কক্সবাজারের শরণার্থী শিবির থেকে রোহিঙ্গাদের আরেকটি দল ভাসানচরে পা রেখেছেন। শনিবার (৩০ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১২টার দিকে চট্টগ্রাম বোট ক্লাব থেকে নৌবাহিনীর জাহাজে করে ভাসানচরে পৌঁছান এক হাজার ৪৬৩ জন রোহিঙ্গা। এর আগে শুক্রবার এই রোহিঙ্গাদের কক্সবাজারের বিভিন্ন শরণার্থী শিবির থেকে বাসে করে চট্টগ্রামে আনা হয়।
এসব তথ্য নিশ্চিত করে ভাসানচর প্রকল্পের (আশ্রয়ণ প্রকল্প-৩) প্রকল্পের পরিচালক কমোডর আবদুল্লাহ আল মামুন চৌধুরী জানান, ‘তৃতীয় ধাপে দ্বিতীয় অংশের ১৪৬৩ জন রোহিঙ্গা জাহাজে করে চট্টগ্রাম থেকে ভাসানচরে পৌঁছেছেন। তাদের বরণ করে নেওয়া হচ্ছে। এখানকার প্রক্রিয়া শেষে তাদের ঘরে তুলে দেওয়া হবে।'
শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন বিষয়ক অতিরিক্ত কমিশনার (আরআরআরসি) মোহাম্মদ সামছু-দৌজা জানান, ‘তৃতীয় দফায় (দ্বিতীয় অংশের) সাড়ে ১৪শ’ রোহিঙ্গা শনিবার দুপুরে নোয়াখালীর ভাসানচরে পৌঁছেছে। এই নিয়ে দুই দিনে ৩২শ’ এর বেশি রোহিঙ্গা ভাসানচরে পৌঁছালেন।’
গত ৪ ডিসেম্বর প্রথম ধাপে এক হাজার ৬৪২ জন রোহিঙ্গা হাসিমুখে ভাসানচরে পৌঁছায়। দ্বিতীয় ধাপে গত ২৯ ডিসেম্বর এক হাজার ৮০৪ জনকে ভাসানচরে নেওয়া হয়। শুক্রবার (২৯ জানুয়ারি) দুপুরে এক হাজার ৭৭৮ রোহিঙ্গা নতুন করে ভাসানচরে পৌঁছান। তৃতীয় ধাপের দ্বিতীয় পর্যায়ে আজ শনিবার পৌঁছেছেন এক হাজার ৪৬৩ জন। সব মিলিয়ে ছয় হাজার ৬৬৭ জন রোহিঙ্গা ভাসানচরে বসতি শুরু করলেন। এছাড়া এরও আগে অবৈধভাবে সাগরপথে মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা ৩০৬ জন রোহিঙ্গাকে গত বছরের মে মাসে ভাসানচর নেওয়া হয়। তারাও সেখানে রয়েছেন।
মিয়ানমার সেনাবাহিনীর হত্যা ও নির্যাতনের মুখে ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট থেকে সীমান্ত পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে আশ্রয় নেন সাড়ে সাত লাখের বেশি রোহিঙ্গা। আগে আশ্রয় নেওয়াসহ বর্তমানে ১১ লাখের বেশি রোহিঙ্গা কক্সবাজারের শিবিরগুলোতে ঘিঞ্জি পরিবেশে বসবাস করছেন। শরণার্থীদের চাপ কমাতে দুই বছর আগে অন্তত এক লাখ রোহিঙ্গাকে নোয়াখালীর হাতিয়ার কাছে মেঘনা মোহনার দ্বীপ ভাসানচরে স্থানান্তরের পরিকল্পনা নেয় সরকার।
সরকারি তথ্য অনুযায়ী, নৌবাহিনীর তত্ত্বাবধানে রোহিঙ্গা স্থানান্তরের জন্য সরকারের নিজস্ব তহবিল থেকে তিন হাজার ৯৫ কোটি টাকা ব্যয়ে ভাসানচর আশ্রয়ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হচ্ছে। ১৩ হাজার একর আয়তনের ওই চরে এক লাখ রোহিঙ্গা বসবাসের উপযোগী ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করা হয়েছে। ভাসানচরের পুরো আবাসন প্রকল্পটি বাস্তবায়ন ও ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে রয়েছে বাংলাদেশ নৌবাহিনী।