এবং এক্ষেত্রে দারুণ সফল হয়েও তিনি দৃষ্টিকে প্রসারিত রেখেছেন আগামীর দিকে। কবিতার বিষয়ানুষঙ্গ হিসেবে তিনি প্রচুরভাবে নিয়েছেন—দেশ, নদীমাতৃকা, ধীবর, সমাজ, নৃ-তত্ত্ব, সম্প্রীতি, আত্মপ্রেম, বিশ্ববোধ ও ইতিহাসকে তবু সামগ্রিক পাঠ ও সূত্রসন্ধানে বোধ করি কামাল চৌধুরী সর্বোপরি প্রেম ও দ্রোহের অনুগামী। জীবনের অনুকূল-প্রতিকূল সংক্রমে সম্পন্ন তাঁর কবিতা—প্রেম ও দ্রোহের নিবিড় অভিরূপ।

/জেডএস/
সম্পর্কিত
সর্বশেষ খবর
নির্দেশের পরও হল ত্যাগ করছেন না চুয়েট শিক্ষার্থীরা, বাসে আগুন
নির্দেশের পরও হল ত্যাগ করছেন না চুয়েট শিক্ষার্থীরা, বাসে আগুন
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
মৈত্রী ট্রেনে তল্লাশি, মুদ্রা পাচারের অভিযোগে আটক দুই বাংলাদেশি
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ
রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম সংবিধানবিরোধী নয়, হাইকোর্টের রায় প্রকাশ
এক কোরাল ৩৩ হাজার টাকায় বিক্রি
এক কোরাল ৩৩ হাজার টাকায় বিক্রি
সর্বাধিক পঠিত
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
বাংলাদেশ ব্যাংকের চাকরি ছাড়লেন ৫৭ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
দুদকের চাকরি ছাড়লেন ১৫ কর্মকর্তা
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
স্কুল-কলেজে ছুটি ‘বাড়ছে না’, ক্লাস শুরুর প্রস্তুতি
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
কেন গলে যাচ্ছে রাস্তার বিটুমিন?
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা
ধানের উৎপাদন বাড়াতে ‘কৃত্রিম বৃষ্টির’ পরিকল্পনা